দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশের ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে হলে আপনাকে যেতে হবে রাজশাহীর পুঠিয়া রাজবাড়ি। পুঠিয়ার এই রাজবাড়ী আমাদের দেশের একটি ঐতিহ্য কৃষ্টি কালচারের অংশ।
এক কারুকার্যময় শিবমন্দির, সঙ্গে রয়েছে দীঘির পাড়ে এক নির্মল বাতাস। উঁচু মঞ্চের ওপর নির্মিত মন্দিরটির দক্ষিণ দিকে রয়েছে সুপ্রশস্ত সিঁড়িসহ প্রধান প্রবেশপথ। চারপাশে টানা বারান্দায় রয়েছে ৫টি করে খিলান প্রবেশপথ। আর বারান্দার পিলারগুলোর নিচের অংশ চমৎকারভাবে অলংকৃত ও মেঝের বহিরাংশে বেলেপাথর স্থাপিত রয়েছে।
মন্দিরের মূল কক্ষের পূর্ব, পশ্চিম এবং দক্ষিণ দেওয়ালে একটি করে প্রবেশপথ, যেখানে বেলেপাথরের চৌকাঠ ব্যবহৃত হয়েছে ও চৌকাঠগুলোও ফুল আকৃতির নকশা দ্বারা অলংকৃত। প্রত্যেক প্রবেশপথের দুই পাশে চুন-সুরকি দ্বারা নির্মিত দেব-দেবীর দণ্ডায়মান মূর্তি রয়েছে।
উত্তর পাশে অবস্থিত দীঘিতে নামার জন্য রয়েছে বাঁধানো ঘাট। এই ঘাটে ওঠানামার জন্য পৃথক সিঁড়ির ব্যবস্থাও রয়েছে। চতুষ্কোণাকৃতির কাঠামোর ওপর পিরামিড আকৃতির চূড়াগুলো নির্মিত হয়েছে। পুঠিয়ায় অবস্থিত অন্যান্য মন্দিরগুলোর মধ্যে এটি উল্লেখযোগ্য।
পাঁচআনি জমিদার বাড়ির রানি ভুবনময়ী দেবী এই মন্দিরটি নির্মাণ করেন। তাই এই মন্দিরকে ভুবনেশ্বর মন্দিরও বলা হয়ে থাকে। বড় শিবমন্দির হতে কয়েক মাইল দূরেই জগন্নাথ মন্দির অবস্থিত। এই মন্দিরটিতে পোড়ামাটির কোনো ফলক না থাকলেও এর নির্মাণশৈলী অত্যন্ত চমৎকার। এর উত্তর ও পূর্ব পাশে রয়েছে দুটি প্রবেশপথ।
প্রবেশপথে বেলেপাথরের চৌকাঠের ওপর চমৎকার অলংকরণ রয়েছে। দোতলার কক্ষটি আকারে ছোট ও এটির চারপাশে উন্মুক্ত প্রবেশপথ রয়েছে। পুঠিয়া বাজারের মধ্যে অবস্থিত চার তলাবিশিষ্ট মন্দিরটি দোলমঞ্চ আকারে ক্রমান্বয়ে সরু হয়ে ঠিক ওপরে উঠে গেছে।
পুঠিয়া পাঁচআনি জমিদার বাড়ির অঙ্গনে অবস্থিত গোবিন্দমন্দির। রাজবাড়ির নিচের অংশের একটা সুপ্রাচীন দরজা দিয়ে প্রবেশ করা যায়।
চিত্রফলকগুলো দেখে কান্তজির মন্দিরের কথাও মনে পড়ে যায়। রাজবাড়ির মূল ভবনের সামনে কাছারি অঙ্গনের উত্তর ও পশ্চিমের দ্বিতলবিশিষ্ট দুটি ব্লক ব্যতীত এই প্রাসাদটির অন্যান্য অংশ একতলা আকারে নির্মিত। এই প্রাসাদ নির্মাণে উপকরণ হিসেবে ইট, চুন-সুরকি, লোহা এবং কাঠ ব্যবহৃত হয়েছে। কাছারি অঙ্গন ও মন্দিরের অঙ্গনে প্রবেশের জন্য রাজবাড়ির সম্মুখে পশ্চিম এবং পূর্ব প্রান্তে রয়েছে দুটি সুউচ্চ ফটক। পুঠিয়ার নিদর্শনগুলো দেখার সবচেয়ে সুবিধা হচ্ছে, সব নিদর্শনই খুব কাছাকাছি জায়গায় অবস্থিত। যে কোনো প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানে ঘুরলে আপনার মনের ভেতর বিষাদ ভর করবে। পুরাকীর্তিগুলো ক্ষণে ক্ষণে স্মরণ করিয়ে দেয় জীবন কতো ক্ষণস্থায়ী।
ঢাকা হতে সড়ক, রেল ও আকাশপথেও রাজশাহী যাওয়া যায়। সড়কপথে ঢাকার গাবতলী এবং কল্যাণপুর থেকে বাসে উঠতে পারেন। এজন্য গ্রিন লাইন, দেশ ট্রাভেলস, শ্যামলী, ন্যাশনাল ট্রাভেলস ও হানিফসহ বেশ কয়েকটি বাস সার্ভিস রয়েছে। শ্রেণীভেদে ভাড়া পড়বে ৪০০ থেকে এক হাজার টাকার মধ্যে। রেলপথে যাওয়ার জন্য রয়েছে সিল্কসিটি এক্সপ্রেস, ধুমকেতু ও পদ্মা এক্সপ্রেস নামে ৩টি ট্রেন। রবিবার ব্যতীত প্রতিদিন ঢাকার কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ও মঙ্গলবার ব্যতীত প্রতিদিন রাত ১১টা ১০ মিনিটে কমলাপুর থেকে ছাড়ে আর ধুমকেতু ভোর ৬টায় রাজশাহীর উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ভাড়া শ্রেণীভেদে ৩৫০ থেকে এক হাজার ৮১ টাকা পর্যন্ত দিতে হবে। এ ছাড়া আকাশপথে ঢাকার শাহজালাল (রা.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, ইউনাইটেড এয়ার এবঙ ইউএস-বাংলা এয়ারের বিমানেও রাজশাহী যাওয়া যায়।
পুঠিয়ার দূরত্ব হলো রাজশাহী হতে ৩৪ কিলোমিটার ও নাটোর হতে ১৮ কিলোমিটার। রাজশাহী হতে নাটোরগামী বাসে চড়ে বা লোকাল বাসে করে রাজশাহী-নাটোর মহাসড়কের পুঠিয়া বাসস্ট্যান্ডে নেমে ৫ হতে ১০ মিনিট হাঁটলেই পুঠিয়া রাজবাড়ি পাবেন।
তথ্যসূত্র: deshebideshe.com
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।