দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মালয়েশীয় বিমান নিখোঁজ ঘটনার ৫ দিন অতিবাহিত হয়েছে কিন্তু এখনও রহস্যের কোন কিনারা হয়নি। নানা প্রশ্নেরও কোন উত্তর মেলেনি। চলুন জেনে নেয়া যাক ফ্লাইট এমএইচ ৩৭০ এর অনুসন্ধানের সর্বশেষ অবস্থার বিষয়ে।
নিখোঁজ বিমান উদ্ধার তৎপরতায় নিয়োজিত রয়েছে প্রভাশালী দেশগুলো। গতকাল নতুন করে ভারতের সহযোগিতা চেয়েছে মালয়েশীয়া। এদিকে এখন পর্যন্ত বিমানের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। বিমানটির ভাগ্যে কী ঘটেছে বা ঘটতে পারে তাও বলতে পারছে না কেও। ফলে উদ্ধার তৎপরতা নিয়ে মানুষের মধ্যে নানা সন্দেহ এবং অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে। আসলেও এর কোন কিনারা হবে নাকি চিরদিনের মতো রহস্য হয়ে থাকবে তা নিয়ে এখন সবাই সন্দিহান।
এদিকে সিবিসি নিউজ Wall Street Journal বরাত দিয়ে বলছে মার্কিন তদন্তে বেড়িয়ে এসেছে, নিখোঁজ হওয়ার আগে বিমানের পাইলট সকল সংযোগ হারিয়ে ফেলেন, এবং তিনি টাকা ৪ ঘণ্টা বিমানটি নিয়ে বাঁচার তাগিদে আকাশে উড়েছেন। দীর্ঘ সময় কোনও রকম এয়ার এভিয়েশান সংযোগ না পেয়ে, বিমানের পাইলট আন্তর্জাতিক বিমান উড্ডয়নের রুট হারিয়ে ফেলেন এবং বিমানের জ্বালানী নিঃশেষ হয়ে গেলে বিমানটি সমুদ্রের কোথাও বিধ্বস্ত হয়ে থাকতে পারে।
এদিকে উদ্ধার তৎপরতায় নিয়োজিত কর্মকর্তারা গতকাল বুধবার সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, তারা উদ্ধার তৎপরতার জন্য সীমানা আরো বাড়িয়েছেন। উদ্ধার তৎপরতার আওতা বাড়িয়ে ২৭ হাজার বর্গকিলোমিটার করা হয়েছে। এখন থেকে আন্দামান এবং দক্ষিণ এশিয়ায়ও উদ্ধার অভিযান চলতে পারে বলে তারা জানিয়েছেন। ভিয়েতনাম কর্তৃপক্ষ তাদের মালয়েশিয় এয়ারলাইন্সের নিখোঁজ বিমানটির অনুসন্ধানে বিমান তল্লাশি আপাতত স্থগিত করেছে। তবে সমুদ্রে তল্লাশি অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছে তারা।
এদিকে আলজাজিরা চীনা সরকারের বরাত দিয়ে জানিয়েছে চীন আশা ছাড়বে না, চীনের ভাষ্য মতে এখনও আশা দেখা যাচ্ছে মালয়েশিয়ান এই নিখোঁজ বিমানের সন্ধান পাওয়ার বিষয়ে। নিখোঁজ বিমানে থাকা ২৩৯ জন যাত্রীর মাঝে চীনের নাগরিক ছিলেন ১৫৩ জন। ফলে নিখোঁজ ফ্লাইট এমএইচ ৩৭০ নিয়ে চীনের উদ্বেগ অন্য সবার থেকে একটু বেশি।
এদিকে বিমানের গন্তব্য স্থান নিয়েও সঠিক কোনো তথ্য এখনও কেও দিতে পারছে না । মালয়েশিয়ার বিমান বাহিনীর এক সিনিয়র কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, এয়ার ট্রাফিকের সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগ মুহূর্তে বিমানটি মালাক্কা প্রণালীর দিকে গিয়েছিল। তবে সেই তথ্যেরও সঠিক কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এমন তথ্য পাওয়ার কারণে অভিযানে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে বেশ অস্বস্তি দেখা দেয়। মনে করা হচ্ছে, ভয়ানক কিছু ঘটে গেছে। অনেক বিশেষজ্ঞ মতামত দিয়ে বলেছেন, এটা যদি সত্যি হয় তাহলে বিমানটিকে কেও ভিন্ন কোন দিকে নিয়ে গেছে।
নিখোঁজ বিমানের উদ্ধার অভিযানে ১২টি দেশের ৪২টি জাহাজ ও ৩৯টি বিমান অংশ নিচ্ছে। দক্ষিণ চীন সাগর ও মালাক্কা প্রণালীর পানিতে অভিযান চালানো হচ্ছে। অপরদিকে ভূমিতেও অভিযান চালানো হচ্ছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বিমানের কোনো রহস্যই উদঘাটন করতে পারেনি কেও। বিভিন্ন সময় নানা গুজব ছড়ানো হলেও এখন পর্যন্ত বিমানের এক টুকরো ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়নি। আবার সাগরে তেলের ফ্লো দেখে অনেকেই সন্দেহ করলেও তাতে দেখা যায় ওই তেল বিমানের নয়।
অপরদিকে সেলফোন সচল থাকার দাবি করা হলেও এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে তদন্তের কোন অগ্রগতি হয়নি। সব মিলিয়ে মালয়েশীয় নিখোঁজ বিমান রহস্য এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রহস্যই রয়ে গেছে। আদতেও এর কোন কিনারা কোন দিন কেও পাবেন কিনা তা নিয়েও এখন সন্দেহ দেখা দিয়েছে। তবে সময়ই সব বলে দেবে- হয় উদ্ধার হবে নইলে ইতিহাসে বিমান নিখোঁজের তালিকায় আরও একটি নাম সংযুক্ত হবে।