দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রতিবেশীর মোরগের ডাকে বিরক্ত হয়ে সাবেক এক সরকারি কর্মকর্তা আপত্তি জানিয়ে সোসাইটির লোক পাঠিয়ে মালিককে মোরগ পালতে বারণ করেন। না মানলে পুলিশ পাঠাবেন বলেও হুমকি দিয়েছেন। রাজধানী ঢাকার আদাবরের বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটিতে ঘটেছে এমন একটি ঘটনা!
মোরগের ডাকে বিরক্ত সাবেক অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবির মিলন। তার বিরুদ্ধে হুমকি-ধামকির অভিযোগ আনেন প্রতিবেশীরা।
এক প্রতিবেশী বলেছেন, গত ১৮ মার্চ এক ব্যক্তি আমার কাছে এসে বলেন যে, সচিব সাহেব (মাহবুব কবির মিলন) আপনার ফোন নম্বর চেয়েছেন। আমি নম্বর না দিয়ে তার কাছ থেকে সচিব সাহেবের নম্বর নিয়ে নিজেই ফোন করি। তিনি ফোন রিসিভ করে বলেন যে, ছাদে আপনি কী আপনি মুরগির ফার্ম করেছেন? আমি বলি ফার্মতো নয়, একটি পাখির খাঁচা বানিয়েছিলাম। সেখানে এখন কোনো পাখি নেই। বাচ্চারা গ্রামে গিয়েছিল সেখান থেকে ৫টা মুরগি এনেছে, তারমধ্যে একটা মোরগ। তিনি বললেন, মোরগ ডাকাডাকি করলে তো এলাকাটা গ্রাম ও খ্যাত হয়ে গেলো!
আমি তাকে বললাম, এই এলাকার অনেকেই মোরগ-মুরগি পালে, আপনার বাসার সামনেও রয়েছে। তিনি বলেন, আমি সবাইকে বললো এইসব সরাতে হবে, না হলে পুলিশের আশ্রয় নেবো। পুলিশের হুমকির পর মাহবুব কবিরের প্রতিবেশী উপায়ান্তর না পেয়ে মোরগটি জবাই করে খেয়ে ফেলেন। তবে মুরগিগুলো রাখেন। এর দু’দিন পর আবারও ওই বাসাতে লোক পাঠান মো. মাহবুব কবির মিলন। বলেন, মুরগি পালন পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে!
একই ধরনের অভিযোগ করেন মাহবুব কবিরের আরেক প্রতিবেশী। তিনিও বলেন, সচিব সাহেব বাসায় সোসাইটির লোক পাঠিয়েছেন। তারা বলে গেছেন, ছাদে কোনো মোরগ-মুরগি পালন করা যাবে না। এগুলো এখান থেকে সরাতে হবে।
প্রতিবেশীরা বলেছেন, নিজের জায়গায় মুরগি পালতে সমস্যাটা কোথায়? কোথাও এরকম বিধিনিষেধ নেই। প্রধানমন্ত্রীও বাসাবাড়িতে ফাঁকা জায়গায় পশুপালন এবং চাষাবাদে উৎসাহিত করেন। ঢাকা শহর বলে কী এর ব্যতিক্রম হবে?
এইসব অভিযোগের বিষয়ে সাবেক সচিব মাহবুব কবির মিলন বলেন, ‘আমার অভিযোগটি ছিল মোরগ নিয়ে। শেষ রাতে নামাজের পর ঘুমানোই যায় না। ভয়াবহ চিৎকার করে মোরগ। ৪টা বাসায় মোরগ পালন করে তারা। এইসব মোরগ যদি একসঙ্গে ডাকতেই থাকে তাহলে কী অবস্থা হতে পারে? যারা পালেন, তারা ঢাকাকে গ্রাম মনে করেন কি-না? সোসাইটিতে অভিযোগ জানানোর পর মোরগ পালা বন্ধ হয়েছে। বর্তমানে একটা বাড়িতে আছে মনে হয়।’
পুলিশ পাঠানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টা তেমন কিছুই নয়। তারা যদি কথা না শোনেন তাহলে আমাকে পুলিশের আশ্রয় নিতেই হবে- এটিই বলেছি আরকি। একটা এলাকায় আমরা সবাই মিলে বসবাস করি। একে অপরের সুযোগ-সুবিধাগুলো দেখবে না? আমার আপত্তি ছিল মোরগ নিয়ে, মুরগি তো এভাবে ডাকে না।’ তথ্যসূত্র: ভোরের কাগজ।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org