দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ডিসেম্বরে ‘ইটার্নাল ইউ’ নামে একটি তথ্যচিত্র মুক্তি পায়। এতে মৃত ব্যক্তির সঙ্গে এআই-এর মাধ্যমে যোগাযোগের সম্ভাবনা এবং তার প্রতিক্রিয়ার বিষয়টি তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়।

ইতিমধ্যেই এমন অভিজ্ঞতা নেওয়া ব্যক্তিরা কথা বলেছেন এই তথ্যচিত্র সম্পর্কে। একজন মৃত ব্যক্তির মতো কাওকে সৃষ্টি করার রীতিমতো প্রতিযোগিতায় নেমেছে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো। এআই এবং ডিপফেক প্রযুক্তির কারণে এগুলো প্রায় বাস্তবের মতোই হয়ে উঠছে। চীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শোক প্রযুক্তি ইতিমধ্যেই বেশ জনপ্রিয়তাও পেয়েছে।
মার্কিন নাগরিক ক্রিস্টি অ্যাঞ্জেলও ঠিক এভাবেই তার মৃত প্রেমিকের সঙ্গে কথা বলেছেন! তার আগে তার প্রেমিকার কিছু ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে বটকে প্রশিক্ষণ দিতে হয়। কথা বলার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি জানিয়েছেন, অভিজ্ঞতাটা আসলেও ভয়ংকর ছিল। কিছু জিনিস ছিল যা আমাকে ভয় পাইয়ে দেয় ও এমন অনেককিছু বলা হয়েছিল যা আমি শুনতেই চাইনি, জানিয়েছেন তিনি।
ইটার্নাল ইউ নামক তথ্যচিত্রটি নির্মাণ করেন দুই জার্মান পরিচালক। তাদের একজন মরিৎস রিজেভিক এই বিষয়ে বলেছেন, মানুষ সবসময় মানুষ হওয়ার ভান করে এমন যন্ত্রের সঙ্গে কথা বলার প্রভাবকেই অবমূল্যায়ন করে। একজন মৃত ব্যক্তির ডেটা সেট হতে কিছু অংশ বাছাই করেই এআই তা মানুষের সামনে তুলে ধরে। যেমন আপনি হয়তো একসঙ্গে শুনেছেন এমন গান বা একসঙ্গে দেখেছেন এমন সিনেমার কথাও বলে।
যদিও এই ধরনের এআই-এর মনস্তাত্ত্বিক পরিণতি নিয়ে এখনও গবেষণা হয়নি। সেই কারণে সমাজবিজ্ঞানী মাটিয়াস মাইৎসলার জানতে চান যে, এটি মূলত কীভাবে শোককে প্রভাবিত করে।
মাইৎসলার বলেছেন, আপনি হয়তো জানেনই না, অবতার পরবর্তীতে আসলে কী বলবে, বা এটি কীভাবে অরিজিনাল ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করবে। এটি কী মৃত ব্যক্তি সম্পর্কে মিথ্যা বলবে, হয়তো তাদের নিয়ে আপনার স্মৃতিগুলোও বিকৃত করবে? ম্যানিপুলেশন? কারণ হলো, একজনকে তো ওই অবতারকে কনফিগার করতে হবে। এখানে কী স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে? এটা যদি হয় একটা কোম্পানি যার অর্থনৈতিক উদ্দেশ্যও রয়েছে, তাহলে শোকের ক্ষেত্রে এটি উপকারী হয়তো নাও হতে পারে।
ভবিষ্যতে হয়তো ডিজিটাল অবতার আমাদের বিদায় বলতে বা স্মরণ করতেও সহায়তা করতে পারে। তবে নিশ্চিতভাবেই এটি এআই এর মান ও আপনি কীভাবে কাজে লাগাচ্ছেন তার উপরেই নির্ভর করে। তবে এই ধরনের অবতারের উপর খুব বেশি ভরসা করার বিপদ সম্পর্কে সতর্ক থাকারও পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তথ্যসূত্র: ডয়েচে ভেলে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org