দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রতিদিনই বিশ্বের কোনো না কোনো স্থানে নানা মাত্রায় ভূমিকম্প হয়ে থাকে। তবে সাধারণত ভূমিকম্পের নির্ভুল সতর্কবার্তা আগাম পাওয়া যায় না।
ভূপৃষ্ঠের কম্পন পর্যালোচনা করে ভূমিকম্প হওয়ার সময় সতর্কবার্তা পাঠিয়ে থাকে গুগলের আর্থকোয়েক অ্যালার্ট সিস্টেমসহ বেশ কিছু অ্যাপ। এই সুবিধা বিভিন্ন দেশের ব্যবহারকারীরাই পেয়ে থাকেন। যার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশও।
গুগলের আর্থকোয়েক অ্যালার্ট সিস্টেম
গুগলের এই সুবিধাটি পেতে তেমন কোন ঝালেমা পোহাতে হবে না। আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনের ভূমিকম্প সতর্কতা কিংবা আর্থকোয়েক অ্যালার্ট ফিচারটি চালু করে নিলে হয়ে যাবে। তারজন্য কোনও টাকাও খরচ করতে হবে না।
ভূমিকম্পের সময় স্থানীয় অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের সতর্ক করতে প্রথম ২০২০ সালে আর্থকোয়েক অ্যালার্ট সিস্টেম চালু করে গুগল। আর্থকোয়েক অ্যালার্ট সিস্টেমটি মূলত ভূপৃষ্ঠের কম্পন পর্যালোচনা করে ভূমিকম্পের সতর্কবার্তাও পাঠায়। ভূমিকম্পের উৎস এবং মাত্রা সম্পর্কে জানানোর পাশাপাশি নিরাপদ থাকার পরামর্শ দিয়ে থাকে। আর্থকোয়েক অ্যালার্ট সিস্টেম কাজে লাগিয়ে চাইলে ভূমিকম্পের বিস্তারিত তথ্য জানা সম্ভব। ভূমিকম্প সতর্কতা চালুর জন্য প্রথমেই স্মার্টফোনের সেটিংসে প্রবেশ করে ‘সেফটি অ্যান্ড ইমার্জেন্সি’ অপশন হতে ‘আর্থকোয়েক অ্যালার্টস’ নির্বাচন করতে হবে। তারপর পরবর্তী পৃষ্ঠা হতে আর্থকোয়েক অ্যালার্টস টগলটিও চালু করতে হবে।
ভূমিকম্প অ্যালার্ট ফিচার চালু করবেন কীভাবে?
আপনার স্মার্টফোনে এই অ্যালার্টটি ইতিমধ্যে চালু রয়েছে কিনা তা দেখার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন:
Settings > Location > Advanced > Earthquake Alerts.
Earthquake Alerts যদি অফ থাকে তাহলে এটি অন করে দিন।
অ্যালার্ট সিস্টেমটি চালু হলে স্মার্টফোনে ভূমিকম্পের আপডেটও আসতে থাকবে।
যদি আপনি এই নোটিফিকেশন না চান তাহলে ফিচারটি আপনি অফ করেও রাখতে পারেন।
মাই আর্থকোয়েক
মাই আর্থকোয়েক অ্যালার্টস একটি ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ অ্যাপ। এই অ্যাপের মাধ্যমে ভূমিকম্প সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় বিভিন্ন তথ্য জানা যায়। বিশ্বজুড়ে ভূমিকম্প শনাক্ত করতে সক্ষম অ্যাপটি এই ঠিকানা থেকে নামিয়ে বিনা মূল্যে ব্যবহার করা যাবে।
আর্থকোয়েক নেটওয়ার্ক
ভূমিকম্পের সতর্কবার্তা জানাতে সক্ষম আরেকটি অ্যাপ হলো আর্থকোয়েক নেটওয়ার্ক। ভূপৃষ্ঠের কম্পন পর্যালোচনা করে ভূমিকম্পের আগাম সতর্ক দেওয়ার দাবি করলে এই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো প্রমাণও পাওয়া যায়নি। অ্যাপটি মূলত ভূমিকম্পের কেন্দ্রের তথ্য বিশ্লেষণ করেই আশপাশের এলাকায় বসবাসকারীদের সতর্ক বার্তা পাঠিয়ে থাকে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org