দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সম্প্রতি বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরীন মিডিয়াকে জানান তিন জন নারী তাঁর জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছেন)। আর এই তিন নারী অন্য কেউ নন বাংলাদেশের দুই নেত্রী শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়া এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তসলিমা ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের বর্তমান অবস্থান এবং তাঁর জন্য দায়ী কারা এসব বিষয়ে সরাসরি কথা বলেন। তসলিমা নাসরিন বাংলাদেশী লেখিকা হলেও তিনি বেশ কিছুদিন বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত প্রবাসে জীবন যাপন করছেন। তিনি মাঝে ভারতের কলকাতায় এলেও সেখানে কট্টর মুসলিমদের বাঁধায় দিল্লিতে স্থায়ী বসবাস শুরু করেন।
তসলিমা নিজেকে দুই দেশের ভোটের রাজনীতির শিকার বলে দাবি করে বলেন, ‘আমি দুই দেশের নেতা নেত্রীদের ভোটের নোংরা রাজনীতির শিকার। আমার লেখার জবাবে দুই বাংলার মুসলিম সম্প্রদায় আমাকে দেশ ছাড়া করতে চায় আর সেসব মানুষদের ভোটের জন্য খুশি করতে নেতারা আমাকে নিরাপত্তা না দিয়ে দেশ ত্যাগে বাধ্য করে।
তসলিমা দাবি করেন, “আমি সব সময় আমার লেখনীতে নারীদের জন্য লিখেছি অথচ আফসোস আমার সংস্কৃতির দুই দেশেই ক্ষমতায় আছে নারীরা। তবুও তাঁরা আমাকে নিরাপত্তা দিচ্ছেনা। মূলত অন্য কারো জন্য নয় তাদের জন্যই আমি দেশ ছাড়া।”
তসলিমা নাসরিন বলেন, “আমি বাংলাদেশ নিয়ে আর কোন আশা দেখিনা, সেখানে ফিরে যাওয়ার কোন আশা নেই। তবে আমি কোলকাতা শহরকে খুব অনুভব করি, সেখানে যেতে চাই কারণ কোলকাতার সাথে আমার সংস্কৃতির বন্ধন আছে। তবে সেখানে যাওয়াও আমার জন্য এখন অনিরাপদ! আমি জানি এবারের বই মেলায়ও আমার বই উঠতে দেবেনা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তসলিমা নাসরিন তাঁর মন্তব্যে বলেন, ভোটের রাজনীতির জন্য আমি আজ উদ্বাস্তু! তাঁরা ভোট ধরে রাখতে অন্যায়কে প্রশ্রয় দিচ্ছে। ভোটের রাজনীতির কাছে আজ ন্যায় পরাজিত! গণতন্ত্রের জন্য ভোটের রাজনীতি অত্যন্ত অশুভ।
নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে তসলিমা নাসরিন জানান তিনি খুব শীগ্রই তাঁর বিতর্কিত বই লজ্জা’র সংস্করণ বাংলায় বের করবেন। এছাড়া নিজের সকল অর্থ দিয়ে তিনি একটি ট্রাস্ট করতে চান ভারতে। তাঁর ট্রাস্ট নিপীড়িত নারীদের পাশে দাঁড়াবে। একই সাথে তিনি তাঁর ৫০ হাজার বই এর বিশাল সংগ্রহশালা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে দান করতে চান।
উল্লেখ্য তসলিমা নাসরিন দীর্ঘসময় নিজ দেশ বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত হয়ে ইউরোপে অবস্থান করছিলেন। শেষ ২০০৪ সালে কোলকাতায় এসে কিছুদিন থাকলে সেখানেও তাঁর অবস্থান নিয়ে বিতর্ক ছড়িয়ে পড়লে ২০০৭ সালে কোলকাতা থেকে তাকে দিল্লি চলে যেতে হয়।
সংবাদ সূত্রঃ দ্যা হিন্দু , দ্যা ইকনোমিক টাইমস , ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস ,