দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জুন ২০২৫ সিরিজের কেমব্রিজ পরীক্ষায় অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য দেশের ১২৪ জন শিক্ষার্থীকে সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।

কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস অ্যান্ড অ্যাসেসমেন্টের ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন গ্রুপ এবং ব্রিটিশ কাউন্সিলের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘আউটস্ট্যান্ডিং কেমব্রিজ লার্নার অ্যাওয়ার্ডস (ওসিএলএ)’ অনুষ্ঠানে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। ২৭ নভেম্বর রাজধানীর র্যাডিসন ব্লু ঢাকায় এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
জুন ২০২৫ কেমব্রিজ পরীক্ষায় অসাধারণ ফলাফল অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের সাফল্য উদযাপন করতেই এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বিশ্বব্যাপী ৪০টিরও বেশি দেশে এ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করে কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন। প্রতিষ্ঠানটি ১৬০ বছরের বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিক পরীক্ষা এবং মূল্যায়ন পরিচালনা করে আসছে।
‘টপ ইন দ্য ওয়ার্ল্ড,’ ‘হাই অ্যাচিভমেন্ট,’ ‘টপ ইন কান্ট্রি,’ এবং ‘বস্ট অ্যাক্রোস,’ এই ৪টি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রদান করা হয়। এই বছর বাংলাদেশের ১২৪ জন পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীর মধ্যে ৯৪ জন পেয়েছে ‘টপ ইন দ্য ওয়ার্ল্ড’ অ্যাওয়ার্ড, যারা নির্দিষ্ট বিষয়ে বিশ্বে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে। এছাড়াও, দেশে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়ায় ৪১ শিক্ষার্থী পেয়েছে ‘টপ ইন বাংলাদেশ’ অ্যাওয়ার্ড।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস অ্যান্ড অ্যাসেসমেন্ট, বাংলাদেশের কান্ট্রি লিড সারওয়াত রেজা। স্বাগত বক্তব্যে তিনি শিক্ষার্থীদের সাফল্যের প্রশংসা করেন। পরবর্তী পর্বে ভিডিও বার্তা দেন কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশনের গ্রুপ ম্যানেজিং ডিরেক্টর রড স্মিথ। ব্রিটিশ হাইকমিশনের ডেপুটি ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টর মার্টিন ডসন দেশের শিক্ষার মানোন্নয়নে যুক্তরাজ্যের সহায়তার অঙ্গীকার ও দুই দেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার প্রতিশ্রুতি তুলে ধরে বক্তব্য প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে তার বক্তব্যে ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস অ্যান্ড অ্যাসেসমেন্টের রিজিওনাল ডিরেক্টর (সাউথ এশিয়া) বিনয় শর্মা বলেন, “কেমব্রিজ লার্নাররা আমাদের সকল কার্যক্রমের প্রাণস্বরুপ। শিক্ষাক্রম প্রণয়ন এবং পাঠদান হতে শুরু করে মূল্যায়ন, প্রতিটি ধাপই আমরা এমনভাবে ডিজাইন করি, যেন শিক্ষার্থীরা তাদের পূর্ণ সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে সাফল্য অর্জন করতে পারেন। জুন ২০২৫ -এর পরীক্ষায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের এই অসাধারণ সাফল্যের জন্য আমরা আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।”
ব্রিটিশ কাউন্সিলের এক্সামস ডিরেক্টর বাংলাদেশ ম্যাক্সিম রেইম্যান বলেন, “সকল কৃতী শিক্ষার্থীরা যারা অসাধারণ এই সাফল্য অর্জনে নিষ্ঠা, উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও মানসিক দৃঢ়তার প্রমাণ দিয়েছেন তাদের আমি আন্তরিকভাবে অভিনন্দন জানাই। । কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশনের সাথে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে পরীক্ষা আয়োজন করতে পেরে আমরা আনন্দিত। নানা উদ্ভাবনী পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে নেওয়া এই পরীক্ষা শিক্ষার্থীদের জন্য সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেয়, শিক্ষকদের মানোন্নয়নে সহায়তা করে এবং কৃতীদের সাফল্যকে স্বীকৃতি প্রদান করে।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য প্রদান করেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল কবীর। তিনি শিক্ষার্থীদের মানসম্পন্ন শিক্ষা, অ্যাকাডেমিক উৎকর্ষ এবং ভবিষ্যৎ গঠনে সম্মিলিত প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
এছাড়াও, অনুষ্ঠানে কয়েকজন সফল কেমব্রিজ অ্যালামনাই বক্তব্য দেন। প্লেপেনের সাবেক শিক্ষার্থী এবং বর্তমান বুয়েট শিক্ষার্থী রিজক আমিন খান, মানারাত ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী এবং বর্তমান আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থী সামিহা শেহমীম খান এবং বিএএফ শাহীন ইংলিশ মিডিয়াম কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট হিশাম তাদের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে গ্লেনরিচ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় ছিল একটি মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক আয়োজন।
এরপর, অনুষ্ঠানে অসামান্য অ্যাকাডেমিক সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এই পর্বে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ‘হাই অ্যাচিভমেন্ট’ এবং ‘টপ ইন কান্ট্রি’ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেন ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের ডিরেক্টর অব অপারেশনস জুনায়েদ আহমেদ এবং কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস অ্যান্ড অ্যাসেসমেন্টের অ্যাকাডেমিক অ্যাডভাইজর জুলিয়েট গোমেজ। এরপর টপ ইন কান্ট্রি পুরস্কার প্রদান করেন কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস অ্যান্ড অ্যাসেসমেন্টের রিজিওনাল ডিরেক্টর ফর ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন (সাউথ এশিয়া) বিনয় শর্মা এবং ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টর তাহনী ইয়াসমিন। সমাপনী বক্তব্যে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক এবং অংশীদারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তাহনী ইয়াসমিন।
খবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org