দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পুদিনা পাতার পানি খেলে কোনও সুফল পাওয়া যাবে না, সেটি একেবারেই নয়। মেদ ঝরানোর পাশাপাশি পুদিনা পাতার পানি আরও অনেক উপকার করতে পারে। কী কী উপকার সেটি আজ জেনে নিন।

পুদিনা পাতার চাটনিতে মাখানো চিকেন পকোড়া খেলে মন-প্রাণ যেনো জুড়িয়ে যায়। পুদিনার টক-মিষ্টি স্বাদে মন হারিয়ে যায় যেনো এক অচিন দেশে! পুদিনা যে শুধু স্বাদেই অতুলনীয় তা নয়, গুণেও পিছিয়ে নেই এই পাতাটি। ওজন ঝরাতে অনেকেই নিয়ম করে খান চিয়া বীজ ও পুদিনা পাতা ভেজানো পানি। তাই বলে শুধু পুদিনা পাতার পানি খেলে যে কোনও সুফল পাওয়া যাবে না, তা কিন্তু একেবারেই নয়। মেদ ঝরানোর পাশাপাশি পুদিনা পাতার পানি আরও অনেক উপকার করে থাকে। কী কী উপকার সেটি আজ জেনে নিন।
পুদিনা পাতার গুণাগুণ কী?
শরীর আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে
পুদিনা পাতা শরীরে পানির ঘাটতি তৈরি হতে দেয় না। তাই গরমে বেশি করে পুদিনা পাতা খাওয়াটা জরুরি। পুদিনা পাতার পানি এইক্ষেত্রে সেরা বিকল্প হতে পারে। শরবতেও দিতে পারেন পুদিনা পাতা। এ ছাড়াও পুদিনা দিয়ে তৈরি করতে পারেন পরোটা, ‘পুদিনা রাইস’ এতেও মন্দ লাগবে না খেতে।
হজমের গোলমাল ঠেকাতে পুদিনা পাতা
অনেকের রয়েছে হজমজনিত সমস্যা বা এটিকে বলা যায় জীবনেরই অঙ্গ। এই ধরনের সমস্যা হতে স্বস্তি পেতে ওষুধের বিকল্প হতেই পারে পুদিনা পাতা। পুদিনা পাতায় রয়েছে মেনথল-এর মতো উপাদানও। যা হজমশক্তি বৃদ্ধি করে থাকে। শুধু তা-ই নয়, পেটের অন্যান্য সমস্যার অবসান ঘটায় পুদিনা পাতা।
শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে পুদিনা পাতা
মানব দেহ রোগবালাইের সঙ্গে ল়ড়াই করার জন্যও চাই প্রতিরোধ শক্তি। পুদিনা পাতা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। পুদিনা পাতায় রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যা রোগের জীবাণুকে সহজেই শরীরে মাথা তুলে দাঁড়াতেই দেয় না। ধারাবাহিকভাবে যদি পুদিনা পাতার পানি খেতে পারেন, বহু উপকার পাবেন।
ত্বকের যত্নে পুদিনা পাতা
পুদিনা পাতা শুধু শরীরই নয়, ত্বকেরও যত্ন নেয় সমানভাবে। ত্বক আরও আর্দ্র রাখে। ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে দেয় না। ত্বক টানটান রাখতেও পুদিনা পাতার ভূমিকা রয়েছে। এই পাতায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট যা ত্বক সংক্রান্ত বেশ কিছু সমস্যার সমাধান করে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org