দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ছাত্র-গণআন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই বিভিন্ন দেশে হাসিনার রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছিল, তিনি নাকি যুক্তরাজ্যে আশ্রয় চেয়েছিলেন।
তবে এই বিষয়ে যুক্তরাজ্য সরকারের পক্ষ হতে এখনও কিছু জানানো হয়নি। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ সংসদসদস্য রুপা হক শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য স্ট্যান্ডার্ডে একটি নিবন্ধ লেখেন। সেখানে তিনি ব্যক্তিগতভাবে শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার পক্ষপাতী নন বলে জানিয়েছেন।
লেবার পার্টির সংসদ সদস্য রুপা হক হাসিনার পদত্যাগকে ইরাকের সাদ্দাম হোসেনের ক্ষমতাচ্যুতির সঙ্গে তুলনা করেন। তিনি লিখেছেন, ইরাকে সাদ্দাম হোসেনকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর যেমন চিত্র দেখা যায়; হাসিনার ক্ষেত্রেও ঢাকা শহরে একই চিত্র দেখা যায়। জাতির পিতার ভাষ্কর্য ভেঙ্গে ফেলা হয়; কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়েছে।
রুপা হক বলেন, টাওয়ার হ্যামলেটসও এর আঁচ থেকে বাদ যায়নি। চীনের তিয়েনআনমেন স্কয়ারের সঙ্গে হাসিনার পতনকে তুলনা করে রুপা হক বলেছেন, জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনা স্বাধীনতার পর সবচেয়ে বেশি সময় ধরে বাংলাদেশকে স্বৈরতান্ত্রিকভাবে শাসন করেন। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে গণতন্ত্রপন্থি শিক্ষার্থীদের এক আন্দোলন শুরু হয়। ক্রমেই তা দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে গোটা দেশজুড়ে।
রুপা আরও লিখেছেন, আন্দোলনের সময় ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছিল যাতে করে বর্হিবিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ বাধাগ্রস্ত করা যায়। কিভাবে গুলি করে শত শত মানুষকে মেরে ফেলেছে হাসিনা সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এক পর্যায়ে ক্ষমতা হতে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। রুপা হক লিখেছেন, হাসিনার পতনের পর যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশিরা পূর্ব লন্ডনের রাস্তায় নেমে আসে। তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পাওয়া একজন প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতাচ্যুতিতে উল্লাসও করছিল।
একজন বৃটিশ বাংলাদেশী এমপি হিসেবে বাংলাদেশের এই ইস্যুতে অনলাইনে অনেক প্রশ্নের মুখোমুখি হন বলে জানান রুপা। তিনি বলেছেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি তার মতো একজন অ-জনপ্রিয় ও অভিবাসন নিয়ে রাজনৈতিক সংবেদনশীলতার কারণে এমন একজন হাই প্রোফাইল আশ্রয়প্রার্থীকে যুক্তরাজ্যে আশ্রয় দেওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। এছাড়াও অনেক বাংলাদেশিও মনে করেন, তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে তাকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org