দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হিক্কা বা হেঁচকি আমাদের একটি বড় সমস্যা। হঠাৎ করেই এই রোগের আগমণ ঘটে। কিন্তু এটি হলে কি করণীয় তা আমাদের জানা নেই। সে বিষটি নিয়েই এই প্রতিবেদন।
হিক্কার প্রচলিত নাম হেঁচকি। চিকিৎসা বিজ্ঞানে Hiccough শব্দ ব্যাবহার করা হয়। হেঁচকি বা হিক্কা সংগঠিত হয় – যখন ডায়াফ্রাম (বুক এবং পেটের মধ্যবর্তী স্থানের পর্দা) ও শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রনকারী মাংসপেশী উত্তেজিত হয় এবং পেশী ঘন ঘন দ্রুত সংকোচনের সময় হঠাৎ বাতাস টেনে নেয়, তখন Glottis (শ্বাস নালীর উপরের ঢাকনা) খুব জোরে শব্দ করে বন্ধ হয়। ফলে হিক হিক এক প্রকার উচ্চ শব্দ হয়। এটাই হিক্কা বা হেঁচকি।
হিক্কা বা হেঁচকি বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে যেমন :-
# পেট ফাঁপা।
# রক্ত স্বল্পতা।
# অধীক মানসিক পরিশ্রম।
# ভয়, আতংক ।
# ক্রোধ, রাগ চেপে রাখলে।
# শরীরের পটাসিয়ামের অভাব হলে।
# মসিত্মষ্কের কোন জটিল রোগ (টিউমার, প্রদাহ, ব্রেইন স্ট্রোক, মাথায় আঘাত ইত্যাদি)।
# হার্টের রোগ- মায়োকার্ডিয়াল ইনর্ফাকশন।
# ভ্যাগাস স্নায়ু (পেটের ভিতরের স্নায়ু) উত্তেজিত হলে।
# খাদ্য নালী সংকোচন হলে।
# হেপাটাইটিস।
# কিডনী অকেজো হলে।
অনেক সময় উপরের কারণগুলো ছাড়াও অজানা কারণে হিক্কা বা হেঁচকি হতে পারে। এই রোগের ভোগকাল বা স্থায়ীকাল ১০/১২ দিন বা আরও বেশি।
প্রাথমিক চিকিৎসা :-
১। স্বাবাভিক পানি পান করতে হবে।
২। বরফ জল বা শীতল পানি পানে উপকার হয়।
৩। ডাবের পানি গরম করে খাওয়ালে হিক্কা বা হেঁচকি বন্ধ হয়।
৪। এক মুঠো খই গোলাপ জলে ভিজিয়ে এর সাথে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে খেলে হিক্কার উপশম হয়।
৫। সর্বোৎকৃষ্ট চিকিৎসা হচ্ছে – একটি কাগজের ব্যাগের মধ্যে নাক-মুখ ঢুকিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস নিন। এই পদ্ধতি আপনার
শরীরের প্রবাহিত রক্তে কার্বনডাই অক্সাইডের মাত্রা বাড়িয়ে দিবে এবং ডায়াফ্রামকে সমপ্রসারিত করবে। ডায়াফ্রামের সমপ্রসারণের ফলে হিক্কা বা হেঁচকি বন্ধ হয়ে যায়।
উপরের পদ্ধতিগুলো ব্যর্থ হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করবেন।
লিখেছেন: ডা: আশিকুর রহমান, ঢাকা।