দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ব্যবহারকারীদের আরও ভালো এবং রেসপন্সিভ অভিজ্ঞতা দিতে মেটা চালু করলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট।
মেটা জানিয়েছে, এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামের পাবলিক পোস্ট ব্যবহার করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। যেসব পোস্ট প্রাইভেট করা ছিল সেগুলো তারা ব্যবহার করেননি বলেও আশ্বস্থ করেছেন।
এমনকি এই ট্রেনিং দেওয়ার ক্ষেত্রে মেসেজিং-এর ক্ষেত্রেও কোনো তথ্যই নেওয়া হয়নি। পাবলিক পোস্ট হতে গোপনীয় তথ্য ফিল্টার করার বিষয়েও উদ্যোগ নেওয়া হয়।
মেটার বৈশ্বিক সম্পর্ক বিভাগের প্রেসিডেন্ট নিক ক্লেগ জানিয়েছেন, ‘যেসব ডাটাসেটে ব্যক্তিগত তথ্য বেশি পরিমাণে রয়েছে আমরা সেগুলো বাদ দেওয়ার চেষ্টাও করেছি।’ নতুন ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্টকে প্রশিক্ষণদানে ব্যবহৃত তথ্যের অধিকাংশ প্রকাশ্যেই ছিল বলেও তিনি জানিয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ তিনি লিংকডইনের কথাও জানান। সেখানে ব্যক্তিগত তথ্য বেশি থাকায় প্রশিক্ষণের জন্য প্লাটফর্মটিকে এড়িয়ে যাওয়া হয়।’
মেটার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ছাড়াও ওপেনএআই, গুগল বার্ডসহ একাধিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ট্রেনিং করার ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীদের ডাটা ব্যবহার নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে ইতিমধ্যে। অনুমতি ছাড়া ইন্টারনেট আর্কাইভ থেকে তথ্য ব্যবহার করাটা মোটেও ঠিক নয় বলে অনেক বিশ্লেষকও মতামত দিয়েছেন।
এআই মডেলের প্রশিক্ষণে যেসব তথ্য ব্যবহার করা হয় সেখান থেকে ব্যক্তিগত এবং কপিরাইট উপাদান সরানোর বিষয়ে কাজ করছে এইসব কোম্পানিগুলো। ইতিমধ্যে অনেকেই কপিরাইট কিংবা লেখকস্বত্ব ইস্যুতে কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে মামলাও করে দিয়েছেন ও এই নিয়ে বিতর্কও বেড়ে চলেছে দিনকে দিন। মেটা বার্ষিক পণ্য প্রদর্শনী কিংবা সম্মেলন কানেক্টে সিইও মার্ক জাকারবার্গ নতুন টুলও উন্মোচন করেছেন। বলা বাহুল্য যে, এটিই ছিল ভোক্তার জন্য কোম্পানিটির প্রথম এআইনির্ভর একটি টুল। এই বছরের আয়োজনেও আলোচনার মূলেই ছিল এআই। আগের সম্মেলনগুলোতেও অগমেন্টেড এবং ভার্চুয়াল রিয়ালিটি নিয়ে আলোচনা করা হয়।
জুলাই মাসে ভোক্তা পর্যায়ে ব্যবসায়িক ব্যবহারের জন্য এললামা ২ লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল উন্মোচন করেছিলো মেটা। বিনামূল্যে ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ওপর নির্ভর করে নতুন কাস্টম মডেলের অ্যাসিস্ট্যান্ট তৈরি করেছে ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ এবং ইনস্টাগ্রামের মালিকানা প্রতিষ্ঠান। আবার, টেক্সটের ভিত্তিতে ছবি তৈরিতে সক্ষম ইমু মডেলও ব্যবহার করা হয়।
জানা যায়, মাইক্রোসফট বিং সার্চ ইঞ্জিনের সহায়তায় নতুন এই টুলটি টেক্সট, অডিও এবং ছবি তৈরি করতে ও রিয়েল টাইম বা তাৎক্ষণিক যে কোনো তথ্যেও প্রবেশ করতে পারবে। ক্লেগ জানিয়েছে, প্রশিক্ষণের জন্য ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রাম পোস্টের ছবি ও ভিডিও দুই-ই ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, মেটার নতুন এআই টুল কী ধরনের কনটেন্ট তৈরি করতে পারবে সেই বিষয়েও বিধিনিষেধ আরোপ করেছে মেটা। যারমধ্যে পাবলিক ফিগার কিংবা পরিচিত ব্যক্তির অনুরূপ ছবি তৈরির বিষয়ও রয়েছে। কপিরাইটেড উপাদানের বিষয়েও ক্লেগ আশা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘কমেন্ট্রি কিংবা ব্যাখ্যা, গবেষণাসহ কয়েকটি বিষয়ে সংরক্ষিত বিষয়ের তথ্য ব্যবহারেরও নীতিমালা থাকা দরকার।’
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org