দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নিয়মিত ৮ ঘণ্টা ঘুমিয়েও চোখের তলায় কালি পড়ছে! এর কারণ কী? এই বিষয়ে চিকিৎসকরা বলেছেন, ঘুম না হওয়া একটি কারণ বটে, তবে সেটিই কিন্তু সব নয়। ভালো করে ঘুমোনোর পরেও চোখের তলায় কালি পড়তে পারে।
“ভালো করে ঘুমোনোর চেষ্টা করো।” দিদির পরামর্শ মেনে সঠিক সময় বিছানায় যাওয়া, ঘড়ি ধরে ৮ ঘণ্টা ঘুমের অভ্যাস করে ফেলেছিল রিয়া। তবে, কোথায় কী! চোখের তলায় কালি তো যেনো সেই হলো! সদ্য কলেজে পা দিয়েছেন সে। পড়াশোনার চাপে ঘুমের একটু অনিয়ম হচ্ছে। রাত জেগে সিরিজ় দেখার অভ্যাস বদলেও কিছুই হচ্ছে না? আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ভাবছে রিয়া। চিকিৎসকরা বলেছেন, ঘুম না হওয়া একটা কারণ বটে, তবে সেটিই সব কিছু নয়। ভালো করে ঘুমোনোর পরেও চোখের তলায় কালি পড়তেই পারে। কী কী কারণে এমন ঘটতে পারে, সেটি জেনে নেওয়া যাক।
অবসাদ
তবে ঘুম কম হওয়া যেমন অবসাদের একটা লক্ষণ, তেমনি ঘুম বেশি হওয়ার পিছনেও কিন্তু রয়েছে অবসাদ। টানা ঘুমিয়েও বিছানা ছাড়তে ইচ্ছে করে না, অবসাদের জন্য এমনটি হওয়া অস্বাভাবিক বিষয় নয়। মনোবিদরা বলেছেন, ঘুমের অভাব কিংবা অতিরিক্ত ঘুমের কারণে ত্বক নিস্তেজ ও ফ্যাকাশে হয়ে যেতে পারে। ত্বকের নীচের রক্তনালী ও টিস্যুগুলো আরও দৃশ্যমান হয়ে ওঠে, যে কারণে ‘ডার্ক সার্কল’। চোখের নীচ ফোলা দেখায়, সেই কারণেই।
অ্যালার্জিজনিত সমস্যা
আবার অনেক সময় অ্যালার্জি থেকেও চোখের তলার চামড়ায় কালো ছোপ দাগ পড়তে পারে। চোখের আশপাশে চুলকোনোর অভ্যাসও রয়েছে অনেকেরই। নরম ও অপেক্ষাকৃত স্পর্শকাতর অংশে আঁচড়ের কারণে প্রদাহ হয় অনেক সময়। ফোলাভাবও দেখা যায়। যার ফলস্বরূপ, ‘ডার্ক সার্কল’।
বদভ্যাস
অনেক সময় মদ্যপান, ধূমপান, ভাজাভুজি খাওয়া থেকেও চোখের তলায় কালি পড়তে পারে। দৈনন্দিন যে বদভ্যাসগুলোতে অভ্যস্ত হয়েছেন, সেই সব বদভ্যাস না ছাড়লে চোখের তলার কালি থেকেও মুক্তি পাবেন না। সে যতোই বাজারচলতি দামি প্রসাধনী আপনি ব্যবহার করুন না কেনো।
ডিহাইড্রেশন
শরীরে পানির অভাব হলে চোখের তলার কালি তখন বেশি নজরে পড়ে। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খেয়ে শরীরকে আর্দ্র রাখতে পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। একইসঙ্গে রসালো ফল খেতে বলেন। সবুজ শাক-সব্জিও রাখতে হবে প্রতিদিনের ডায়েটে।
পুষ্টির অভাব
অনেক সময় ভিটামিন কে এবং ভিটামিন বি ১২-এর মতো কিছু ভিটামিনের ঘাটতির কারণেও চোখের নিচে কালো দাগ তৈরি হতে পারে। তাই প্রতিদিনের খাবার তালিকায় পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার, যেমন শাক-সব্জি, মাছ ও দুগ্ধজাত দ্রব্য রাখতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org