দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিড়াল মানুষদের অন্যতম প্রিয় গৃহপালিত প্রাণী। বিশেষ করে ছোট কিংবা নবজাতক বিড়াল অত্যন্ত কোমল, সংবেদনশীল এবং যত্নের দাবি রাখে।

ঘরে একটি ছোট বিড়াল রাখলে যেমন আনন্দ বাড়ে, তেমনি দায়িত্বও বেড়ে যায়। তাই এর সঠিক যত্ন নেওয়া জরুরি, নইলে বিড়ালটি দুর্বল হয়ে পড়তে পারে বা অসুস্থ হতে পারে। নিচে ছোট বিড়ালের যত্ন নেওয়ার কিছু কার্যকর উপায় তুলে ধরা হলো।
আপনাকে প্রথমেই ছোট বিড়ালের খাদ্য ব্যবস্থার দিকে মনোযোগ দিতে হবে। তিন মাস বয়স পর্যন্ত বিড়ালছানাকে দুধজাত খাবার যেমন—বিড়ালের জন্য নির্ধারিত ফর্মুলা মিল্ক, সামান্য পরিমাণে সিদ্ধ মাছ বা ডিমের কুসুম দেওয়া যায়। কখনোই গরুর দুধ কাঁচা অবস্থায় দেওয়া উচিত নয়, কারণ এতে হজমের সমস্যা হতে পারে। তিন মাস পর থেকে ধীরে ধীরে নরম ভাত, মাছ, বা শুকনো ক্যাট ফুড দেওয়া যেতে পারে। সবসময় পরিষ্কার ও হালকা গরম পানি রাখতে হবে যাতে বিড়ালটি প্রয়োজনমতো পান করতে পারে।
পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বিড়ালছানার বিছানা, খাবার এবং পানির পাত্র নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। ছোট বিড়ালকে গোসল করানোর সময় কুসুম গরম পানি ব্যবহার করা ভালো এবং শীতকালে গোসলের পর দ্রুত শুকনো তোয়ালে বা হালকা গরম বাতাসে শুকিয়ে দিতে হবে। গোসলের জন্য মানুষের সাবান ব্যবহার না করে বিড়ালের জন্য নির্দিষ্ট শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত।
বিড়ালছানার স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং টিকাদানও অবহেলা করা যাবে না। জন্মের কয়েক সপ্তাহ পর থেকেই পশুচিকিৎসকের পরামর্শে টিকা দিতে হবে। এতে করে র্যাবিস, ফ্লু বা অন্যান্য সংক্রামক রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। নিয়মিত কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়ানোও প্রয়োজন।
বিড়ালের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। ছোট বিড়াল খেলাধুলা ও সঙ্গ পছন্দ করে। তাকে খেলনা, বল, বা নরম কাপড়ের টুকরো দেওয়া যেতে পারে যাতে সে আনন্দে সময় কাটাতে পারে। মালিকের সঙ্গ পেলে বিড়াল দ্রুত বন্ধুত্বপূর্ণ এবং শান্ত স্বভাবের হয়।
বিড়ালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। জানালা, বারান্দা বা উঁচু জায়গায় যেন সে না পড়ে যায়, সেই বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। প্রয়োজন হলে বিড়ালের ঘাড়ে নাম এবং মালিকের ফোন নম্বরসহ কলার দেওয়া যেতে পারে।
সঠিক যত্ন, ভালোবাসা এবং পরিচ্ছন্ন পরিবেশ পেলে ছোট বিড়াল খুব দ্রুত বড় হয় ও ঘরের আপন সদস্যে পরিণত হয়। তাই ঘরের পৌষ্য বিড়ালের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণই হতে পারে একজন প্রকৃত প্রাণিপ্রেমীর প্রকৃত নিদর্শন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org