দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কলা এমন একটি ফল যা সারা বছর সহজলভ্য এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর। এটি শুধু সুস্বাদুই নয়, বরং শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। প্রতিদিন একটি বা দুটি কলা খাওয়া শরীরের জন্য নানা দিক থেকে উপকার বয়ে আনে।

কলায় রয়েছে প্রাকৃতিক শর্করা যেমন গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ এবং সুক্রোজ, যা শরীরে দ্রুত শক্তি জোগায়। সকালে বা ব্যায়ামের পর একটি কলা খেলে ক্লান্তি দূর হয় এবং শরীর দ্রুত চনমনে হয়ে ওঠে। এজন্য খেলোয়াড়রা প্রাকৃতিক এই শক্তির উৎস হিসেবে কলা খেতে পছন্দ করেন।
কলা হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে সহায়তা করে। এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে ও পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। যারা গ্যাস্ট্রিক বা অম্বল সমস্যায় ভোগেন, তাদের জন্য কলা একটি প্রাকৃতিক উপশম হিসেবে কাজ করে।
কলা হৃদ্রোগ প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখে। এতে থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে ও সোডিয়ামের ক্ষতিকর প্রভাব কমায়। নিয়মিত কলা খেলে হৃদযন্ত্রের কর্মক্ষমতা বাড়ে এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে।
কলায় রয়েছে ভিটামিন বি৬, ভিটামিন সি, ম্যাগনেশিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এটি মানসিক প্রশান্তি দেয় এবং স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। এমনকি গবেষণায় দেখা গেছে, কলায় থাকা ট্রিপটোফ্যান নামের একটি উপাদান শরীরে সেরোটোনিন তৈরি করে, যা মন ভালো রাখে।
কলা ত্বক এবং চুলের জন্যও উপকারী। এতে থাকা ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান ত্বককে উজ্জ্বল রাখে এবং চুলের গঠন মজবুত করে।
আর তাই প্রতিদিন কলা খাওয়ার অভ্যাস শরীর এবং মনের জন্য সমান উপকারী। এটি একদিকে যেমন শক্তি জোগায়, অপরদিকে রোগ প্রতিরোধ করে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কলা রাখা উচিত। এমন কি একে বলা যায়, প্রকৃতির সহজলভ্য এবং পূর্ণাঙ্গ পুষ্টির ফল।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org