ঢাকা টাইমস্ রিপোর্ট ॥ ‘বেড়ায় যদি ক্ষেত খাই’ তাহলে আর করার কিছুই থাকে না। ঠিক এমনই ঘটনা ঘটেছে এবারের এসএসসি পাস শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে। কারণ আমরা জানি যে, অনলাইনে ভর্তির ব্যবস্থা হলে কোন দুর্নীতি হবে না। কিন্তু না, তাও উঠেছে দুর্নীতির অভিযোগ!
অনলাইন ব্যবস্থায় কোন দুর্নীতির সুযোগ নাই সেই আসাতে এবারে যারা এসএসসি পাস করেছে তারা অনলাইনে আবেদন করেছে। অনেকেই নিশ্চিন্তই ছিলেন যে, আর যাই হোক সঠিক পদ্ধতিতে ভর্তির সুযোগ পাবেন। কিন্তু একাদশ শ্রেণীতে অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া চালু হলেও শিক্ষার্থীরা ভোগান্তি থেকে রেহাই পাচ্ছেন না।
উল্লেখ্য, সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী ৩৮৯টি কলেজের প্রায় অধিকাংশই নামিদামি প্রতিষ্ঠান। অভিযোগ, অনলাইনে ভর্তির অধীনে আসা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চলছে অনিয়ম আর দুর্নীতি। এক্ষেত্রে রাজধানীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ বেশি। অনিয়মের প্রতিবাদে কয়েকদিন পূর্বে রাজধানীর সিটি কলেজের সামনে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছে। এদিকে একটি মামলার রায়ে নটর ডেম কলেজ নিজস্ব স্টাইলে এবার ভর্তি প্রক্রিয়া অনুসরণ করছে। এ নিয়ে ইতিমধ্যেই সংকট তৈরি হয়েছে। ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন জানান, যে বা যারা সরকারি নীতিমালা অনুসরণ করবে না, তারা তাদের ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন দেবেন না। বিপরীত দিকে নটর ডেম কলেজ অধ্যক্ষ ফাদার বেঞ্জামিন কস্তা জানান, তারা তাদের মতো ভর্তি নিচ্ছেন, ২০১২ সালের নীতিমালা তাদের ক্ষেত্রে আপাতত প্রযোজ্য নয়।
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অভিযোগ করেছেন, সিটি কলেজ, পাবলিক রাইফেলস স্কুল ও কলেজ, রাজউক উত্তরা, ঢাকা কলেজ, মতিঝিল আইডিয়ালসহ বিভিন্ন কলেজ শিক্ষা বোর্ডের প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী ভর্তি করছে না। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা নানা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা জানায়, কলেজগুলো বিভিন্ন ধরনের ছলচাতুরীর আশ্রয় নিয়েছে। এর মধ্যে কেও কেও অনলাইনে আবেদনের ফল প্রকাশের পর স্বল্প সময়ের নোটিশে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি জারি করে। এতে গ্রাম থেকে আসা জিপিএ ৫ ফলধারী অনেক মেধাবী নির্ধারিত দিন ও সময়ে সংশ্লিষ্ট কলেজে উপস্থিত হতে পারেনি। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কলেজগুলো তালবাহানা করছে। তালিকা না মেনে পেছন থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হচ্ছে। এমনকি মূল তালিকার বাইরে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকেও শিক্ষার্থী নেয়া হচ্ছে। কাজটি বেশি করছে সরকারি কলেজগুলো।
এ অবস্থার মধ্যেই আগামীকাল ২৮ জুন শেষ হচ্ছে ভর্তির দিন। এসব শিক্ষার্থীর ক্লাস ১ জুলাই শুরু। ২৯ জুন থেকে অবশ্য শূন্য আসনে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হবে। ২৬ জুন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা বোর্ড জানায়, যেসব কলেজে আসন শূন্য রয়েছে সেসব কলেজে ভর্তি না হওয়া শিক্ষার্থীরা সুযোগ পাবে। প্রয়োজনে বিভাগ পরিবর্তনেরও সুযোগ পাবে শিক্ষার্থীরা। এই সুবিধা পেতে শিক্ষার্থীদের বোর্ডের ওয়েবসাইট থেকে রোল নম্বর ডাউনলোড করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
এখন ভর্তি সমস্যায় অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন। কারণ ভালো কলেজে ভর্তির জন্য যে পরিমাণ আসন খালি রয়েছে, তার থেকে অনেক মেধাবি ছাত্র-ছাত্রী এবার রয়েছে। সেক্ষেত্রে একটু খারাপ রেজাল্ট করা ছাত্র-ছাত্রী যারা এ প্লাসের নীচে রয়েছে তাদের কি হবে সে চিন্তায় অভিভাবকরা দিশেহারা।