দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের সব মসজিদ, গির্জা, সিনাগগসহ সব ধরনের উপাসনালয় আজ-কালের মধ্যে খুলে দিতে গভর্নরদের নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
সেই সঙ্গে নির্দেশ পালনে ব্যর্থ হলে গভর্নরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এর আগে ইস্টার সানডে উপলক্ষে গত ১২ এপ্রিল দেশের সব গির্জা খুলে দেওয়ার পক্ষে ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে এতে করে বাধ সাধেন তার প্রশাসনের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা সতর্ক করে দেন যে, এই সময় গির্জা খুলে দিলে তা হবে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ একটি কাজ। পরে গির্জা খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা থেকে সরে আসেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে বিধি-নিষেধ কিছুটা শিথিল হওয়ার কারণে সম্প্রতি কিছু কিছু অঙ্গরাজ্যে গির্জা খুলতেও শুরু করেছে। তবে শুধু গির্জাই নয়, এখন দেশের সব উপাসনালয় খুলে দেওয়ার পক্ষে এলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
শুক্রবার হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে এই বিষযে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘আজ আমি স্বীকৃতি দিচ্ছি যে, গির্জা, সিনাগগ, মসজিদসহ-সব ধরনের উপাসনালয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ সেবা দিয়ে আসছে। এই জায়গাগুলো সমাজের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে ও আমাদেরকে জনগণকে একতাবদ্ধ হতে আরও সাহায্য করে। জনগণও গির্জা, সিনাগগ ও মসজিদে যেতে চান।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘কিছু গভর্নর মনে করেন যে, শুধু মদের দোকান ও গর্ভপাত ক্লিনিকগুলোই খুলে দেওয়াটাই বোধহয় অপরিহার্য, তাদের কাছে গির্জা খুলে দেওয়াটা অপরিহার্য নয়। এটি মোটেও ঠিক নয়। তাই আমি এই ধরনের অবিচার সংশোধন করে দিচ্ছি এবং বলতে চাইছি যে, উপাসনালয়গুলো খুলে দেওয়াটাও অপরিহার্য।’
তার এ নির্দেশ পালনে গাফিলতি দেখালে অঙ্গরাজ্যের গভর্নরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘যদি গভর্নররা আমার কথামতো উপাসনালয়গুলো খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা না নেন তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেবো।’ তবে তাদের বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেবেন তা অবশ্য নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
উল্লেখ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত ১৬ লাখ ৪৫ হাজার ৯৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আর মারা গেছেন ৯৭ হাজার ৬৪৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্তও হয়েছেন ২৪ হাজারেরও বেশি। মারা গেছেন ১ হাজার ২৯৬ জন। এই অবস্থায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এমন সিদ্ধান্তে সর্বত্র সমালোচনা শুরু হয়েছে।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।