দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঘুম না হলে যেমন সমস্যা আবার বেশি ঘুমও শরীরের জন্য ভালো নয়। প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ঘুমোলে শারীরিক কিছু সমস্যাও দেখা দিতে পারে। সেগুলো আজ জেনে নিন।
আমরা জানি সুস্থ থাকতে ঘুমের কোনও বিকল্প নেই। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা থেকে ওজন কমানো- সব কিছুর সমাধানই লুকিয়ে পর্যাপ্ত ঘুমিয়ে। শরীর ভালো রাখতে যে ঘুমের প্রয়োজন, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ থাকতে পারে না। শুধু তো শরীরই নয়, মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমের প্রয়োজন রয়েছে। শরীরের অন্দরে কী জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে, তা বাইরে থেকে মোটেও বোঝা যায় না। সমস্যা না বুঝলেও সমাধান যখন জানা থাকে, তখন তো আর চিন্তা করার কিছুই নেই। তাই ফিট থাকতে ঘুমোনোর প্রয়োজন। বয়স ও শারীরিক সক্রিয়তা অনুযায়ী ৭-৯ ঘণ্টা পর্যন্ত ঘুম প্রয়োজন। তবে লন্ডনের ‘ন্যাশনাল স্লিপিং ফাউন্ডেশন’-এর এক গবেষণা জানাচ্ছে, বেশি ঘুমও একেবারেই ভালো নয়। প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ঘুমোলে শারীরিক কিছু সমস্যাও দেখা দিতে পারে। সেগুলো আজ যেনে নিন।
# রক্তে শর্করা বেড়ে যাওয়া নির্ভর করে জীবনযাপনের উপরে। সারা দিনের খাওয়া-দাওয়া, কাজ, শরীরচর্চা এসব কিছুর প্রভাব পড়ে থাকে বিপাকহারের উপর। দিনের বেশির ভাগ সময় যদি ঘুমিয়েই কাটে, সেই ক্ষেত্রে কোনও রুটিনই সঠিকভাবে মেনে চলা যায় না। এছাড়াও শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে শরীরচর্চা করাটা জরুরি। বেশি ঘুমোলে সেই অভ্যাস ব্যাঘাতও ঘটতে পারে।
# বেশি ঘুমোলে দিনের অনেকটা সময় বিছানাতে কেটে যায়। শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখতে যতোটুকু শরীরচর্চা প্রয়োজন, প্রতিদিন সেটুকু করতে না পারলে হার্টের সমস্যা হতে পারে। শুধু তা-ই নয়, প্রয়োজনের অতিরিক্ত ঘুমোলে শরীরে বাসা বাঁধতে পারে আরও অনেক ধরনের রোগ। ঝুঁকি এড়াতে তাই প্রয়োজনের বেশি ঘুমনোটা ঠিক নয়।
# বেশি ঘুমোলে ওজন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। ওজন ধরে রাখতে অতিরিক্ত ঘুমও বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। এছাড়াও ওজন বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত সব রোগও বাড়তে থাকে ঘুমের সঙ্গে। তাই কমও নয়, আবার বেশিও নয়- অর্থাৎ প্রয়োজন মাফিক ঘুমোন।
# সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠলেই শরীরে কিংবা মনে তরতাজা ভাবও থাকে। অতিরিক্ত ঘুমিয়ে বেলায় উঠলে আলস্যও লাগে, শরীরে চনমনে ভাব থাকে না। কোনও কাজে তেমন উৎসাহ পাওয়া যায় না। ঘুমোতে ইচ্ছা করলে সকালের দিকে তাড়াতাড়ি ওঠার চেষ্টা করতে হবে। দেখবেন সারাদিন বেশ ভালো কাটবে আপনার। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাঢহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org