দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বয়সকালে সুস্থ, তরতাজা থাকার জন্য জীবনযাপনে নিয়ন্ত্রণে রাখাটা প্রয়োজন। দৈনন্দিন কয়েকটি অভ্যাসই হয়ে উঠতে পারে ভালো থাকার চাবিকাঠি।
বয়স যখন ৫০। তবে একই বয়সের বিভিন্ন মানুষকে এক এক রকম লাগে। কাওকে দেখলে মনে হবে, যেনো বুড়িয়ে গেছেন। কেওবা আবার দিব্যি শক্তপোক্তই রয়েছেন। কারও মুখে বলিরেখা, আবার কারও ত্বকে দেখা যায় লাবণ্যের ছোঁয়া। বয়স হলে তার ছাপ চোখ-মুখে পড়বে সেটিই স্বাভাবিক। তবু একই বয়সের বিভিন্ন মানুষের মধ্যে তফাত কিন্তু স্পষ্ট হয়ে ওঠে অনেক সময়।
এর নানা ধরনের কারণও থাকতে পারে। শরীরিক অসুস্থতা কিংবা পুষ্টির অভাব। আবার ত্বকের পরিচর্যা না করলেও অনেক সময় তার প্রভাব পড়ে চোখমুখে। তবে দৈনন্দিন কয়েকটি সু-অভ্যাস যে কোনও মানুষকেই দীর্ঘদিন সুস্থ রাখতেও সাহায্য করে। শারীরিক ও মানসিক সুস্থতারই প্রতিফলন ঘটে চেহারার মধ্যে।
নিজের যত্ন নেওয়া
শরীর, মন, ত্বকের যত্ন নেওয়া খুবই জরুরি একটি কাজ। শুধু শরীর ভালো রাখলেই চলবে না, মনকেও সুস্থ রাখা দরকার। অবসাদ-উদ্বেগ শরীরের পক্ষে বেশ ক্ষতিকর। আবার শরীরেও এর প্রভাব পড়ে। আবার তাতে খুশির ছাপও মুখে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তাই বয়সকালেও নিজেকে তরতাজা রাখতে হলে নিজের যত্ন, ভালো থাকা খুবই জরুরি। তবে এক, দু’দিন নয়, এই অভ্যাস দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে গেলে তবেই সুফল পাওয়া যাবে। নিয়মিত শরীরচর্চার পাশাপাশি প্রাণায়াম মন শান্ত করতেও সহায়ক। এতে ত্বকের উপরে ইতিবাচক প্রভাবও পড়ে।
সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি
সানস্ক্রিন ঠিক কতোটা প্রয়োজনীয়, তা অনেকেই তা বুঝতেও পারেন না। তরুণ প্রজন্ম এই নিয়ে সচেতন হলেও, একটু যাদের বয়স বেড়েছে, তারা অনেকেই বিষয়টি নিয়ে মাথাও ঘামান না। তবে সূর্যের অতিবেগনি রশ্মি ত্বকের মারাত্মক ক্ষতিও করতে পারে। কালচে ছোপ, শুষ্কতা, কম বয়সে বলিরেখা পড়ার অন্যতম কারণও হতে পারে সূর্যের ক্ষতিকারক এই রশ্মি। রোদে বের হওয়ার আগে তাই নিয়ম করে সানস্ক্রিন মাখাটা প্রয়োজন।
পুষ্টিকর এবং পরিমিত আহার
পুষ্টিকর এবং পরিমিত খাদ্যগ্রহণ সুস্থ থাকার অন্যতম চাবিকাঠি সেটি আমরা অনেকেই জানি। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ খাবার বার্ধক্য দূরে রাখতেও সাহায্য করে। ত্বকের লাবণ্য ধরে রাখতে ভিটামিন সি এবং ই-এর বিশেষ ভূমিকাও থাকে। শরীর, মন, ত্বক এবং চুল ভালো রাখতে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট এবং ফ্যাটের সঠিক সমন্বয় দরকার। সুষম আহার ও বাইরের ভাজাভুজি বাদ দিলে বয়সকালেও ভালো থাকা সম্ভব।
পর্যাপ্ত পানি পান এবং ঘুম
বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খাওয়া জরুরি। পানির অভাবে ত্বকও শুষ্ক হয়ে পড়তে পারে। শুষ্ক ত্বকে দ্রুত বলিরেখাও পড়ে। সেইসঙ্গে প্রয়োজন পরিমিত ঘুম। শরীর সুস্থ রাখতে ঘুমের বিকল্প নেই। ওজন কমাতে, বিপাকহার বৃদ্ধিতে ঘুমের বিশেষ ভূমিকাও রয়েছে। দু’দিন ঠিকমতো ঘুম না হলে অনেকের চোখের নীচেই কালি পড়ে। তাই এই দুটি যাতে ঠিক থাকে, সেটি দেখা দরকার।
ত্বক এবং চুলের যত্ন
বয়স হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ত্বক শিথিল হয়ে পড়ে, তখন বলিরেখাও দেখা দেয়। এটি এড়ানোর জন্য পুষ্টিকর খাদ্যগ্রহণ যেমন জরুরি, তেমনি দরকার ত্বক এবং চুলের পরিচর্যা। নিয়মিত ত্বক এবং চুলের যত্ন নিলে চট করে বার্ধক্যের ছাপ চোখমুখে পড়বে না। ত্বকে কিংবা চুলে সমস্যা দেখা দিলে তারও দ্রুত সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org