দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা এতোদিন জানতাম ফলের রস খেলেই ফলের গুণাগুণ পুরোপুরি পাওয়া যায়। কিন্তু এখন গবেষকরা বলছেন একটু ভিন্ন কথা। তারা বলেছেন, রসের থেকেও আস্ত ফল ডায়াবেটিসে বেশি উপকারী।
আস্ত ফল খাওয়া হোক অথবা সেটার রস করে খাওয়া হোক- দুয়ের মধ্যে পুষ্টিগত তেমন কোনো পার্থক্য নেই বলেই ধারণা বিশেষজ্ঞদের। কিন্তু পেটে গিয়ে হজমের তারতম্যের কারণে শরীরে এর প্রভাবে তারতম্য হতে পারে। গোটা ফল ডায়বেটিসের ঝুঁকি কমাতে ভূমিকা রাখে। বিপরীতে বেশি পরিমাণ ফলের জুস টাইপ-টু ডায়াবেটিসের আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়। গত ২৫ বছরের আলাদা তিনটি গবেষণার ফল সমন্বয় করে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও সিঙ্গাপুরের একদল গবেষক এসব তথ্য জানিয়েছেন। ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে (বিএমজি) গতকাল ৩০ আগস্ট গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন পেশার এক লাখ ৮৭ হাজারেরও বেশি মানুষ এ গবেষণায় অংশ নেয়। তাদের খাদ্যাভ্যাস, ওজন, ধূমপানের অভ্যাস, শরীর চর্চাসহ জীবনযাত্রার বিভিন্ন বিষয়ে লক্ষ রাখা হয়। প্রশ্নোত্তর পদ্ধতিতে তাদের স্বাস্থ্যের বিভিন্ন বিষয় জেনে নেওয়া হয়। প্রায় সাড়ে ৬ শতাংশ অংশগ্রহণকারী গবেষণা চলাকালেই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়।
গবেষকরা জানান, গবেষণায় অংশ নেওয়ার সময় যেসব ব্যক্তি মাসে একবার বা তার চেয়েও কম বার ফল খেয়েছে, তাদের তুলনায় যারা সপ্তাহে অন্তত দুবার ফল খেয়েছে, তাদের শরীরে টাইপ-টু ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা ২৩ শতাংশ কমেছে। এসব ফলের তালিকায় রয়েছে ব্লুবেরি, আপেল ও আঙুর। অন্যদিকে যারা প্রতিদিন এক বা একাধিকবার ফলের রস খেয়েছে, তাদের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়েছে ২১ শতাংশ। সপ্তাহে তিনবার ফলের রস খাওয়ার পরিবর্তে যারা আস্ত ফল খেয়েছে, তাদের এ রোগের ঝুঁকি কমেছে ৭ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি অব পাবলিক হেলথের সহকারী অধ্যাপক কি সান জানান, আস্ত ফলের পরিবর্তে রস খাওয়ার কারণে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ার বিষয়টি এখন আমাদের কাছে পরিষ্কার। পুষ্টিগুণ এক হলেও শক্ত খাবারের চেয়ে তরল খাবার অনেক দ্রুত পাকস্থলী থেকে অন্ত্রে পৌঁছায়। আস্ত ফলের তুলনায় ফলের রস অনেক দ্রুত রক্তে গ্লুকোজ আর ইনসুলিনের মাত্রায় পরিবর্তন আনে। এ কারণেই ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়। অপরদিকে আঙুর ও বেরির অ্যান্তোসায়ানিন উপাদানটি হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায় বলেও জানানো হয়েছে। সূত্র : এএফপি।