দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা জাানি যোগাসন করার অভ্যাসে মনোযোগ বাড়ে। ধূমপান ছাড়তে তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। যোগাসনের আবার নানা ধরনও রয়েছে। ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করতে কোন আসনগুলো করতে হবে?
আমরা সবাই জানি ধূমপান স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। তবে সেটি জেনেও সুখটান দেওয়ার অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসতে পারছেন না অনেকেই। চাইলেই ধূমপান বন্ধ করা এতো সহজ নয়। হয়তোবাড়ি থেকে পণ করে বেরিয়েছেন, সারাদিনে একটিও সিগারেট খাবেন না। অথচ বসের কাছে বকুনি খেয়ে সিগারেটে টান দিতে শুরু করলেন একের পর এক। উদ্বেগ কমাতে ধূমপান করার দরকার হয়ে পড়ে, এমন মনে হতেই পারে। তাই প্রথমেই মানসিক চাপ কমাতে হবে। সেজন্য নিয়মিত যোগাসন করাটা জরুরি। যোগাসন করার অভ্যাসে মনোযোগও বাড়ে। ধূমপান ছাড়তে তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। যোগাসনের আবার নানা ধরনও রয়েছে। ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করতে কোন আসনগুলো তাহলে করতে হবে?
বৃক্ষাসন
প্রথমেই সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে নিজের দু’টি হাত নমস্কারের ভঙ্গিতে বুকের কাছে আনুন। এরপর শরীরের ভারসাম্য রেখে ডান পায়ের হাঁটু ভাঁজ করে পায়ের পাতাটি বাঁ পায়ের ঊরুর উপরে আনুন। ধীরে ধীরে মেরুদণ্ড সোজা রেখে হাত নমস্কারের ভঙ্গিতে সমানভাবে মাথার উপর নিয়ে যান। অন্তত ৩০ সেকেন্ড এই ভঙ্গিতে এক পায়ের উপর দাঁড়িয়ে থাকুন। স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসুন এবং পা বদল করে নিয়ে পুনরায় একই কাজ করুন।
পদ্মাসন
প্রথমে বাঁ ঊরুর উপর ডান পা ও ডান ঊরুর উপর বাঁ পা রেখে মেরুদণ্ড সোজা করে বসুন। এখন দু’হাত সোজা করে হাঁটুর উপর রাখুন। এতে শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে। এইভাবে বসার অভ্যাস করুন অন্তত মিনিট পাঁচেক।
অনুলোম-বিলোম
অনুলোম করার ক্ষেত্রে এক দিকের নাক বন্ধ থাকবে। অর্থাৎ প্রথমে ডান দিকের নাকের ছিদ্র চেপে ধরে, বাঁ দিক দিয়ে শ্বাস নেওয়া এবং ছাড়ার কাজ করতে হবে। এরপরে বাঁ দিকের নাকের ছিদ্র চেপে ধরে, ডানদিক দিয়ে শ্বাস গ্রহণ এবং বর্জনের অভ্যাস করতে হবে। এই প্রাণায়ামে শ্বাস নেওয়া এবং ছাড়ার প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ হবে তিন ধাপে। প্রথমেই কিছুটা শ্বাস নিয়ে থেমে আবার শ্বাস নিতে হবে, এরপর আবার থেমে পুরো শ্বাস গ্রহণ করতে হবে। শ্বাস ছাড়ার সময় বজায় রাখতে হবে এই নিয়মে।
অপরদিকে বিলোমের বেলাতে দুই নাক দিয়েই একই সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই শ্বাস নেওয়া প্রয়োজন। তবে অনুলোমের মতো তা হবে তিনটি ধাপে। অর্থাৎ, প্রথমেই কিছুটা শ্বাস নিয়েই দু’সেকেন্ড থামতে হবে। আবার শ্বাসও নিতে হবে। আবার দু’সেকেন্ড থেমে শেষ ধাপে পুরো শ্বাস নিতে হবে। সেইসঙ্গে ছাড়তেও হবে একই পদ্ধতিতে থেমে থেমে অন্তত তিন ধাপে।
ভ্রামরী
প্রথমেই ম্যাটের উপরে শিরদাঁড়া সোজা করে পা মুড়ে বসতে হবে। মাথা এবং ঘাড় টান টান রাখুন। দু’হাত থাকুক দুই হাঁটুর ওপর। এখন চোখ বন্ধ করে এই অবস্থানে আরামদায়কভাবে বসুন। প্রাণায়াম শুরুর আগে এই ভঙ্গিমা রপ্ত করাটা জরুরি। এখন মুখমণ্ডলের দিকে খেয়াল করুন। ঠোঁট যেনো বন্ধ থাকে, তবে মোটেও দাঁত চেপে রাখবেন না। দু’পাটি দাঁতের মধ্যেও কিছুটা ফাঁক রাখুন। দুই হাত পাশের দিকে সোজা করতে হবে। এবার কনুই থেকে ভাঁজ করে কানের কাছে আনুন। মধ্যমা কিংবা মাঝের আঙুল দিয়ে কান বন্ধ করুন। এখন নাক দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস নিতে হবে। নাক দিয়ে শ্বাস ছাড়ার সময় গলা হতে মৌমাছির মতো গুনগুন শব্দ করুন। মোটেও মুখ খুলবেন না, শব্দ হবে গলা থেকে। যতোক্ষণ পারবেন শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে অত্যন্ত ধীরে গুনগুন শব্দ করুন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org