দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গাজার উত্তরে ধ্বংসস্তূপের পাশে এখন একটি ছোট তাবুতে বসবাস করছেন ২৮ বছর বয়সী মাহমুদ আবু ফউল। মায়ের গলা শুনে তিনি হাসেন, তবে তাকে দেখতে পান না- কারণ হলো ইসরায়েলের কারাগারে ৮ মাসের নির্যাতনে তিনি হারিয়েছেন দৃষ্টিশক্তি।

তার এই অন্ধত্ব শুধু একজন তরুণের গল্পই নয়; এটি মূলত ইসরায়েলের কারাগারগুলোতে বন্দী হাজারও ফিলিস্তিনির ভাগ্যের প্রতিচ্ছবি। সদে তেইমান, রামলে কিংবা নেগেভ- সব কারাগারেই একই চিত্র: মারধর, ক্ষুধা, চিকিৎসা বঞ্চনা, এরপর ফাঁসি।
মাহমুদ বলেন, ‘আমি বারবার চিকিৎসা চেয়েছিলাম, তারা শুধুমাত্র চোখে কিছু ড্রপ দিয়েছে- যা কোনো রকম কাজই করেনি।’ তবে তিনি দৃষ্টিশক্তি হারালেও হারাননি বলার শক্তি। তার বর্ণনাই হলো এখন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর হাতে নতুন প্রমাণ, কীভাবে ইসরায়েলি কারাগারগুলো ধীরে ধীরে হয়ে উঠেছে একেকটি যেনো নির্যাতন শিবির।

গাজার যুদ্ধবিরতির পর সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনির মধ্যে অনেকেরই শরীরজুড়ে নির্যাতনের চিহ্ন। জাতিসংঘ বলছে যে, গত এক বছরে ৭৫ জন বন্দী কারাগারে মারা যান। যাদের অনেকেই ফাঁসিতে ঝুলে কিংবা পেটানো অবস্থায় প্রাণ হারিয়েছেন।
ইসরায়েল এইসব অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে। তবে কোনো তদন্ত কিংবা প্রমাণ হাজির করতে পারেনি। অথচ বন্দীদের পরিবারগুলো প্রতিদিনই নতুন লাশ পাচ্ছে, কিংবা পাচ্ছে এমন সন্তান, যে তার মায়ের মুখও দেখতে পান না।

>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org