দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রাজ কাপুর ও যশ চোপড়ার ছবিতেও ছিলেন অচলা সচদেব; অভিনয় করেছেন রাজেশ খান্না, দেব আনন্দদের মতো তারকাদের সঙ্গেও। অথচ ব্যক্তিজীবনে তিনি হয়ে পড়েছিলেন অত্যন্ত অবহেলিত- সন্তানদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার পর একাই কাটিয়েছেন জীবনের শেষ ১২টি বছর।

অভিনেত্রী অচলা সচদেবের চলচ্চিত্রজীবন যেনো সিনেমার মতোই। দেব আনন্দ, রাজ কাপুর, যশ চোপড়া, রাজেশ খান্না- বলিউডের সেরা সেরাদের সঙ্গে একের পর এক হিট ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’-তে কাজলের দাদির চরিত্রে তাকে দেখা গিয়েছিল। আবার ১৯৬৫ সালের ‘ওয়াক্ত’ সিনেমার অমর গান ‘আয়ে মেরি জোহরা জবীন’-এর নায়িকাও ছিলেন এই অচলা। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে অন্য অনেক অভিনেত্রীর মতোই তাকেও মা-দাদির চরিত্রে সীমাবদ্ধ হতে হয়, তবুও ২০০০-এর দশকের শুরু পর্যন্ত কাজ চালিয়ে গেছেন- করণ জোহরের ‘কাভি খুশি কাভি গম’ ছিল তার শেষ দিকের আলোচিত সিনেমাগুলোর একটি।
পঞ্চাশের দশকে শুরু হওয়া অচলার ছিল এক দীর্ঘ ক্যারিয়ার; তবে তার শেষ জীবনটা ভীষণ কষ্টে কাটাতে হয়। পুনের নিজস্ব দুই কামরার ফ্ল্যাটে একাই থেকেছেন এক দশকেরও বেশি সময় ধরে, পাশে ছিলেন কেবল একজন সেবিকা। দুই সন্তানের কেওই তার খোঁজ-খবরও নিতেন না। মৃত্যুর পূর্বে নিজের বাড়িটি দান করে দেন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে। বলিউডের জন্য জীবনের বহু বছর দেওয়া অনেক শিল্পীর মতো তিনিও হয়েছিলেন অবহেলার শিকার।

১৯২০ সালে পেশোয়ারে জন্ম নেওয়া অচলা সচদেব ২০১২ সালে পুনেতে ৯১ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। জীবনের শেষ কয়েক মাস ছিলেন পুনে হাসপাতাল এবং রিসার্চ সেন্টারেও ভর্তি। তার বাসায় দেখাশোনার জন্য জনসেবা ফাউন্ডেশন একজন সেবিকা নিয়োগ দেন। এই সংস্থাকেই তিনি অর্থ দিয়ে শুরু করেছিলেন ‘অচলা সচদেব ইনস্টিটিউট অব এডুকেশন’, যেখানে পাহাড়ি এবং আদিবাসী এলাকার মানুষদের হাসপাতাল এবং রোগী সেবার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। বাড়িটি তিনি এই সংস্থার নামেই লিখে দিয়েছিলেন।
চলচ্চিত্রজীবনে তিনি ‘মেরা নাম জোকার’, ‘জুলি, ‘হকিকত’, ‘হিমালয় কি গোদ মে’-এর মতো জনপ্রিয় সিনেমাতে অভিনয় করেছেন। সেইসঙ্গে ‘নাইন আওয়ার্স টু রামা’ এবং মার্চেন্ট-আইভরির ‘দ্য হাউসহোল্ডার’-এর মতো ইংরেজি সিনেমাতেও ছিলেন। শেষ সিনেমা ছিল হৃতিক রোশন ও ঈশা দেওল অভিনীত ‘না তুম জানো না হাম’। পঞ্চাশের দশকে ‘মাদার’, ‘রাহি’, ‘চাঁদনি চক’, ‘ফুটপাত, ‘আজাদ’, ‘মিস মেরি’, ‘আদালত’-এর মতো সমালোচকদের প্রশংসিত সিনেমাতে অভিনয় করেছিলেন। তবে ১৯৬৫ সালের ‘ওয়াক্ত’-এর পরই তার ক্যারিয়ার নতুন এক উচ্চতায় পৌঁছে যায়।
শতাধিক সিনেমাতে অভিনয়ের পর ১৯৭০-এর দশকে অচলা চলে যান পুনেতে। বিয়ে করেন ব্রিটিশ নাগরিক ক্লিফোর্ড ডগলাস পিটার্সকে- যার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন যশ চোপড়া। দুজনেরই এর আগেও বিয়ে হয়েছিল। তবে ক্যারিয়ারের শুরুতে তিনি দিল্লিতে আকাশবাণীতে কাজ করতেন, দেশভাগের পূর্বে লাহোরেও কাজ করেছিলেন। ১৯৫০-এর দশকে ‘দিলরুবা’ সিনেমাতে দেব আনন্দের বোনের চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তার চলচ্চিত্রযাত্রা শুরু হয়। তবে ক্লিফোর্ডের মৃত্যুর পর তিনি নিঃসঙ্গ হয়ে যান। ছেলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান- মাঝে-মধ্যে শুধু ফোনে কথা বলতেন। মেয়ের সঙ্গেও সম্পর্ক ছিল বিচ্ছিন্ন। ঘনিষ্ঠ বন্ধু রাজীব নন্দা মুম্বাই মিরর’কে বলেছিলেন, শেষ সময় ইন্ডাস্ট্রির পরিচিতদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও খুব বেশি সাড়া পাননি এই অভিনেত্রী।
তার মৃত্যুর পর কেবল অমিতাভ বচ্চন ও একতা কাপুর শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন। ছেলে জ্যোতিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হতে এসে ক’জন আত্মীয়ের সঙ্গে শেষকৃত্যে যোগ দেন। বাকিটা যেনো মিলে যায় ওপি নেয়ার, ভরৎ ভূষণ, ভগবান দাদা প্রমুখ তারকার নিঃসঙ্গ পরিণতির গল্পের মতো- বলিউড বরাবরই নির্মম, বিশেষ করে যাদের সেভাবে কাজে লাগে না; তাদের কেও মনেও রাখে না। তথ্যসূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
>>>>>>>>>>>>>>>>>>
করনা সম্পর্কে নতুন করে জরুরী সতর্কতা
আসুন আমরা আবার মাস্ক পরা শুরু করি। কারণ করোনা তথা COVID-Omicron XBB আগের ভ্যারিয়েন্টগুলোর তুলনায় ভিন্ন ও বিপজ্জনক। এটি সহজে শনাক্তও হয় না, তাই সবার মাস্ক পরা অত্যন্ত জরুরি।
১. COVID-Omicron XBB এর নতুন উপসর্গগুলো:
i) কাশি নেই।
ii) জ্বর নেই।
বেশিরভাগ উপসর্গ হলো—
iii) অস্থিসন্ধিতে ব্যথা।
iv) মাথাব্যথা।
v) গলাব্যথা।
vi) পিঠে ব্যথা।
vii) নিউমোনিয়া।
viii) ক্ষুধা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়া।
২. এই ভ্যারিয়েন্টটি ডেল্টার চেয়ে ৫ গুণ বেশি বিষাক্ত এবং মৃত্যুহারও বেশি।
৩. উপসর্গগুলো খুব অল্প সময়েই মারাত্মক আকার ধারণ করে এবং কখনও কখনও কোনো স্পষ্ট উপসর্গ না দেখিয়েই অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে।
৪. তাই আরও বেশি সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
এই ভ্যারিয়েন্টটি নাসোফ্যারেঞ্জিয়াল (নাকের গভীর অংশ) অঞ্চলে পাওয়া যায় না, বরং সরাসরি ফুসফুসের “উইন্ডো” অংশে আঘাত করে এবং নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা দেয়।
৫. কিছু রোগীর মধ্যে জ্বর বা ব্যথা না থাকলেও এক্স-রে করলে মৃদু নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। এছাড়া নাক দিয়ে নেয়া স্যাম্পলে (সোয়াব) পরীক্ষায় নেগেটিভ ফল আসছে, যা পরীক্ষায় ভুল রিপোর্ট (ফলস নেগেটিভ) এর সংখ্যা বাড়াচ্ছে। এ কারণে এই ভাইরাসকে ‘ধূর্ত’ বলা হচ্ছে।
এর মানে হলো— এটি সহজেই ছড়িয়ে পড়ে, সরাসরি ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায়, ভাইরাল নিউমোনিয়া সৃষ্টি করে এবং তীব্র শ্বাসকষ্ট তৈরি করে। এই কারণে COVID-Omicron XBB এত বেশি ছোঁয়াচে ও প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে।
৬. যতটা সম্ভব ভিড় এড়িয়ে চলুন, খোলা জায়গাতেও অন্তত ১.৫ মিটার দূরত্ব বজায় রাখুন, সঠিকভাবে মাস্ক পরুন, এবং নিয়মিত হাত ধুয়ে ফেলুন—even যদি কাশি বা হাঁচি না থাকে।
এই COVID-Omicron XBB “ওয়েভ” প্রথম COVID-19 মহামারির চেয়েও ভয়াবহ।
সতর্কতা, সচেতনতা ও বৈচিত্র্যময় সুরক্ষা ব্যবস্থাই আমাদের রক্ষা করতে পারে।
✅ দয়া করে এই বার্তাটি বন্ধু ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শেয়ার করুন।
✅ শুধুমাত্র নিজের কাছে রেখে দেবেন না।
✅ যত বেশি সম্ভব লোককে জানিয়ে দিন।
ঘরের বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক পরুন এবং নিজেকে সুরক্ষিত রাখুন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org