দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমানে ফেসবুক একটি আন্তর্জাতিক জনপ্রিয় সামাজিক মিডিয়া প্লাটফর্ম, দিন দিন এর ব্যবহারকারী যেমন বাড়ছে এসব ব্যবহারকারীকে কেন্দ্র করে বাণিজ্যও বাড়ছে, ফেসবুক বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পাশাপাশি বাণিজ্যিক মাধ্যম ও বলা চলে, ফেসবুক ব্যবহার এখন আগের চেয়ে আরও বেশি অনিরাপদ এবং অপ্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে, আজ আমরা আপনাদের জানাব নতুন বছর ২০১৪ সালে ফেসবুক কেন ব্যবহারকারীদের অপছন্দের কারণ হতে পারে।
ফেসবুক ব্যবহারকারী দিন দিন যেভাবে বাড়ছে সেভাবে এর বিশাল ব্যবহারকারীর সংখ্যা লক্ষ্য করে এখানে বাড়ছে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের আগমন এবং ব্যবহারকারীদের দেয়ালে দেয়ালে ছড়িয়ে যাচ্ছে বিজ্ঞাপন, একই সাথে বিশাল ব্যবহারকারীর গোপন তথ্য হাতিয়ে নিয়ে তা দিয়ে ব্ল্যাক মেইল করতে ফেসবুক কিছু অসাধু চক্রের আখড়ায় পরিণত হচ্ছে।
এবার চলুন যে সকল কারণে ২০১৪ সালে আপনার ফেসবুক ছেড়ে দেয়া উচিৎ:
- ফেসবুকে আপনার ব্যক্তিগত বলে এখন আর কিছুই নেইঃ
বেশ কিছু কারণে ফেসবুক এখন অনেক খোলা মেলা এবং ব্যবহারকারী চাইলেও এখন আর নিজেকে লুকিয়ে রাখতে পারেন না, যেমন আগে একজন ব্যবহারকারী নিজেকে সার্চ রেজাল্ট থেকে লুকিয়ে রাখতে পারতেন, যেমন কেউ যদি কোন ব্যবহারকারীর নাম লিখে সার্চ দিত তবে যদি আপনার নাম পাবলিক সার্চ রেজাল্টে না আসুক দেখতে চান তবে আপনি তা করতে পারতেন কিন্তু এখন যেকেও আপনার নাম লিখে সার্চ দিলেই সে আপনাকে সার্চ লিস্টে দেখতে পাবে। বর্তমানে আপনি যদি আপনার প্রোফাইল কারোর থেকে লুকিয়ে রাখতে চান তবে এক মাত্র উপায় হচ্ছে তাঁকে ব্লক দিয়ে দেয়া!
- আপনার বাবা-মা এমনকি আপনার দাদাও এখন আপনার ফেসবুকের কর্মকান্ড দেখতে পারেনঃ
২০১৩ সাল ছিল ফেসবুকের জন্য একটি দ্রুত সম্প্রসারণশীল বছর, এই বছরে অনেকের সন্তান তো এসেছে একই সাথে বাবা দাদারাও ফেসবুকে একাউন্ট খুলে বসেছেন ফলে লিস্টে থাকা আত্মীয়দের জন্য আপনি ভুল ক্রমেও কোন পোস্ট দিতে পারবেন না এতে হয়ত আপনার আত্মীয় এসে লাইক দিবে কিংবা কমেন্ট করতে পারে! তখন গেলতো ব্যক্তিগত বিষয় লিক হয়ে!
- এমন কোন ছবি যা আপনি কখনোই আর দেখতে চান নাঃ
এখন এমন হর হামেশাই হচ্ছে, যেমন আপনার মা বাবা কিংবা মামা চাচা আপনার এমন কোন ছবি ফেসবুকে আপলোড করে বসে আছেন যা দেখে আপনার লজ্জায় মাথা হেট!
- ফেসবুক এখন আপনার না বলা বিষয় সমূহও ধারন করে রাখছেঃ
অনেক সময় আপনি ফেসবুক ব্যবহার করছেন বিভিন্ন জিনিস লিখছেনও কিন্তু একটু পরেই ভাবলেন না এটা আপনার পাবলিশ করা ঠিক হবেনা কিংবা এ বিষয়ে আপনি কাউকে জানাতে চান না, আপনি শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত বদলালেন, কিন্তু আপনি কি জানেন ফেসবুক আপনার পোস্ট না করা বিষয় সমূহও সেভ করে রাখছে! হ্যাঁ ফেসবুক সম্প্রতি জানিয়েছে তাঁরা ব্যবহারকারীদের অপ্রকাশিত স্ট্যাটাস কিংবা নোটও তাদের সার্ভারে রেখে দেন!
- ফেসবুক আপনাকে আপনার জীবন সম্বন্ধে ইতিবাচকতা থেকে দূরে ঠেলে দেয়ঃ
ফেসবুক আপনাকে কৃত্রিম বিষয়ে আকৃষ্ট করে তুলে আপনার বাস্তব অবস্থান থেকে আপনাকে দূরে ঠেলে দেয়, সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে অতিরিক্ত ফেসবুক ব্যবহারকারীরা বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই অসুখী!
- ফেসবুকে ফ্রেন্ড সাজেশান অপরিচিতরাও আপনাকে দেখছেঃ
ফেসবুকের নতুন ফ্রেন্ড সাজেশানে আপনার কোন ভাবে পরিচিত না কিংবা আপনার বন্ধুর পরিচিত এমন মানুষের ফ্রেন্ড সাজেশান আপনাকে দেখাচ্ছে কিংবা তাদের আইডিতে আপনাকে ফেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাতে তাদের উদ্বুদ্ধ করেছে এতে আপনার প্রাইভেসি অনেকটাই লঙ্ঘিত হচ্ছে!
- আপনার বন্ধু তালিকায় আপনি কেবল ১০ থেকে ২০ জনের বিষয়ে যত্ন নিতে পারেনঃ
ফেসবুকের কল্যাণে হতে পারে আপনার বন্ধু তালিকা ১০০০ কিংবা তারও বেশি কিন্তু ঠিক ভাবে হিসেব করলে দেখা যাবে আপনার বন্ধু তালিকায় ২০ জনের বেশি বন্ধুর যত্ন আপনি নিতে পারেন না, যেমন আপনার বন্ধুদের মাঝে অনেকের জন্মদিন আপনি মনেই রাখতে পারেন না যা আপনাকে ফেসবুক মনে করিয়ে দিচ্ছে, এতে আপনার বন্ধুদের বিষয়ে আপনার ব্যক্তিগত যত্ন নেয়ার প্রবণতা কমে যাচ্ছে।
- ফেসবুকেই বন্ধুরা নিজেদের বিয়ে, জন্মদিন কিংবা অন্যান্য দাওয়াত সেরে নিচ্ছেঃ
আপনি নিশ্চয়ই চান না আপনার কোন কাঁচের বন্ধু আপনাকে তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে অন্য সবার সাথেই বিয়ের নিমন্ত্রন জানাক? হ্যাঁ এখন ফেসবুকে তাই হচ্ছে বন্ধুরা ব্যস্ততার দোহাই দিয়ে ইভেন্ট খুলে কিংবা স্ট্যাটাসে ট্যাগ দিয়ে জানিয়ে দিচ্ছে বিশেষ অনুষ্ঠানের দাওয়াত! যা হয়তো আপনার জন্য অনাকাঙ্ক্ষিত!
- ফেসবুকে অটো প্লে ভিডিওঃ
ফেসবুকের নতুন ব্যবস্থায় আপনি না চাইলেও ফেসবুক নিজে থাকে আপনার টাইমলাইনে থাকা যেকোনো ভিডিও অটো প্লে করে দিবে যা অপ্রয়োজনে আপনার মূল্যবান ডাটা নষ্ট করবে!
- ফেসবুক ভেঙ্গে যাওয়া সম্পর্ক ভুলতে দেয়নাঃ
ধরুন আপনার সম্পর্ক ভেঙ্গে গেছে কিংবা কোন বন্ধুর সাথে সম্পর্ক আর নেই কিন্তু ফেসবুক ঠিকই তার পুরনো কমেন্ট ছবি কিংবা স্ট্যাটাসে আপনাকে তা দেখাবে এবং আপনাকে আঘাত দিবেই। আপনি ভুলতে চাইলেও বোধয় ভুলা কষ্ট হবে।
উপরের সব কারনের পরেও আপনার নিজের ব্যক্তিগত ইচ্ছেই আপনাকে ফেসবুক ব্যবহার কিংবা ব্যবহার না করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে, আমরা কেবল বিগত সময়ে ফেসবুকে ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা এবং ব্যবহারকারীদের উপর ফেসবুকের স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়টি তুলে ধরলাম।
সূত্রঃ Huffingtonpost