দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশ সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (BSIA) সফলভাবে পেনাং- এ ৩ দিনব্যাপী (১১-১৩ নভেম্বর) মালয়েশিয়া সেমিকন্ডাক্টর রোডশো অত্যন্ত সফলভাবে সম্পন্ন করেছে।

এই কর্মসূচি বাংলাদেশকে বৈশ্বিক সেমিকন্ডাক্টর সাপ্লাই চেইনের এক উদীয়মান অংশীদার হিসেবে তুলে ধরেছে ও দুই দেশের মধ্যে একটি সম্ভাবনাময় দক্ষিণ–দক্ষিণ সিলিকন করিডরের ভিত্তি তৈরি করেছে। এই উপলক্ষে পেনাং-এর একটি হোটেলে গত ১১ নভেম্বর ২০২৫, মঙ্গলবার, একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে শীর্ষ মালয়েশীয় নেতৃবৃন্দ অংশ নেন, যার মধ্যে ছিলেন পেনাংয়ের ডেপুটি চিফ মিনিস্টার এবং মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের মান্যবর হাইকমিশনার ও ডেপুটি হাইকমিশনার। এছাড়াও মালয়েশিয়া সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (এমএসআইএ) এবং মালয়েশিয়া বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (মাইডা)-এর উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ। অনুষ্ঠানে বক্তৃতাদানকালে পেনাংয়ের ডেপুটি চিফ মিনিস্টার ওয়াইবি এন জাগদীপ সিং দেও বলেন, যেভাবে বহু বৈশ্বিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান পেনাং-এ তাদের উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে, BSIA-এর সদস্য প্রতিষ্ঠানসমূহও এখন এই সমৃদ্ধ ইকোসিস্টেমে নিজেদের অবস্থান তৈরি করছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, আগামী দিনে সেমিকন্ডাক্টর খাতে পেনাং ও বাংলাদেশের মধ্যে সহযোগিতা আরও বাস্তবসম্মত এবং শক্তিশালী হবে।

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার জনাব মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে পেনাং-এ কর্মরত সেমিকন্ডাক্টর কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে গভীরতর অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তিনি উল্লেখ করেন যে বাংলাদেশে এবং বৈশ্বিক অঙ্গনে বিস্তৃত একটি বৃহৎ দক্ষ এবং মেধাবী তরুণ ও অভিজ্ঞ পেশাজীবী গোষ্ঠী রয়েছে, যারা উন্নত সেমিকন্ডাক্টর গবেষণা, ডিজাইন এবং উদ্ভাবনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।
রোডশো চলাকালে BSIA প্রতিনিধিদল মালয়েশিয়ার শীর্ষ সেমিকন্ডাক্টর প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে বৈঠক করে এবং র্যাপিড ম্যানুফ্যাকচারিং, ইনফিনেক্স কর্পোরেশন, টিএফ-এএমডি, মাইক্রো মডুলার সিস্টেম, অ্যামুলাস কর্পোরেশন, ওয়াইবিএস ইন্টারন্যাশনাল এবং পেনাং স্কিলস ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (PSDC) পরিদর্শন করে।
BSIA সভাপতি মোহাম্মদ আবদুল জব্বার বাংলাদেশের সেমিকন্ডাক্টরি শিল্পের অগ্রগতি তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশ কেবল দর্শক নয়, বরং সেমিকন্ডাক্টর বিপ্লবে অংশ নিতে এগিয়ে এসেছে। এই রোডশো প্রমাণ করেছে যে, বাংলাদেশ বৈশ্বিক ভ্যালু চেইনে সহযোগিতা, অংশীদারিত্ব এবং তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম।

পারডু ইউনিভার্সিটির প্রফেসর মুহাম্মদ মুস্তাফা হুসাইন বলেন, সিলিকন রিভার আমাদের অভিন্ন ভবিষ্যৎ। আমরা প্রতিটি কোম্পানির দরজায় নক করব এবং একটি দক্ষিণ–দক্ষিণ সিলিকন করিডরের ভিত্তি গড়ে তুলব। তিনি আরও বলেন, এটা কেবল শুরু। আমাদের লক্ষ্য এতটাই উচ্চ হওয়া উচিত যে তা সম্পূর্ণ অর্জন করা কঠিন। তবে সেই লক্ষ্যে এগোতে গিয়ে আমরা অসম্ভবকে জয় করবো।
ক্রেডো সেমিকন্ডাক্টরের এভিপি ড. শাতিল হক বলেন, এই রোডশো একটি নতুন আঞ্চলিক জোটের সূচনা। এর উদ্দেশ্য থেকে বাস্তবায়নে, কথোপকথন থেকে সহ-সৃষ্টিই আমাদের লক্ষ্য।
বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে নিউরাল সেমিকন্ডাক্টর, উলকাসেমি, প্রাইম সিলিকন, সিলিকোনোভা, ক্যাকটাস ম্যাটেরিয়ালস ও আই টেস্ট বাংলাদেশের উর্ধতন কর্মকর্তারা অংশ নেন। রোডশোটি চিপ ডিজাইন, প্যাকেজিং, টেস্ট ইঞ্জিনিয়ারিং, অটোমেশন, কর্মী উন্নয়ন এবং উদ্ভাবনভিত্তিক সেমিকন্ডাক্টর কার্যক্রমে নতুন সহযোগিতার পথ উন্মুক্ত করেছে।
খবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org