দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চিকিৎসকরা বলে থাকেন, অপরিষ্কার চাদরে ঘুমোলে ত্বকের নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। একই চাদর দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করার কারণে ত্বকের কোন সমস্যাগুলো মাথাচাড়া দিয়ে ওঠতে পারে?
শরীরচর্চা ছাড়াও সুস্থ থাকার আরও একটি ধাপ হলো বিছানার চাদর পরিষ্কার রাখা। টানটান করে চাদর পাতা, পরিপাটি বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই দু’চোখে ঘুম জড়িয়ে আসে- সেটিই স্বাভাবিক। তবে শুধু তো ব্যবহার করলেই চলবে না, পরিষ্কার রাখতে হবে। একটি চাদর সাধারণত সপ্তাহখানেকের বেশি ব্যবহার করা মোটেও ঠিক নয়। এক সপ্তাহ অন্তর চাদর ধুলে ভালো। অপরিষ্কার চাদরে ঘুমোলে ত্বকের নানা সমস্যাও দেখা দিতে পারে। একই চাদর দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করার কারণে ত্বকের কোন সমস্যাগুলো মাথাচাড়া দিয়ে ওঠতে পারে?
ব্রণ
বাইরের তেলমশলা দেওয়া খাবার খাওয়া, পানি কম খাওয়া, শরীরচর্চা না করার মতো কিছু অভ্যাস হলো ব্রণের অন্যতম কারণ। তবে এগুলো ছাড়াও নোংরা চাদরে ঘুমোনোর কারণেও ব্রণ হতে পারে। অযত্নে থাকা যে কোনও জিনিসেই ব্যাক্টেরিয়া বাসে বাঁধতে পারে। ত্বকের কোষে সেই ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণের কারণেই ব্রণ হয়। খুব ভালো হয়, যদি ২/৩ দিন অন্তর বিছানার চাদর কেচে নেওয়া যায়।
ছত্রাকজনিত সংক্রমণ
পরিষ্কার না করে অনেক দিন ধরে একই চাদর ব্যবহার করলে ত্বকে ছত্রাকঘটিত সংক্রমণের ঝুঁকি থেকেই যায়। এমনিতেই বর্ষায় এই ধরনের রোগ-বালাই হওয়ার প্রবণতা একটু বেশি থাকে। তার উপর এমন অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস সেই ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। তবে কেবলমাত্র বর্ষাকাল বলে নয়, সারা বছরই ঘন ঘন চাদর বদলানোটা জরুরি।
অ্যাথলিট ফুট
ছত্রাকঘটিত সংক্রমণের আরও একটি দিক হলো এই অ্যাথলিট ফুট। এতে শরীরের বিভিন্ন অংশে চাকা চাকা দাগ দেখা দিতে পারে । অপরিচ্ছন্ন চাদর থেকে এই ধরনের সংক্রমণ ছড়ায় বেশি। ত্বকের এই সমস্যা এক বার দেখা দিলে সহজেই সারতেও চায় না। তাই ঝুঁকি না নিয়ে এই বর্ষায় পারলে ২/৩ দিন অন্তর চাদর পাল্টে নিতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org