দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বয়স্ক মানুষদের সেবা দিতে ‘বুদ্ধিমান’ রোবট নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে চীন।

দেশটির শিল্প ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এক ঘোষণায় জানিয়েছে যে, চীনে ক্রমাগত বয়স্ক মানুষের সংখ্যা দিনকে দিন বাড়ছে। তবে বয়স্ক সেবাপ্রদানকারীর সংখ্যা কম, এতে পরিবারগুলোকে অতিরিক্ত চাপের মুখোমুখিও হতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে রোবট কতোটা সহায়ক হতে পারে তা দেখতে চায় চীন সরকার। সেজন্য তারা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আহ্বানও জানিয়েছে।
দেশটির শিল্প ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় চাইছে যে, প্রতিষ্ঠানগুলো যেনো অন্তত ২০০টি রোবট তৈরি করে, রোবটগুলো তারা ২০টি ভিন্ন ভিন্ন স্থানে পরীক্ষা করবে। আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বয়স্কদের সেবা প্রদানের অভিজ্ঞতা, আর্থিক, পরিবেশগত ও নিরাপত্তাসংক্রান্ত রেকর্ডও ভালো হতে হবে। সফল আবেদনকারীদের দুই বছরের মধ্যে পরীক্ষার ফলাফল জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশনাও দেবে মন্ত্রণালয়।
তা ছাড়াও একটি পৃথক নথিতে চীনের মন্ত্রণালয় ওই পরিস্থিতিগুলো উল্লেখ করেছে, যেখানে রোবটগুলোকে দক্ষতার পরিচয়ও দিতে হবে। যেমন- রান্না ও ঘর পরিষ্কার করা, বয়স্কদের হাঁটতে সহযোগিতা করা, যাতে করে তারা পড়ে না যায় ও প্রয়োজনে বয়স্কদের তুলে দাঁড় করানোর ক্ষমতা থাকবে।
তা ছাড়াও, বয়স্কদের শৌচাগারে যেতে সাহায্য করতে ও নিজে খেতে অক্ষম এমন ব্যক্তিদের খাওয়াতেও সাহায্য করতে পারবে রোবটগুলো।
চীন চাইছে যে, এমন কিছু রোবট তৈরি করতে, যা প্রাথমিক স্তরের ডিমেনশিয়া শনাক্ত করতে পারে ও যারা ইতিমধ্যেই ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত, তাদের জন্য ‘বাড়ির বাইরে চলে যাওয়া ও পড়ে যাওয়া থেকেও রক্ষা’ করার সক্ষমতা থাকতে হবে।
চীন একা নয়, এই ধারণা নিয়ে গবেষণাও চালাচ্ছে জাপান। কারণ হলো জাপানে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। সেখানে কর্মীর অভাবও রয়েছে, তাই এই সমস্যার সমাধানে তারা রোবট ব্যবহারের চেষ্টা করছে।
উল্লেখ্য, চীনের মধ্যে এই ধারণা একেবারেই নতুন কিছু নয়। ২০২২ সালে ইলন মাস্ক চীনের সাইবারস্পেস প্রশাসনের জন্য একটি নিবন্ধে বয়স্ক মানুষদের জন্য রোবট সহায়ক ব্যবহারের প্রস্তাবও দিয়েছিলেন।
চীনা মিডিয়া এবং বিশ্লেষকরা বিষয়টি নিয়ে বেশ আগ্রহও প্রকাশ করেছেন ও খবরটি সবাই ইতিবাচকভাবেই গ্রহণ করতে চাইছেন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org