দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেক সময় বয়স্কদের শরীরে বেশি ক্যালশিয়াম জমলে আবার হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা থাকে বেশি। তাই মুঠো মুঠো ওষুধ না খেয়ে তিসি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন পুষ্টিবিদরা।
হাড় ক্ষয়ে যাচ্ছে অর্থই হলো ক্যালশিয়াম, ভিটামিন ডি খেতে হবে। এমন ধারণা কিন্তু অমূলক নয়। হাড় ও দাঁতের যত্নে ক্যালশিয়াম প্রয়োজন বলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া মুঠো মুঠো ওষুধ খেয়ে ফেলা মোটেও ঠিক নয়। বয়স্কদের শরীরে বেশি ক্যালশিয়াম জমলে আবার অনেক সময় হিতে বিপরীতও হতে পারে। তবে পুষ্টিবিদরা হাড় ভালো রাখতে নিয়মিত তিসি কিংবা ফ্ল্যাক্স সিড খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। দেহে অতিরিক্ত মেদ ঝরানোর পাশাপাশি হাড়ের যত্নেও রয়েছে এই বীজের ভূমিকা।
তিসির মধ্যে কী এমন রয়েছে যা হাড়ের জন্য এতো প্রয়োজনীয়?
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড
তিসি কিংবা ফ্ল্যাক্স সিডে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, হাড়ের সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডেরভূমিকা রয়েছে যথেষ্ট। ‘জার্নাল অফ ফুড বায়োকেমিস্ট্রি’-তে প্রকাশিত হয়েছে যে, এ ছাড়াও রয়েছে ম্যাঙ্গানিজ়, কপার, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, ফাইবারের মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। হাড়ের ঘনত্ব বাড়িয়ে তুলতে এইসব উপাদান প্রয়োজনীয়।
লিগনান
তিসির মধ্যে যথেষ্ট পরিমাণে লিগনান রয়েছে। হাড়ের ঘনত্ব বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে এই উপাদানটি। একটা বয়সের পর মহিলাদের ঋতুস্রাব বন্ধ হয়। হরমোনের হেরফেরে হাড়ের ঘনত্বও তখন কমতে থাকে। হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে এই তিসি।
ফাইবার
সাধারণভাবে শরীরে উপস্থিত ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম শোষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এই ফাইবার। তিসির মধ্যে যথেষ্ট পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। নিয়ম করে তিসির বীজ খেলে হাড়ের জন্য প্রয়োজনীয় সব উপাদান পর্যাপ্ত পরিমাণে শরীরে পৌঁছে যায়। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org