দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কোলেস্টেরল বাড়লে উচ্চ রক্তচাপ এবং হার্টের অসুখ শরীরে বাসা বাঁধে। কেবল ওষুধের উপর ভরসা করলে চলবে না, সঙ্গে ডায়েট এবং শরীরচর্চার দিকেও নজর দিতে হবে। যোগাসনের মাধ্যমে এই রোগটিকে জব্দ করা যেতে পারে।
রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেছে। এটি শোনামাত্রই বেশির ভাগ মানুষের মাথায় হাত উঠে যায়। কোলেস্টেরল বাড়লে হৃদরোগের ঝুঁকিও তখন বেড়ে যায়। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস রক্তে ‘খারাপ’ কোলেস্টেরলের মাত্রা ক্রমাগত বাড়িয়ে দিতে পারে। আর দীর্ঘদিন ধরে রক্তে ভাসতে থাকা ওই চটচটে পদার্থগুলোই একটা সময় এসে ধমনীর গায়ে আটকে যায়। শরীরে তখন রক্ত চলাচল করতে বাধা পায়, শুরু হয় নানা ধরনের সমস্যা। এই রোগের হাত ধরে উচ্চ রক্তচাপ এবং হার্টের অসুখ বাসা বাঁধতে পারে শরীরে। কেবল ওষুধের উপর ভরসা করলে চলবে না, সেইসঙ্গে ডায়েট এবং শরীরচর্চার দিকেও নজর দিতে হবে। যোগাসনের মাধ্যমেও এই রোগকে জব্দ করা যেতেই পারে। জেনে নিন কোন কোন আসনে পেতে পারেন সুফল।
পদহস্তাসন
ব্যায়ামের এই আসনটি করতে প্রথমে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে। এরপর ধীরে ধীরে পা দু’টি সামান্য ফাঁক করে দাঁড়াতে হবে। এখন ভালো করে শ্বাস নিতে নিতে হাত দু’টি উপরের দিকে তুলতে হবে। এরপর কোমর থেকে শরীরের উপরের অংশ সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে দিন। এবার হাতের সাহায্য গোড়ালি স্পর্শ করুন। খেয়াল রাখতে হবে হাঁটু যেনো না ভেঙে যায়। ২০-৩০ সেকেন্ড এই অবস্থায় থাকার পর ধীরে ধীরে আগের অবস্থায় ফিরে আসতে হবে।
ধনুরাসন
এই আসনটি করতে হলে প্রথমেই আপনাকে পেট উপুড় করে শুয়ে পড়তে হবে। এরপর হাঁটু ভাজ করে পায়ের পাতা যতোটা সম্ভব পিঠের উপর নিয়ে আসুন। হাত দু’টি পিছনে নিয়ে গোড়ালির উপর শক্ত করে চেপে ধরতে হবে। এবার চেষ্টা করুন পা দু’টি যাতে ঠিক মাথার কাছাকাছি আসে। এখন পেট মেঝে স্পর্শ করিয়ে উপরের দিকে তাকান। এই ভঙ্গিতে স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ে ২০-৩০ সেকেন্ড থাকতে হবে। এরপর ধীরে ধীরে আগের ভঙ্গিতে আবার ফিরে যান।
ভুজঙ্গাসন
ভুজঙ্গাসন আসনটি করা অনেকটা সহজ। প্রথমেই হাতের তালু মেঝের উপর ভর দিয়ে পাঁজরের দু’পাশে রাখুন। তারপর কোমর থেকে পা পর্যন্ত মাটিতে রেখে দিয়ে, হাতের তালুর উপর ভর দিয়ে বাকি শরীরটা ধীরে ধীরে ঠিক উপরের দিকে তুলুন। এবার মাথাটা খানিকটা বেঁকিয়ে উপরের দিকে তাকান। কয়েক সেকেন্ড থাকার পর আবারও আগের অবস্থায় ফিরে আসতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org