দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ৬০ পয়সা কেজিতে আলু পাওয়া যায়, তাও আবার এই আমলে! এ কথা হয়তো অনেকেই বিশ্বাসই করতে পারবেন না। কিন্তু বাস্তব সত্যি। গ্রামাঞ্চলে এখন আলু রাস্তা-ঘাটে গড়াগড়ি খাচ্ছে। আলু চাষীদের মাথায় হাত।
৬০ পয়সা থেকে ১ টাকা দরে পাওয়া যাচ্ছে এক কেজি আলু। এ অবস্থায় আলু চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষকরা। এ ঘটনা দেশের উত্তরাঞ্চলের ঠাকুরগাঁওয়ে। এ অঞ্চলে প্রতিবছরই আলুর বাম্পার ফলন হয়। অন্যান্য বছর আগাম আলু বিক্রি করে কৃষক বেশ লাভবান হয়েছেন। কিন্তু এবার ঘটেছে এর উল্টো ঘটনা। এ মৌসুমে আলু চাষ করে উৎপাদন খরচই তুলতে পারছেন না কৃষকরা। বোরো, আমন, পাট, গমের লোকসান পুষিয়ে নিতে ঠাকুরগাঁও জেলার নারগুন, আখানগর, বেগুনবাড়ী, ঝাড়গাঁও, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সনগাঁও ও ডাঙ্গী গ্রামের অনেক কৃষক অর্থকরী ফসল হিসেবে প্রতিবছরই আগাম সবজি ও আলুর চাষ করে থাকেন।
কৃষকরা জানিয়েছেন, এ আলু উৎপাদন করতে প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। বর্তমানে বাজারদর অনুযায়ী প্রতি বিঘার আলু বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৪/৫ হাজার টাকায়। তা ছাড়া ক্ষেত থেকে আলু তুলতে শ্রমিকদের মজুরি দিতে হচ্ছে বিঘাপ্রতি ৫ হাজার টাকার বেশি। একজন মজুর সারাদিন ক্ষেত থেকে আলু তুলতে পারেন সর্বোচ্চ তিন মণ, যার দাম মাত্র ১৫০ টাকা। আর ওই মজুরকে মজুরি দিতে হচ্ছে ১৫০-২০০ টাকা। অর্থাৎ ক্ষেত থেকে আলু তুলতেই জমির সব আলুর টাকা তাদের পরিশোধ করতে হচ্ছে, কখনও কখনও বেশিও দিতে হচ্ছে! এসব আলু চাষির ভাগ্যে কোনো কিছুই অবশিষ্ট থাকছে না। তাই এলাকার অনেক কৃষক জমি থেকে আলু উত্তোলন না করে ক্ষেতে চাষ দিয়ে অন্য ফসল লাগানো শুরু করেছেন এমনও শোনা গেছে। অনেকে আবার আলু গরু-ছাগলকে দিয়েও খাওয়াচ্ছেন।
ত্রা ধরা হয় ৪ লাখ ৪৩ হাজার ৮৮৩ টন। কৃষি বিভাগের মতে, ২২ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ করা হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র বলছে, এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত জমিতে আলুর চাষ হয়েছে। আর চাহিদা কম থাকায় চাষিরা আলুর দাম পাচ্ছেন না একেবারেই। এতে করে আলু চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষকরা। আগামী বছর আলু চাষে ভাটা পড়তে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। কৃষকদের সহজ শর্তে ঋণ ও সরকারি পদক্ষেপ অব্যাহত রাখার মাধ্যমে কৃষকদের মনোবল বৃদ্ধি করতে হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।