দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গত ৬ অগাস্ট সীমান্তবর্তী রাশিয়ার কুর্স্ক অঞ্চলে ইউক্রেইনের সেনারা হঠাৎ করেই ঢুকে পড়ে। পশ্চিমা ও নেটো জোটের সহযোগিতায় ইউক্রেইন সীমান্ত অঞ্চলে ঢুকে যে হামলা শুরু করেছে, তা বিশ্বকে সর্বাত্মক যুদ্ধের দিকেই ঠেলে দিচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন রাশিয়ার পার্লামেন্টের এক এমপি মিখাইল শেরেমেত।
রাশিয়ার গণমাধ্যম শেরেমেতের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, বেসামরিক অবকাঠামোর ওপর পশ্চিমা সামরিক সাজসরঞ্জাম, পশ্চিমা গোলাবারুদ এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হওয়া ও রাশিয়ার ভূখণ্ডে হামলায় বিদেশিদের অংশগ্রহণের অকাট্য প্রমাণ দেখে কেও এই সিদ্ধান্তেই পৌঁছাতে পারে যে, তৃতীয় যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে বিশ্ব।
২০২২ সালে ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর পর এবারই প্রথম কিয়েভের সেনারা রুশ ভূখণ্ডের অনেকখানি ভেতরে ঢুকতে সক্ষম হলো।
রাশিয়ার সীমান্তবর্তী কুর্স্ক অঞ্চলে ইউক্রেনের সেনারা গত ৬ অগাস্ট হঠাৎ করেই ঢুকে পড়ে। তারপর ৭ দিনেই রাশিয়ার ভূখন্ডের ১ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা দখলে নেওয়ার দাবিও করে ইউক্রেন।
দেশটির শীর্ষ সামরিক কমান্ডার গত বৃহস্পতিবার বলেছেন, কুর্স্কে তারা একটি সামরিক কমান্ড সেন্টারও স্থাপন করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তাদের সেনারা এখনও অগ্রসর হচ্ছে। লড়াইয়ের মুখে এলাকাটি থেকে মানুষজনকে সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় রাশিয়া।
রাশিয়ার পার্লামেন্টের প্রতিরক্ষা কমিটির সদস্য শেরেমেত রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কথার প্রতিধ্বনি করে বলেছেন যে, ন্যাটো দেশগুলোই ইউক্রেনের এই আগ্রাসন পরিকল্পনায় সবুজ সংকেত দিয়েছে। তবে ওয়াশিংটন এমন অভিযোগ অস্বীকার করে।
পুতিনের সহযোগী নিকোলাই পাত্রুশেভও গতকাল (শুক্রবার) ইজভেস্তিয়া পত্রিকায় এক সাক্ষাৎকারে একই অভিযোগ তুলে বলেছেন যে, রাশিয়ায় ঢুকে ইউক্রেনের সেনাদের হামলার পেছনে পশ্চিমাদের হাত রয়েছে।
কুর্স্ক অঞ্চলে ইউক্রেনের অভিযানের পরিকল্পনায় নেটো এবং পশ্চিমা গোয়েন্দাসংস্থাগুলো জড়িত ছিল বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। যদিও এইকথার সপক্ষে তিনি কোনও প্রমাণই দেননি।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org