দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমান প্রযুক্তিনির্ভর এই যুগে ব্যবহারকারীর তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষা করে এমন কার্যকর ব্রাউজার খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন বলা যায়। তবে এমন কিছু সার্চ ইঞ্জিন রয়েছে, যা তথ্য সংরক্ষণ না করে সঠিক ফল দিতে চেষ্টা করে থাকে। ব্যবহারকারীর সুবিধার্থে মেক ইউজ অব ওয়েবসাইটে এমন ৭টি প্রাইভেট সার্চ ইঞ্জিনের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
ডাকডাকগো
বিশেষ করে যারা ইন্টারনেটে অনুসন্ধান করার সময় তাদের গোপনীয়তা অক্ষুন্ন রাখতে চান, তাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সার্চ ইঞ্জিন ডাকডাকগো হতে পারে অন্যতম একটি পছন্দ। এই সার্চ ইঞ্জিন কোনো ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষণ এবং বিক্রি করে না। কিন্তু সরকার থেকে যদি কোনো তথ্য চাওয়া হয়, সেইক্ষেত্রে ডাকডাকগো সম্মতি দেয়। যেহেতু এই সার্চ ইঞ্জিনটি তথ্য বিক্রি করে না, তাই ব্যবহারকারীকে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে এটি বিকল্প উপায়ে আয় করে।
স্টার্টপেজ
নেদারল্যান্ডসভিত্তিক এই সার্চ ইঞ্জিন স্টার্টপেজ গুগলের মতোই কাজ করে থাকে। যদি ডাকডাকগোর সার্চ রেজাল্ট আশানুরূপ নাও হয়, সেই ক্ষেত্রে স্টার্টপেজ ব্যবহার করা যায়। এই সার্চ ইঞ্জিনটি গুগলকে পে করার মাধ্যমে তাদের সার্চ রেজাল্টগুলোই কেবল দেখায়। তবে এটি ব্যবহারকারীর কোনো তথ্য সংরক্ষণ করে না।
স্টার্টপেজ সার্চ রিকমেন্ডেশনের ক্ষেত্রেও অনেক যত্নশীল। সাধারণ একটি সার্চ ইঞ্জিনে অন্যরা কী সার্চ করছেন তার ওপর ভিত্তি করেই ব্যবহারকারীর অনুসন্ধানের বিষয়ে সুপারিশ করে থাকে। এর জন্য সার্চ ইঞ্জিনের প্রয়োজন হয় ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ, যা স্টার্টপেজ কখনও সমর্থন করে না।
মেটাজার
মূলত এটি একটি জার্মানভিত্তিক প্রাইভেসি-ফোকাসড সার্চ ইঞ্জিন। ওয়েবসাইট পরিদর্শনের সময় এটি ব্যবহারকারীর অবস্থান-সংক্রান্ত কোনো তথ্য প্রকাশ করে না। মেটাজার সার্চ রেজাল্টের জন্য স্কোপিয়া ও বিং সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করে এটি।
কোয়ান্ট
কোয়ান্ট হলো ফরাসিভিত্তিক সার্চ ইঞ্জিন। যা বেশকিছু ফিচার নিয়ে তৈরি করা হয়েছে। তবে কিছু ফিচার ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীর অবস্থান কিংবা ব্যক্তিগত বিবরণ প্রয়োজন হয়। যারা সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহারের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গোপনীয়তাকে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন তাদের জন্য অবশ্য এই সার্চ ইঞ্জিন আদর্শ নয়।
মজিক
এই পর্যন্ত যেসব সার্চ ইঞ্জিন নিয়ে কথা হলো—এগুলোর বেশিরভাগই সার্চ রেজাল্টের জন্য অন্য সার্চ ইঞ্জিনের ওপরে নির্ভরশীল। তবে মজিক এই ক্ষেত্রে একেবারেই ভিন্ন। যুক্তরাজ্যভিত্তিক মজিক অন্য কারও সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করার পরিবর্তে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা নিশ্চিত করতে তাদের নিজস্ব তথ্য ব্যবহার করে থাকে। তবে এই ক্ষেত্রে আপনি যে সার্চ রেজাল্ট পাবেন তা নিখুঁত হয়তো নাও হতে পারে।
কাগি
গুগলের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যাবে এই অ্যাপ কাগি। তবে এটি ব্যবহারের জন্য একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হয়, এখানে বিনামূল্যে ১০০টি সার্চ করা যাবে। ৩০০টি সার্চের জন্য মাসে ৫ ডলার ও আনলিমিটেড সার্চের জন্য ১০ ডলার দিতে হয়।
সুইসকাউস
নামটা কিছুটা উদ্ভট হলেও এই সার্চ ইঞ্জিনটি ব্যবহারকারীর তথ্য গোপনীয়তার বিষয়টি বেশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখে। মালিক পক্ষের দাবি হলো, তারা এই সার্চ ইঞ্জিন এমনভাবে ডিজাইন করেছেন যাতে তাদের পক্ষে ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব না।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org