দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মেগাস্টার শাকিব খানের ‘তাণ্ডব’ এর দাপটে যখন প্রেক্ষাগৃহগুলোতে উপচে পড়া ভীড়, তখনই অনলাইনে ছড়িয়ে পড়লো এই সিনেমাটির পাইরেটেড এইচডি সংস্করণ (১০৮০)।

গত কয়েকদিন হতেই বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পাওয়া যাচ্ছে সিনেমাটির সম্পূর্ণ কপি, যা নির্মাতাদের জন্য বড় ধরনের একটি ধাক্কা। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের বারবার সতর্কতা এবং অনুরোধ সত্ত্বেও এবারও থামানো যায়নি পাইরেসি।
শুক্রবার রাত হতেই টেলিগ্রামের বিভিন্ন চ্যানেলে ঘুরে বেড়াচ্ছে সিনেমাটির ঝকঝকে প্রিন্ট। তারপর ছড়িয়ে পড়েছে ইউটিউব এবং বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। পরে অবশ্য ইউটিউব থেকে সিনেমাটি সরিয়ে নিলেও এখনও সিনেমার পাইরেটেড ভার্সন পাওয়া যাচ্ছে টেলিগ্রাম এবং বিভিন্ন ওয়েবসাইটে।
‘তাণ্ডব’ টিম ইতিমধ্যেই পাইরেসি রোধে কাজ করছে বলেও জানিয়েছেন আলফা আইয়ের কর্ণধার শাহরিয়ার শাকিল। যারা এই পাইরেসির সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন তিনি।
গতকাল (শনিবার) হল ভিজিটে গিয়ে প্রযোজক শাহরিয়ার শাকিল বলেছেন, ‘পাইরেসি নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন দেশে যে ধরনের এজেন্সি নিয়োগ করা হয়, আমরাও সেই এজেন্সি নিয়োগ করেছি প্রথম থেকেই। তাদের মাধ্যমে আমরা পাইরেসির বিষয়টি ভালোভাবেই কন্ট্রোল করছি। যেসব পেজ থেকে তাণ্ডবের লিংক শেয়ার হচ্ছে, সেগুলো সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। যারা এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত, তাদের একবিন্দুও ছাড় দেওয়া হবে না।’
তবে পাইরেসির এই ঘটনাটি তাণ্ডব এর ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না বলেও মত এই প্রযোজকের।
এই বিষয়ে একটি সংবাদ মাধ্যমকে শাকিল খান বলেন, ‘পৃথিবীতে যতো বড় বড় সিনেমা হয়েছে, প্রায় সবই পাইরেসির শিকার হয়ে থাকে। এর আগে আমাদের তুফান’ও পাইরেসির কবলে পড়েছিল। তবে সিনেমা যে বড় স্ক্রিনে দেখার বিষয়টি, সেটি দর্শক ভালো করেই জানে। হলে সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতা অন্য কিছুর সঙ্গে মোটেও মেলানো যাবে না। একটা সময় সিনেমাটি ওটিটিতেও আসবে। তাই বলে দর্শক হলে আসবে না, এমনটি নয়। আগামী কয়েকদিনের বেশিরভাগই টিকিট অগ্রিম বিক্রি হয়ে গেছে।’
রায়হান রাফী পরিচালিত ‘তাণ্ডব’ মুক্তির প্রথম দিন হতেই ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। একদিকে যেমন সিঙ্গেল স্ক্রিনে দর্শকের ভিড়, অপরদিকে মাল্টিপ্লেক্সেও হাউসফুল শো যাচ্ছে। বাণিজ্যিক সিনেমার সব উপাদান থাকার কারণে ‘তাণ্ডব’ দ্রুতই দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছে।
তবে এর মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে থাকে সিনেমাটির দৃশ্য। ফেসবুকের নানা গ্রুপ এবং পেজে দেখা যায় পূর্ণদৈর্ঘ্য বা অংশবিশেষের এইচডি ফুটেজ। সাম্প্রতিক সময় এটি বিদেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। যে কারণে কেও কেও দাবি করেছেন যে, দেশের বাইরে থেকে এই সিনেমাটি ফাঁস হয়েছে। কারণ এটি বাংলাদেশে মুক্তির আগে থেকেই অনলাইনে নাকি ছিলো। তবে বর্তমানে অনলাইনে যে কপিটি দেখা যাচ্ছে সেটিতে বাংলাদেশের পতাকা প্রদর্শিত হতে দেখা গেছে। যে কারণে এটি নিশ্চিত যে বাংলাদেশেরই কোনো একটি সিনেমা হল থেকে এটি পাইরেসি হয়েছে। আর এই পাইরেসির কারণে বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময় ভালো সিনেমা বানাতে অনিহা দেখাচ্ছেন প্রযোজকরা। দেশের চলচ্চিত্র এখন প্রায় বন্ধের উপক্রম হয়েছে। মানুষের মধ্যে এই বিষয়ে সচেবতনা দরকার। দেশের চলচ্চিত্রকে টিকিয়ে রাখতে হলে এইসব পাইরেসি অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।
তবে পাইরেসি সম্পর্কে যোগাযোগ করা হলে পরিচালক রায়হান রাফী এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি গণমাধ্যমের সঙ্গে।
‘তাণ্ডব’ রায়হান রাফীর পরিচালনায় সপ্তম চলচ্চিত্র এবং শাকিব খানের সঙ্গে তার দ্বিতীয় সিনেমা। ইতিপূর্বে তাদের একসঙ্গে দেখা যায় ‘তুফান’ সিনেমায়, যা প্রশংসিত হয়েছিল সমালোচক এবং দর্শক উভয়ের কাছে।
শাকিব খান ছাড়াও ‘তাণ্ডব’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন জয়া আহসান, সিয়াম আহমেদ, আফরান নিশো, আফজাল হোসেন, সাবিলা নূর, রোজী সিদ্দিকী, ডা. এজাজ, ফজলুর রহমান বাবু, এফএস নাঈম, কাজী রাকায়েতসহ আরও অনেকেই।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org