দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সকালের নাস্তা দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার হিসেবে পরিচিত। সারারাত উপবাসের পর সকালে শরীরের শক্তির ঘাটতি পূরণে নাস্তা অপরিহার্য ভূমিকা রাখে।

পুষ্টিবিদদের মতে, সঠিকভাবে পরিকল্পিত সকালের নাস্তা শরীর এবং মস্তিষ্ক দুটোই সক্রিয় রাখে, কর্মক্ষমতা বাড়ায় এবং মনোযোগ ধরে রাখতে সহায়তা করে। তাই নাস্তা কখনো বাদ দেওয়া উচিত নয়।
সকালের নাস্তায় এমন খাবার থাকা উচিত যা শরীরকে প্রয়োজনীয় শক্তি এবং পুষ্টি দেয়। সাধারণত কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফাইবার এবং সামান্য ফ্যাটসমৃদ্ধ খাবার নাস্তার জন্য উপযুক্ত। যেমন- ভাত বা রুটি সঙ্গে ডিম, দুধ বা দই, একটি ফল, আর সামান্য শাকসবজি। কেউ চাইলে ওটস, কর্নফ্লেক্স, বা সবজি স্যান্ডউইচও খেতে পারেন। এতে শরীর একদিকে পর্যাপ্ত ক্যালরি পায়, অন্যদিকে অতিরিক্ত তেল বা চর্বির ক্ষতিকর প্রভাব থেকেও দূরে থাকে।
অনেকেই ব্যস্ততার কারণে সকালে শুধু চা বা কফি খেয়ে কাজে চলে যান, যা একেবারেই স্বাস্থ্যসম্মত নয়। খালি পেটে চা বা কফি পেটের এসিড বাড়ায় এবং পরিপাকতন্ত্রে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। আবার ভারী বা অতিরিক্ত তেলযুক্ত নাস্তা যেমন পুরি, পরোটা, বা ভাজাপোড়া খাবার নিয়মিত খেলে ওজন বৃদ্ধি, কোলেস্টেরল এবং হজমজনিত জটিলতা দেখা দিতে পারে।
সুস্থ নাস্তার একটি বড় উপাদান হলো ফল। সকালে একটি আপেল, কলা বা পেঁপে শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং ফাইবার সরবরাহ করে। পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানি পানও জরুরি। যারা কর্মব্যস্ত জীবনযাপন করেন, তারা চাইলে রাতে ওটস বা চিয়া সিডস দুধে ভিজিয়ে রেখে সকালে সহজে খেতে পারেন।
সকালের নাস্তা হালকা, পুষ্টিকর এবং সুষম হওয়া উচিত। এতে যেমন শরীর দিনভর সক্রিয় থাকে, তেমনি মানসিক সতেজতাও বজায় থাকে। একটি সঠিক সকালের নাস্তা সুস্থ জীবনের প্রথম ধাপ- যা প্রতিদিনের ভালো অভ্যাসে পরিণত করা দরকার।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org