দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা অনেকেই জানি হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পিছনে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দায়ী থাকে উচ্চ রক্তচাপ। উচ্চ রক্তচাপ কিংবা হাইপারটেনশন মূলত নীরব ঘাতক।

এটি ধীরে ধীরে দেহে বিভিন্ন অঙ্গের উপর প্রভাব ফেলে ও হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোকের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দেয়। ব্লাড প্রেশারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে গিয়ে প্রতিদিন ওষুধ খেতেই হবে। সেইসঙ্গে নিয়ম করে হাঁটতেও হবে। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের মতে, সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট হাঁটলে প্রেশার নিয়ন্ত্রণে থাকে। আবার নজর দিতে হবে ডায়েটে।
হার্ভার্ড ও স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিপ্রাপ্ত গ্যাস্ট্রোএনট্রোলজিস্ট সৌরভ শেঠি তার ইনস্টাগ্রামে কয়েকটি খাবারের কথাও উল্লেখ করেছেন, যা প্রেশারের রোগীদের জন্যও উপকারী। ওইসব খাবারগুলো নিয়মিত খেলে উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা সুস্থ জীবন করতে পারবেন। কী কী সেইসব খাবার, সেটি আজ জেনে নেওয়া যাক।
কলা
কলার মধ্যে পাওয়া যায় উচ্চ পরিমাণে পটাশিয়াম, যা মূলত উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। ডাঃ শেঠি জানিয়েছেন যে, কলায় থাকা পটাশিয়াম শরীর থেকে অতিরিক্ত সোডিয়ামকে মূলত বাইরে বের করে দেয়। এতে প্রেশারও নিয়ন্ত্রণে থাকে। কলার স্মুদি অথবা স্ন্যাকস হিসেবে কলাকেও প্রতিদিনের ডায়েটে রাখতে পারেন।
ডার্ক চকোলেট
ডাঃ শেঠির মনে করেন, ডার্ক চকোলেট খেয়েও রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। ডার্ক চকোলেটের মধ্যে ম্যাগনেশিয়াম এবং ফ্ল্যাভনল রয়েছে, যা রক্তনালিকে শিথিল রাখতে সাহায্য করে থাকে। ৭০% কোকো সমৃদ্ধ ডার্ক চকোলেট হাইপারটেনশন রোগীদের জন্যও উপযোগী।
বিটরুট
এই সব্জিটি খেলে উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের মধ্যে হৃদরোগের ঝুঁকিও কমবে। বিটে নাইট্রেট থাকে, যা দেহে নাইট্রিক অক্সাইডে রূপান্তর হয়ে যায়। এটি রক্তনালিকে প্রসারিত করে ও রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে। এতে রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে রাখে। বিটরুটের জুস কিংবা স্যালাদ বানিয়েও খেতে পারেন।
বেদানা
এই ফলের মধ্যে পলিফেনল নামে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে। কার্ডিওভাস্কুলার স্বাস্থ্যের জন্য উপযোগী বেদানা। নিয়মিত এই ফলটি খেলে একাধিক রোগের ঝুঁকি কমানো যাবে।
আদা
বাঙালির রান্নায় এই উপাদান নিয়মিত ব্যবহার হয়ে থাকে। আদার মধ্যে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানও রয়েছে। এটি রক্তচাপ কমায় ও কার্ডিওভাস্কুলার রোগের ঝুঁকিও কমায়। চা, স্মুদি কিংবা ঝালে-ঝোলে আদা মিশিয়েও খেতে পারেন। এতে পেটের গণ্ডগোল থেকে মুক্তি পাবেন। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org