দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক॥ অনেকেই পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে ভিড় ভাট্টা ডিঙ্গিয়ে পাসপোর্ট বানাতে দ্বিধায় ভোগেন। তবে আপনি চাইলেই অনলাইনেই আপনার মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (MRP) এর আবেদন করতে পারেন কোন দালাল কিংবা লম্বা লাইন না ধরেই।
প্রথমেই জেনে নিন অনলাইনে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (MRP) আবেদন করাতে আপনার কি কি সুবিধা হবে।
- আপনাকে সুদীর্ঘ লাইনে দাড়াতে হবেনা।
- কোন দালালের খপ্পরে পরতে হবেনা।
- জেনে বুঝে পড়ে নিজের পাসপোর্টের আবেদন নিজেই করতে পারবেন।
- নিজের দেয়া সময়ে যেয়ে ছবি তুলে আসতে পারবেন।
এবার আপনি যদি এসব সুবিধা নিয়ে অনলাইনেই পাসপোর্ট করার আবেদন করতে চান তবে আসুন ধাপে ধাপে জেনে নি অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া।
পাসপোর্টের ফিঃ পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে প্রথম যে ধাপ তা হচ্ছে সরকার নির্ধারিত ফি সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া। এটি আপনাকে ব্যাংকে যেয়ে জমা দিয়ে আসতে হবে কারণ অনলাইনে আবেদন ফর্মে ঐ ব্যাংকের রিসিট নম্বর এবং জমার তারিখ সংযুক্ত করতে হবে।
বাংলাদেশের শহর গুলোতে পাসপোর্ট অফিস কর্তৃক নির্ধারিত ব্যাংকের শাঁখাতে আপনি পাসপোর্টের ফি জমা দিতে পারবেন। আপনার আশেপাশের কোন শাঁখায় যেয়ে আপনার প্রত্যাশিত সময়ের পাসপোর্টের জন্য ফি জমা দিয়ে রিসিট বুঝে নিন। মনে রাখবেন পাসপোর্ট ফি ২ ধরণের একটি আপনি যদি ১ মাসের মাঝে পাসপোর্ট পেতে চান তবে ফি ৩০০০/- টাকা এবং ১৫ দিনের মাঝে পাসপোর্ট পেতে চাইলে ফি ৬০০০/- টাকা।
অনলাইনে আবেদনঃ আপনি পাসপোর্ট করতে হলে আপনাকে আগে আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে, তাই আপনাকে bangladesh machine readable passport online application এই সাইটে যেতে হবে। এখানে প্রথমে ছবির মত সব সর্ত মেনে এক্সেপ্ট বাটনে ক্লিক করতে হবে।
এবার আপনার স্ক্রিনে একটি ফর্ম পেজ আসবে এখানেই আপনার মূল কাজ। মূলত এটিই হচ্ছে পাসপোর্ট আবেদন ফর্ম। এখানে প্রতিটি ঘরে সঠিক তথ্য প্রদান করতে হবে। আপনার নামের বানান, পিতা-মাতার নামের বানান সব কিছু আপনার শিক্ষা সনদের সাথে মিল রেখে দিতে ভুলবেন না। এখানে স্থায়ী ঠিকানা বর্তমান ঠিকানার ঘর যত্ন সহকারে পূরণ করুণ। তবে দুই ঠিকানা একই হলেই ভালো কারণ এতে পুলিশ ভেরিফিকেশান এক যায়গাতেই হয়। আপনার ইমেল আইডি এবং ফোন নাম্বারের ঘরে ঠিক ভাবে তথ্য দিন।
কি ধরণের পাসপোর্ট করতে চান ঘরে যে ধরণের পাসপোর্ট করার জন্য টাকা জমা দিয়েছেন তাই দিন অর্থাৎ ৩০ দিনের জন্য হলে রেগুলার এবং ১৫ দিনের জন্য হলে এক্সপ্রেস।
এবার সম্পূর্ণ ফর্ম আবার ঠিক আছে কিনা দেখে নেক্সট বাটনে ক্লিক করুণ এখানে নতুন পেইজে আপনার টাকা জমার রিসিট নাম্বার সহ তারিখ ঠিক মত দিয়ে দিন। এবার আপনার MRP এর জন্য ছবি লাগবে এবং সেই ছবি আপনার স্থানীয় পাসপোর্ট অফিসে যেয়ে তুলে আসতে হবে এবং আপনি কোন দিন সরকারি ছুটির দিন ছাড়া সময় দিতে পারবেন তা দিয়ে দিন। এক্ষেত্রে আপনার ইচ্ছে মত সময়েই আপনি ছবি এবং আগুলের ছাপ দিয়ে আসতে পারবেন।
এবার আবার সব ঠিক আছে কিনা দেখে আপনার আবেদন ফর্মটি সাবমিট করে দিন।
নিজের কিছু কাজঃ সাবমিট হওয়ার পর আপনার ই-মেইলে একটি মেইল আসবে যেখানে পূরণকৃত ফর্মের পিডিএফ কপি পাঠাবে। সেই কপিটি আপনি দুই কপি রঙ্গিন প্রিন্ট করে ফেলুন। (এক কপি বাড়তি করে রাখলে ভালোই হয়) এবার ফর্মে দেখুন আপনার ফিলাপ করা অংশ ছাড়াও কিছু যায়গায় আপনার স্বাক্ষর দিতে বলা আছে সেখানে আপনার স্বাক্ষর দিয়ে সাথে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি এবং ৪(চার) কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি নিয়ে আপনারই পরিচিত কোন প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তার কাছে নিয়ে গিয়ে সত্যায়িত করে নিন এবং যেখানে যেখানে ঐ কর্মকর্তার মোবাইল নাম্বার এবং ঠিকানা লিখা লাগবে সেখানে লিখিয়ে নিন।
এবার আপনি আপনার ফর্ম নিয়ে আপনার ছবি তোলার তারিখে চলে যান স্থানীয় পাসপোর্ট অফিসে। সেখানে সকাল সকাল গেলেই ভালো। সরাসরি আপনার ফর্ম সাথে নিয়ে উপস্থিত সেনা সদস্যকে জানান আজ আপনার ছবি তোলার দিন নির্ধারিত আছে। তিনি আপনাকে দেখিয়ে দিবে কোথায় ফর্ম সহ আপনাকে যেতে হবে। ব্যাস এবার আপনার কাজ শেষ বাকিটা অফিস থেকেই করে নিবে আপনার ছবি তোলা এবং আঙুলের চাপ নিয়ে আপনার আবেদন ফর্ম রেখে দিবে।
পুলিশ ভেরিফিকেশানঃ বিষয়টি নিয়ে অনেকেই চিন্তিত থাকেন, অবশ্য বিষয়টি ঝামেলারও বটে। আগেই বলেছি স্থায়ী কিংবা বর্তমান ঠিকানা একটি ব্যবহার করার চেষ্টা করুণ। কারণ দুইটি ঠিকানা দেয়া থাকলে দুই যায়গাতেই ভেরিফিকেশান করা হবে সময় বেশী লাগতে পারে। তবে আপনি আপনার ইনফরমেশান ঠিক থাকলে সরাসরি বলে দিতে পারেন, আপনি এই কাজ করতে যেয়ে পুলিশ সদস্যকে বাড়তি টাকা দিবেন না। অথবা ঝামেলা এড়াতে বলে দিন আপনি ছাত্র টাকা দেয়ার অবস্থা নেই।
পাসপোর্ট রিসিভ ডেটঃ প্রোসেসিং চলার মাঝেই আপনার কাজ হয়ে গেলে মোবাইলে একটি ম্যাসেজ আসবে বাংলাদেশ পাসপোর্ট অফিস থেকে। এটি আপনার পাসপোর্ট বুঝে নেয়ার ডেট। আপনি নির্ধারিত সময়ে গিয়ে পাসপোর্টটি বুঝে নিয়ে আসুন। হ্যাঁ মনে রাখবেন পাসপোর্ট বুঝে নেয়ার আগে সব তথ্য মিলিয়ে নিন ঠিক আছে কিনা।
MRP ভেরিফিকেশন চেকঃ আপনাকে পাসপোর্ট হাতে পেয়ে যা করতে হবে তা হচ্ছে আপনার পাসপোর্ট কি ভেরিফাইড হয়েছে কিনা তা চেক করে নিতে হবে। আপনি এখান থেকে ভেরিফিকেশন চেক করে নিতে পারবেন।
আজ এটুকুই সামনে আরো নানান বিষয়ে টিপস পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ।