দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মানুষ কতোদিন বাঁচতে পারে সেই বিষয়ে দীর্ঘদিন যাবত গবেষণা করা হচ্ছে। এবার গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে যে, মানুষ ১৫০ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে।
মানুষের সর্বোচ্চ আয়ু নিয়ে জল্পনার যেনো শেষ নেই। এবার সেই জল্পনার অবসান ঘটিয়ে সম্প্রতি এক গবেষণায় উঠে এসেছে যে, একজন মানুষ ১২০-১৫০ বছর বয়স পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারেন। এর বেশি সময় কারও পক্ষে বেঁচে থাকা কোনো অবস্থাতেই সম্ভব নয়।
গত ২৫ মে ন্যাচার কমিউনিকেশনস জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় এমন তথ্যই দিয়েছেন গবেষকরা। গাণিতিক মডেলিং ব্যবহার করে গবেষকরা এই তথ্য উপস্থাপন করেন।
গবেষকদের মতে, মানুষের পক্ষে ১২০ হতে ১৫০ বছরের বেশি বেঁচে থাকা একেবারেই অসম্ভব। কারণ হলো বার্ধক্য আসলে, মানুষ শারীরিক অসুস্থতার কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একেবারেই হারিয়ে ফেলেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েই মানুষ মারা যান। প্রকৃতপক্ষে মৃত্যু হলো একটি জৈবিক প্রক্রিয়া।
ক্যালিফোর্নিয়ার নোয়াটোতে বক ইনস্টিটিউট ফর রিসার্চ অন এজিংয়ের অধ্যাপক জুডিথ ক্যাম্পিসি লাইভ সায়েন্সকে বলেছেন, এই জাতীয় গবেষণাগুলো ইতিহাস ও বর্তমান তথ্যের উপরেই নির্ভর করে। বার্ধক্য নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে তারা বিভিন্ন শারীরিক পরিবর্তনও লক্ষ্য করেছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও রাশিয়ার ৫ লাখ মানুষের রক্তকোষে কী কী পরিবর্তন আসছে, তা নজরে রেখেছেন গবেষকরা। সেইসঙ্গে কতো পা হাঁটছেন এক ব্যক্তি, তাও দেখা হয়েছে। ব্রিটেন, আমেরিকা এবং রাশিয়ার অনেক মানুষকে নিয়ে চলেছে এই সমীক্ষা। দেখা যায়, বিভিন্ন এলাকার মানুষের মধ্যে বার্ধক্য আসায় একই ধরনের কিছু প্রক্রিয়া রয়েছে।
অ্যালবার্ট আইনস্টাইন কলেজ অব মেডিসিনের জেনেটিক বিশেষজ্ঞ জ্যাঁ ভিগ ২০১০ সালে নেচার জার্নালে বিশদ এক গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ওই গবেষণায় জানানো হয় যে, মানুষের পক্ষে ১২৫ বছরের বেশি বেঁচে থাকার সম্ভাবনা একেবারেই কম।
অন্যান্য গবেষকরা যুক্তি দিয়েছিলেন যে, মানুষের আয়ু সম্পর্কে কোনো রকম চূড়ান্ত সীমা নেই। যদিও নেচার জার্নালের গবেষণায় বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মানুষ ১৫০ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারেন। তবে এই সংখ্যাটি বৃদ্ধ বয়সে তার জীবনমান কেমন হবে, সে সম্পর্কে তেমন তথ্যই জানা যায়নি।
লাস ভেগাসের নেভাডা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্ক কেরকরিয়ান স্কুল অব মেডিসিনের ডিন ও স্বাস্থ্য বিষয়ক উপাধ্যক্ষ ডা. মার্ক জে কাহন বলেছেন যে, একজন ব্যক্তির যেমন বয়স বাড়লে মানুষের শরীরের সাদা এবং লাল রক্ত কণিকায় বেশ পরিবর্তন দেখা দেয়। সে কারণেই মানুষের চুলও সাদা হয়ে যায়। বুড়ো হওয়ার এই প্রক্রিয়াকে বলা হয়ে থাকে বায়োমার্কার।
এই বিষয়ে লরেন্স বার্কলে ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির একজন প্রবীণ বিজ্ঞানী ক্যাম্পিসি বলেছেন, মানুষের দীর্ঘায়ু লাভের পেছনে বিশাল সামাজিক প্রভাবও রয়েছে।
বিশ্বের দীর্ঘায়ু মানুষদের দৈনন্দিন কার্যকলাপ এবং খাদ্যাভাস পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় যে, তারা সবাই অত্যাধিক পরিশ্রমী এবং তাজা খাবার খেয়েছেন। তাই দীর্ঘায়ু লাভের জন্য অবশ্যই শরীরকে সুস্থ রাখতে হবে।
বার্ধক্যজনিত স্বাস্থ্য কেবল একজন ব্যক্তির জীবনকেই প্রভাবিত করে তা নয় বরং সময়, অর্থ ও চিকিৎসা সংস্থানের ক্ষেত্রে পরিবারকেও প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হয়। তবে গবেষকরা যুক্তি দেখান যে, যদি বৃদ্ধ বয়সে স্থিতিস্থাপকতা বাড়ানোর কোনো উপায় থেকে থাকতো, তাহলে মানুষ আসলেও সুস্থ থাকতো এবং দীর্ঘায়ুও লাভ করতো!
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।