দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শাহবাগে শিশুপার্কের সামনে বাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আহত আরও ১ জনের মৃত্যু ঘটার পর অন্তত ৯ জন মৃতুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।
বিরোধী দলের ডাকা ৭১ ঘণ্টার অবরোধের প্রায় পুরো সময়টি ছিল সহিংস। এই সহিংসতার শিকার হয়েছেন এদেশের সাধারণ মানুষ। এদেশের রাজনীতি সাধারণ মানুষকে নিয়েই। অথচ সামপ্রতিক সময়ের রাজনীতি এক অশুভ আকার ধারণ করেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শাহবাগে বিহঙ্গ পরিবহনের একটি বাসে পেট্রোল বোমা ছুঁড়ে মারে দুর্বৃত্তরা। চালক-হেলপারসহ ১৯ যাত্রীর শরীর ঝলসে যায় আগুনে।
ওই দিনই ১৮ জনের মধ্যে নাহিদ নামের একজনের মৃত্যু হয় রাতে পরে গতকাল সকালে মারা যায় রবিন নামের আরেকজন। এরা দুজই মামাতো-ফুপাতে ভাই। এই দুই ভাইকে বলা হতো জড়োয়া কবুতর। যেখানে যেতেন এরা সব সময় এক সাথেই যেতেন। আর তাই দুনিয়া থেকেই বিদায় নিলেন একই সঙ্গে। সেদিন অবরোধের শেষ সন্ধ্যায় দুজন একই সঙ্গে ঘর থেকে বেরিয়েছিল। কে জানতো তাদের আর ঘরে ফেরা হবে না। তাদের বাড়ি মাদারিপুর। ওই ঘটনার বাকি ১৭ জনের মধ্যে অন্তত ৩ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। তবে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে তারা কতদিন এ লড়াই চালিয়ে যেতে পারবেন তা জানেনা কেওই। বর্তমানে অগ্নিদগ্ধদের ৩ জন আছেন আইসিইউতে, ৬ জন পোস্ট অপারেটিভ বিভাগে এবং ৮ জন সাধারণ ওয়ার্ডে। আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অ্যাডভোকেট খোদেজা নাসরিন ও জাহাঙ্গীর হোসেন মৃধার অবস্থাও বড়ই করুন।
এদিকে গতকাল সকালে অগ্নিদগ্ধদের দেখতে গিয়েছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) মজিবুর রহমান ফকির। এ সময় তিনি বললেন, বিএনপি লাশের রাজনীতি করছে। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নির্দেশ আছে যে এখানে যারা অগ্নিদগ্ধ আছেন তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা বিনামূল্যে হবে। পরবর্তীতে যাদের প্লাস্টিক সার্জারি বা আরও উন্নত চিকিৎসার দরকার হলে সরকারের পক্ষ থেকে সেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়াও দেশের বাইরে থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আনার বিষয়টিও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।
বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন পার্থ শঙ্কর পাল সংবাদ মাধ্যমকে জানান, অগ্নিদগ্ধদের ১৬ জনেরই শ্বাসনালীতে বার্ন আছে। আর এ কারণে এদের সবারই অবস্থা আশংকাজনক। তবে ৯ জনের অবস্থা গুরুতর। আর কতদিন নিরীহ মানুষ এভাবে অগ্নিদগ্ধ হবে দেশের রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের কাছে সে জিজ্ঞাসা ভুক্তভোগী আত্মীয় স্বজনদের।