দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সবচেয়ে নিরাপদ ভ্রমণ হলো ট্রেন। অপরদিকে সবচেয়ে বিপজ্জনক ভ্রমণ হলো বিমান ভ্রমণ। তারপরও বিমান ভ্রমণ করতে আগ্রহী সবাই। আজ জেনে নিন বিমান চলাচল যে সকল দেশে সবচেয়ে বিপজ্জনক।
তবে সব দেশে বিমান ভ্রমণ অবশ্য বিপজ্জনক নয়। কিছু দেশ রয়েছে যেখানে বিমানে চলাচল করা মানেই মৃত্যুর কারণ হতে পারে। বিমানের জন্য বিপজ্জনক একটি দেশ হলো গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র বা যাকে বলে ডিআরসি।
সম্প্রতি কয়েকটি দেশে বিমান দুর্ঘটনার পর বিমান চলাচলের নিরাপত্তা নিয়ে সকলের মনেই প্রশ্ন উঠেছে। সর্বশেষ দুর্ঘটনাটি হয়েছে নভেম্বরে, পূর্বাঞ্চলীয় শহর গোমায়। বিমানটি একটি বাড়ির উপরে আছড়ে পড়ায় ২৭ জন প্রাণ গেছে।
এভিয়েশন সেফটি নেটওয়ার্ক সারা বিশ্বে বিমান চলাচলের উপর নজর রাখে ও এই বিষয়ে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে থাকে।
তাদের তথ্য-উপাত্তে দেখা যায় যে, ১৯৪৫ সালের পর আফ্রিকা মহাদেশের এই দেশটিতেই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক যাত্রীবাহী বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে।
নর্থ ড্যাকোটা ইউনিভার্সিটির ড্যানিয়েল কাওয়াসি আদজেকুম এই বিষয়ে বলেছেন, গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে প্রচুর দুর্ঘটনার পেছনে অন্যতম কারণই হলো ভৌগোলিক ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার দুর্বলতা।
এর একটি কারণ হলো রাজধানী কিনশাসা হতে দেশটির ২৫টি বড় বড় শহরের মাত্র ৪টি ছাড়া অন্য কোনোটিতেই সড়কপথে যাওয়া যায় না। তা ছাড়া দেশটির বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণের জন্য যে ট্রাফিক ব্যবস্থা এবং যন্ত্রপাতি রয়েছে তা কোনোরকমে কাজ চালানোর মতো।
অপরদিকে কিছু দুর্ঘটনার জন্য দায়ী খারাপ আবহাওয়া। প্রবল বৃষ্টিপাত এবং ঝড়ের কারণে বর্ষাকালে বিমান চলাচলের ঝুঁকি বেড়ে যায় কিছু কিছু স্থানে।
২০১০ সালের পর হতে সবচেয়ে বেশি বিমান দুর্ঘটনা হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। তারপরই রাশিয়া, কানাডা, মেক্সিকো ও ইন্দোনেশিয়া।
গত ১০ বছরে রাশিয়াতে বিমানযাত্রীর সংখ্যা প্রায় ৩ গুণ বেড়েছে ও ইন্দোনেশিয়াতে বেড়েছে প্রায় চারগুণ। এই একই সময় গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে দুর্ঘটনায় যতো মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। একই সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়েছে নেপালে। এই দুটো দেশেই এই ১০ বছরে ১৮০ জনের মতো নিহত হয়।
নেপালেও বিমান দুর্ঘটনার জন্য এর ভূ-প্রাকৃতিক সবচেয়ে বড় কারণ বলে মনে করা হয়ে থাকে। এখানে বিমানবন্দর এমন একটি স্থানে যেখানে পাহাড় কাটিয়ে রানওয়েতে অবতরণ করতে হয়। তাই অনেক সময়ই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায় অবতরণ।
সারা বিশ্বে যতো বিমান চলাচল করে তার মাত্র শূন্য দশমিক এক শতাংশ বিমান চলে এই ডিআরসিতে। অর্থাৎ বিশ্বে এক হাজার বিমান থাকলে এই দেশে বিমান রয়েছে মাত্র একটি। তবে ২০১০ সালের পর হতে মোট বিমান দুর্ঘটনার ৪ শতাংশই ঘটেছে এই দেশটিতে।
অপরদিকে আফ্রিকার অন্য দেশগুলোতেও বিমান চলাচল খুব একটা নিরাপদ নয়। সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনাটি হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। রাজধানী কিনশাসায় রানওয়ে হতে বাইরে ছুটে গিয়ে একটি বাজারের ভেতরে ঢুকে পড়ে একটি বিমান। ওই দুর্ঘটনায় ২৩৭ জন নিহত হয়েছিলো।
দেখুন ভিডিওটি
https://www.youtube.com/watch?v=rsNulxM1PJQ