দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাধারণ অসুখের লক্ষণ সহজেই বোঝা না গেলেও লিভারের অসুখের লক্ষণ খুব সহজেই চোখে পড়ে। তারপরও সচেতনতার অভাবে তা অবহেলিত হয়। তাই লিভার ডিজ়িজ়ের উপসর্গ সম্পর্কে জেনে নিন।
লিভার শরীরের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। আপনি জানলে অবাক হবেন যে, হজমে সাহায্য করা, দেহ হতে টক্সিন বের করে দেওয়া, বিপাক হার নিয়ন্ত্রণসহ বহু কাজ করে এই অঙ্গটি। তাই সুস্থ থাকতে চাইলে অবশ্যই এই অঙ্গের স্বাস্থ্যের দিকে নজর ফেরাতে হবে।
তবে আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা এবং খাদ্যাভ্যাসের ভুলভ্রান্তির কারণেই লিভারের হাল বেহাল হয়ে যাচ্ছে। আর তখন এই অঙ্গের পিছু নিচ্ছে জটিল অসুখ। তবে মুশকিলের বিষয় হলো, বেশির ভাগ মানুষই লিভারের অসুখের প্রাথমিক লক্ষণগুলো একেবারেই অবহেলা করেন। যে কারণে বাড়ে বিপদ। আর তাই পরিস্থিতি আরও জটিল দিকে মোড় নেয়। তাই সুস্থ থাকতে ঝটপট লিভারের অসুখের লক্ষণ সম্পর্কে জেনে নেওয়া দরকার।
ত্বক-চোখ হলুদ হয়ে যেতে পারে
লিভার ঠিকমতো কাজ না করলে অনেক সময় শরীরে বিলিরুবিনের পরিমাণ বেড়ে যায়। যে কারণে ত্বক ও চোখ হলুদ হয়ে পড়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। তাই এই ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হতে হবে।
ফোলা ফোলা ভাব
বিশেষজ্ঞদের ভাষায়, লিভারের হাল বেহাল হয়ে পড়লে শরীরে পানি জমে যেতে পারে। যে কারণে চোখ, মুখ, পা ও পেট ফুলে যায় অনেক সময়।
খিদে একেবারে উবে যাবে
আপনার কী হঠাৎ করে খুব খিদে কমে গিয়েছে? আগে যে খাবারগুলো খেতেন, তা আপনার মুখে তুলতে ইচ্ছে করে না? সেই ক্ষেত্রে ঝটপট একবার চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন। কারণ হলো, এর পিছনে কিন্তু লিভারের অসুখের ইঙ্গিত থাকলেও থাকতে পারে।
কমে যাবে ওজন
লিভার ঠিকমতো কাজ না করলে এক ধাক্কায় অনেকটা ওজন কমে যেতে পারে। ব্যক্তির চেহারায় হুট করে আসে বিরাট একটা বদল।
আরও যা হতে পারে
# চুলকানি হওয়া
# গাঢ় রঙের প্রস্রাব হওয়া
# ফ্যাকাসে মল
# অল্পতেই রক্তপাত
# শ্বাসকষ্ট
# রাতে ঘুম না আসা ইত্যাদি।
যে কোনও উপসর্গ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন।
# তথ্যসূত্র: এই সময়
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org