দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইয়েমেনে সশস্ত্র গোষ্ঠী হুথিদের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে নতুন করে হামলা চালালো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। হুথিদের ১৮টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করে দেশ দু’টি।
লোহিত সাগরে একের পর এক জাহাজে হামলার পর মার্কিন এবং ব্রিটিশ বাহিনীর যৌথ এই হামলার ঘটনাটি ঘটে।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন বলেছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের যুদ্ধবিমান ইয়েমেনের হুথি গোষ্ঠীর ১৮টি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। ইরান-সমর্থিত হুথিদের বিরুদ্ধে পরাশক্তি এই দু’টি মিত্র দেশের এটি চতুর্থদফা যৌথ অভিযান। -খবর বিবিসির।
সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, শনিবারের এইসব হামলায় হুথিদের স্টোরেজ সুবিধা, ড্রোন, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, রাডার ও সশস্ত্র এই গোষ্ঠীর একটি হেলিকপ্টারকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়েছে। অপরদিকে যুক্তরাজ্য বলছে, হুথিদের সক্ষমতাকে আরও অবদমিত করতে কাজ করেছে মিত্ররা।
এক যৌথ বিবৃতিতে পেন্টাগন বলেছে যে, শনিবারের হামলায় বিশেষভাবে ইয়েমেনের ৮টি স্থানে হুথি গোষ্ঠীর ভূগর্ভস্থ অস্ত্রের অবকাঠামো, তাদের ক্ষেপণাস্ত্র অবকাঠামো, ড্রোন ব্যবস্থা , আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও রাডার ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত ১৮টি লক্ষ্যবস্তুতে একইসঙ্গে একটি হেলিকপ্টারকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়।’
এই বিষয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেন, আমেরিকা ‘বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নৌপথে জীবন ও বাণিজ্যের অবাধ প্রবাহ রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করবে না’।
উল্লেখ্য, ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার সন্দেহে সাম্প্রতিক সময় বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতে হুথিদের হামলা লোহিত সাগরে ব্যাপক উত্তেজনা আরও বাড়িয়েছে। মার্কিন এবং ব্রিটিশ বাহিনী হুথিদের বিরুদ্ধে হামলার জবাবও দিয়েছে। এর বিপরীতে হুথিরা আমেরিকান ও ব্রিটিশ স্বার্থকে হামলার বৈধ লক্ষ্য হিসেবেও ঘোষণা করেছে।
এছাড়াও হুথিদের বিরুদ্ধে হামলার পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি বহুজাতিক নৌ টাস্কফোর্স গঠন করেছে যার লক্ষ্যই হলো লোহিত সাগরের ট্রানজিট রুটে জাহাজ চলাচলের নিরাপত্তা রক্ষা করা। হুথিদের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা জোটের হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনায় ব্যাপক উদ্বেগও বৃদ্ধি পেয়েছে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org