দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর চলমান হামলায় নিহতের প্রকৃত সংখ্যা ১ লাখ ৮৬ হাজারেরও বেশি। যুক্তরাজ্যভিত্তিক বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো গবেষণা এবং পিআর-রিভিউ সাময়িকী ল্যানসেট এই সমীক্ষাটি প্রকাশ করেছে।
গতকাল সোমবার (৮ জুলাই) ল্যানসেটের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ৩৮ হাজারের অধিক নিহতের সংখ্যা প্রচার করে আসছে। তবে ইসরায়েলি বাহিনীর গোলায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া ভবনগুলোর ধ্বংস্তূপের নিচে চাপা পড়া ও গাজায় গত ৯ মাসে খাদ্য এবং স্বাস্থ্যসেবার অভাবে মৃতদের হিসাব সেখানে ধরা হয়নি। এদেরকে ধরে হিসাব করলে মোট নিহতের সংখ্যা ১ লাখ ৮৬ হাজারেরও বেশি কিংবা প্রায় দু’লাখে পৌঁছাবে।
ল্যানসেটের প্রবন্ধে আরও বলা হয়, যুদ্ধ বাঁধলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা এবং স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা। যে কারণে যুদ্ধের সময় যারা গুলি কিংবা গোলার আঘাতে সরাসরি নিহত হন, তাদের তুলনায় খাদ্য এবং স্বাস্থ্যসেবার অভাবে মৃতের সংখ্যায় থাকে বেশি।
প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, আধুনিক যুগের যুদ্ধ-সংঘাতে গুলি কিংবা গোলার আঘাতে যতো মানুষ সরাসরি নিহত হচ্ছে, পরোক্ষভাবে নিহত হচ্ছে তার চেয়েও তিনগুণ কিংবা ১৫ গুণ বেশি মানুষ। একটি অতি সাধারণ স্বীকৃত সিদ্ধান্ত হলো- প্রতি একজন সরাসরি নিহতের সঙ্গে পরোক্ষ নিহতের সংখ্যা থাকে অন্তত আরও ৪ জন। আমরা এই হিসাব এখানে প্রয়োগ করেছি।
যদিও গত ৯ মাসে ইসরাইলির সামরিক অভিযানে গাজায় যে ধ্বংসযজ্ঞ করা হয়েছে, তবে এই মুহূর্তে যদি যুদ্ধ বন্ধও হয়- তাহলেও আরও বেশ কিছুদিন উপত্যকাটিতে মৃত্যুর মিছিল অব্যাহতই থাকবে।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধে প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির সঠিক হিসাব এবং যুদ্ধে অংশ নেওয়া পক্ষগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হলে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা জানাটা জরুরি। আইনগতভাবেও এটি জানার তাৎপর্য রয়েছে বলে উল্লেখ করেছে ল্যানসেট। তথ্যসূত্র: আলজাজিরা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org