দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাম্প্রতিক সময় অনেকেই সকালে খালিপেটে বাজার থেকে কেনা আমলকির রস খান। তবে পুষ্টিবিদরা বলেছেন, আমলকির রসের চেয়ে আস্ত একটি আমলকির পুষ্টিগুণও অনেক বেশি। বসন্তে রোগবালাইয়ের ঝুঁকি কমাতে কেনো খাবেন আমলকি।
শীতের শেষে এসেছে বসন্ত। বসন্ত মানেই তো বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ ঝুঁকি। বয়স্ক ও শিশুদের সমস্যা আরও বেশি। বসন্তকালীন এই ধরনের সমস্যাগুলোর সঙ্গে লড়াই করতে অন্যতম ভরসা হতে পারে এই আমলকি। সম্প্রতি অনেকেই সকালে খালিপেটে বাজার থেকে কেনা আমলকির রস খান। তবে পুষ্টিবিদরা বলেছেন, আমলকির রসের চেয়ে আস্ত একটি আমলকির পুষ্টিগুণ অনেকটা বেশি। বসন্তে রোগবালাইয়ের ঝুঁকি কমাতে কেনো খাবেন এই আমলকি? আজ জেনে নিন সেই বিষয়টি।
# রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে ভিটামিন সি’র যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। মৌসুম বদলে যে ধরনের সংক্রমণ হতে পারে, তা রুখে দিতে পারে এই আমলকি।
# পলিফেনল, ফ্ল্যাভোনয়েড, ট্যানিনের মতো নানা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট রয়েছে আমলকিতে। এইসব উপাদান অক্সিডেটিভ স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ করে ও দেহের কোষ নষ্ট হয়ে যাওয়াও রুখে দিতে পারে।
# হজমের গোলমাল ঠেকিয়ে রাখতে প্রতিদিন অ্যান্টাসিড খাচ্ছেন? পরিস্থিতি জটিল হলে ওষুধ হয়তো খাবেন- সেটিই স্বাভাবিক। তবে প্রতিদিন একটি করে আমলকি খেলেই এই ধরনের হজম সংক্রান্ত সমস্যা নির্মূল হয়ে যাবে। শুধু তাই নয়, কোষ্ঠকাঠিন্যের কষ্ট থেকেও মুক্তি দিতে পারে এই আমলকি।
# ওজন ঝরানোর প্রথম শর্তই হলো, বিপাকহার উন্নত করা। আর আমলকির মধ্যে যে পরিমাণ ভিটামিন সি রয়েছে, তা বিপাকহার বাড়িয়ে তোলার পক্ষে যথেষ্ট।
# বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রত্যক্ষভাবে না হলেও রক্তে শর্করার ভারসাম্য বজায় রাখতে পরোক্ষভাবে সাহায্য করে থাকে এই আমলকি। ইনসুলিন হরমোনের উৎপাদন ও ক্ষরণের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এই ভেষজটি।
# তারুণ্য ধরে রাখতে হলে, ত্বকের কোলাজেন সিন্থেসিস বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে এই ধরনের অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। আমলকি অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টের প্রধান উৎস। ত্বকের নিজস্ব জেল্লা ধরে রাখতেও সাহায্য করে এই আমলকি। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org