দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনাকে যদি জিজ্ঞাসা করা হয় কোথায় বেশি জীবাণু থাকতে পারে, টয়লেটে নাকি আপনার স্মার্টফোনে? আপনি হয়ত স্বাভাবিকভাবেই বলে দিবেন নিশ্চয় টয়লেটে বেশি জীবাণু থাকে।
তবে গবেষণায় উঠে এসেছে আমাদের ব্যবহৃত ফোনে টয়লেটের কমোডের চেয়ে বেশি জীবাণু রয়েছে। আচ্ছা একবার ভেবে দেখেন, আমরা শরীরের জীবাণু দূর করতে প্রতিদিন বিভিন্ন উপাদান ব্যবহার করি। টয়লেটের কমোড সপ্তাহে কমপক্ষে একবার হারপিক জাতীয় কোন পরিষ্কারক দ্বারা পরিষ্কার করা হয়। আর এত সব উপাদান কেবল জীবাণু দূর করা এবং পরিষ্কার করার জন্যই ব্যবহার করা হয়। এবার বলুন আপনার স্মার্টফোন মাসে কয়বার এইসব উপাদান দিয়ে দৌত করেন বা পরিষ্কার করেন? নিশ্চয় একবারও না। কারণ আমাদের ফোনে সামান্য একটু পানির ফোঁটা পড়লেই আমরা দ্রুত তা মুছে ফেলি সেখানে ধৌত করানোর প্রশ্নই আসে না।
তাহলে এখন চিন্তা করুন প্রতিদিন বিভিন্ন জীবাণু যুক্ত জিনিস ধরার পর আপনার স্মার্ট ফোন হাতে নিচ্ছেন। তাহলে এই জীবাণুগুলো কথায় যাচ্ছে? নিশ্চয় আপনার ফোনের সাথেই থেকে যাচ্ছে যা পরবর্তীতে নানা ভাবে আমাদের শরীরে প্রবেশ করছে। অনেক সময় ফোন হাত থেকে রাস্তায় বা কোন ময়লা পরিবেশে পড়ে যায়। তখন আমরা সেটি উঠিয়ে কেবল ধুলাবালিগুলো ঝেরেমুছে পকেটে রেখে দিই। কিন্তু সেই সাথে নানা জীবাণু ফোনে লেগে যায়।
গবেষণায় দেখা গেছে মোবাইল ফোনে ক্ষতিকর ই-কোলাই সহ নানা ধরণের মারাত্মক ব্যাক্টেরিয়া রয়েছে। লন্ডন স্কুল অব হাইজিন এবং ট্রপিক্যাল মেডিসিনের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ইংল্যান্ডে ব্যবহৃত ছয়টি মোবাইলের মধ্যে একটি মোবাইলে ফিক্যাল ব্যাক্টেরিয়া (মল থেকে উৎপন্ন) রয়েছে। এছাড়া ই-কোলাইয়ের মতো ব্যাক্টেরিয়াও পাওয়া গেছে।
অনেকেই খাওয়ার আগে হাত ধুয়ে আবার সেই হাত দিয়ে কিছুক্ষণ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে খাওয়া শুরু করেন। তারা মনে করেন এতে কোন সমস্যায় নেই। অথচ এখন আপনি মোবাইল ফোন থেকে আপনার হাতে চলে আসা নানা ধরণের ব্যাক্টেরিয়া সহ খেতে শুরু করেছেন। অর্থাৎ যে জন্য হাত ধুয়েছেন সেই গুড়ে বালি।
মোবাইল ফোনের এই সব ব্যক্টেরিয়া থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়ঃ
যেহেতু মোবাইল এখন আমাদের নিত্যদিনের সবচেয়ে আপন সঙ্গী হয়ে গেছে, তাই এটিকে এড়িয়ে চলা সম্ভব নয়। তবে বেশ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করে নিজেকে মোবাইল ফোনে লেগে থাকা ব্যাক্টেরিয়া থেকে রক্ষা করা সম্ভব।
১। খাবার খাওয়া জন্য হাত ধোয়ার পর কখনই মোবাইল ফোন ধরবেন না। আর যদি ধরতেই হয় তবে আবার ভাল করে হাত ধুয়ে এসে খেতে বসুন।
২। শিশুরা সাধারণত হাতের কাছে যা পায় তাই মুখে নেয়। তাই তাদের হাতে বা আশপাশে কোথাও ফোন রাখবেন না।
৩। ময়লা হাতে ফোন ধরা থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। কারণ ময়লা হাতের মাধ্যমেই নানা ধরণের জীবাণু ফোনে বাসা বাধে।
৪। যেখানে সেখানে ফোন রাখবেন না। কারণ ময়লা জায়গাতে ফোন রাখলে সেখান থেকে ফোনে জীবাণু লেগে যায়।
৫। সম্ভব হলে ফোনের ক্যাচিং খুলে মাঝে মাঝে জীবাণুনাশক উপাদান দিয়ে ক্যাচিং পরিষ্কার করুন। তারপর মুছে রোদে শুকিয়ে আবার ব্যবহার করুন।
এছাড়া একটু সতর্কতার সাথে ফোন ব্যবহার করার মাধ্যমেই আমরা ফোনের নানা জীবাণু থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারি।