দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমাদের সকালটা শুরু করা দরকার স্বাস্থ্যকর খাবার দিয়ে। তাই ওজন ঝরানোর লক্ষ্যে নিয়ম করেই প্রাতরাশ সারছেন। কখনও চিঁড়ার পোলাও, স্যান্ডউইচও খাচ্ছেন। চুমুক দিচ্ছেন ফলের রসেও। ভাবছেন, লুচি-পরোটা তো বাদ! এ সবই স্বাস্থ্যকর। তবে সত্যিই কি তাই?
গুজরাতের পুষ্টিবিদ হেত পটেল নেটমাধ্যমে মাঝে-মধ্যেই স্বাস্থ্য ভালো রাখার পরামর্শও দেন। তিনি বলেছেন, অনেক খাবার স্বাস্থ্যকর মনে হলেও, তা কিন্তু ততটা স্বাস্থ্যকর নয়। বরং কোনও কোনও খাবার হরমোনের উপর প্রভাবও ফেলতে পারে। ওজন কমানোর পথে বাধা হয়েও দাঁড়াতে পারে।
দুধ ও সিরিয়াল
এখন বাজারচলতি সিরিয়াল দুধে ভিজিয়ে খাওয়ার চলও বাড়ছে। তবে কোনও কোনও সিরিয়ালে স্বাদের জন্য কৃত্রিম শর্করাও মেশানো হয়। পুষ্টিবিদের মতে, এর চেয়ে ভালো বিভিন্ন রকমের বাদাম, বীজ ইয়োগার্টে মিশিয়ে তারপর খাওয়া। বিশেষত: রক্তে শর্করার মাত্রা ওঠা-নামা করলে কিংবা বেশির দিকে থাকলে সিরিয়ালের পরিবর্তে দই, বীজ, বিভিন্ন রকম বাদাম মিশিয়ে খাওয়াই ভালো।
খালি পেটে চা-কফি খাওয়া
পুষ্টিবিদরা বলেছেন খালি পেটে চা-বিস্কুট খাওয়া মোটেও ভালো নয়। এর পরিবর্তে চা কিংবা কফিতে চুমুক দেওয়া যেতেই পারে একটু শুকনো বাদাম খেয়ে। আবার সেদ্ধ ডিমও খেতে পারেন।
স্যান্ডউইচ
ডিম, পেঁয়াজ, শসা দিয়ে তৈরি স্যান্ডউইচেও কামড় দিচ্ছেন। ভাবছেন, এই খাবারটি তো স্বাস্থ্যকর। তবে ময়দার পাউরুটি নিয়মিত খাওয়া মোটেও ভালো নয়। পুষ্টিবিদ বলেছেন, খেতে হলে আটা, মিলেট কিংবা মাল্টিগ্রেন পাউরুটি ও তাতে ডিম, পনির, টোফুর মতো প্রোটিনও থাকা দরকার।
চিঁড়ের পোলাও
অবশ্য চিঁড়ের পোলাও খাওয়ায় সমস্যা নেই। তবে এতে বেশির ভাগটাই রয়েছে শর্করা। যে কেও ওজন কমাতে চাইলে কিংবা সকালের খাবার প্রোটিন, ভিটামিনের জোগান চাইলে তাতে বাদাম, সব্জি মেশাতে পারেন। চিঁড়ের পোলাও খাওয়ার পাশাপাশি পাতে প্রোটিনের জোগানও ঠিক রাখতে হবে। পনির, অঙ্কুরিত মুগ, দই- এগুলো রাখা যেতেই পারে।
সেঁকা পাউরুটি ও ফলের রস
আপাতনিরীহ খাবার খাওয়া অর্থই শরীরে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট ও শর্করা যাওয়া। অথচ অনেকেই সকালের নাস্তায় ফলের রস খান। পুষ্টিবিদরা বলেছেন, ফলের রসের চেয়ে ভালো গোটা ফল খাওয়া। রস করলে ফলে থাকা ফাইবার বাদ পড়ে যায়, পড়ে থাকে শুধু শর্করা। এর সঙ্গে মাখন লাগানো সেঁকা পাউরুটি ও ডিম খেলে শরীরে প্রোটিন পাওয়া যাবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org