দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শীতে শিশুর প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করতে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়াতে হবে। তবে রোগবালাই থেকে দূরে রাখার জন্য্য বরং সন্তানকে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খাওয়াতে পারেন কিছু পানীয়।
শীতকালে শিশুদের নিয়ে বেশ চিন্তায় পড়েন অভিভাবকরা। কারণ হলো, শীতকালে যতো রকম সর্দি-কাশি, হাঁচি, জ্বরের সমস্যা দেখা দেয়। এই ধরনের সংক্রমণজাতীয় সমস্যা প্র্রথমেই হানা দেয় শিশুদের মধ্যে। কারণ হলো, শিশুদের প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কম থাকে। সে কারণে যে কোনও রোগ সবচেয়ে আগে বাসা বাঁধে শিশুর শরীরে। তাই শিশুকে সুরক্ষিত রাখাটা অত্যন্ত জরুরি। শীতে শিশুর প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়াতে হবে। তবে সন্তানকে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খাওয়াতে পারেন কিছু পানীয়।
গাজরের রস
গাজরের মতো উপকারী জিনিস খুব কমই রয়েছে। শীতে সন্তানকে ফিট রাখতে ভরসা রাখতে পারেন গাজরের রসে। গাজরে রয়েছে ভিটামিন এ, ক্যারোটিন, ভিটামিন বি৬, পটাশিয়ামের মতো নানা স্বাস্থ্যকর উপাদান। প্রতিটি উপাদানই শিশুর শরীরে পর্যাপ্ত পুষ্টি জোগাতে সক্ষম। আবার প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে। রস ছাড়া অন্যভাবেও গাজর খাওয়াতে পারেন সন্তানকে।
কমলালেবুর রস
কমলালেবু শুধু স্বাদেরই নয়, এটি যত্ন নেয় শরীরেরও। কমলালেবুতে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, পটাশিয়াম ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। এগুলো শিশুর প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। তাই যে কোনও রোগের সঙ্গে লড়াই করতে প্রস্তুত থাকে শিশুরা। কমলালেবুর রস ছাড়াও বিটের শরবত কিন্তু শিশুদের জন্য অত্যন্ত ভালো।
জাফরন দুধ
শীত এলে অ্যালার্জির সমস্যা বেশ বাড়াবাড়ি পর্যায়ে আসে। শিশুদের মধ্যে এই সমস্যা আরও বেশি দেখা দেয়। সন্তানকে সংক্রমণমুক্ত রাখতে তাই খাওয়াতে পারেন জাফরন মেশানো দুধ। কারণ হলো জাফরন সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়। শিশুরা এমনিতেও দুধ খেতে চায় না। তবে খানিক জাফরন মিশিয়ে দিলে বেশ সুস্বাদু লাগলে শিশুরা এটি অনায়াসে খাবে। শীতে শিশুকে অবশ্যই এই পানীয়টি খাওয়াতে পারেন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org