দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমানের আধুনিক সময়ে প্রযুক্তির ব্যবহার যত বেড়েছে, তার সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়ে গেছে মানুষের অনিদ্রার হার। একটি গবেষণায় দেখা গেছে – বৈদ্যুতিক যন্ত্র যেমনঃ স্মার্টফোন, ট্যাবলেট কিংবা ল্যাপটপের অতিরিক্ত ব্যবহারে অনিদ্রার মত দুঃস্বপ্ন ভর করে মানুষের জীবনে। আসুন জেনে নিই ইলেকট্রনিক যন্ত্রজনিত অনিদ্রা থেকে রক্ষা পেতে করণীয়সমূহ।
স্মার্টফোন এবং ট্যাব থেকে যে একধরনের নীল আলো বের হয়, মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে এবং যা মস্তিষ্কে মেলাটোনিন হরমোন নিঃসরণে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। ফলশ্রুতিতের ঘুমের অভ্যাসের পরিবর্তন ঘটে এবং মানুষের মধ্যে অনিদ্রা সৃষ্টি হয়। ইলেকট্রনিক যন্ত্রের কারণে এই রোগ সৃষ্টি হওয়ায় তাকে ইলেকট্রনিক ইনসমনিয়া অর্থ্যাৎ ইলেকট্রনিক অনিদ্রা বলা হয়।
অনেকেই এই ব্যাপারে সচেতন এবং সে কারণে সামাজিক যোগাযোগ সাইটে অল্প সময় ব্যয় কিংবা ই-মেইল চেক করেই ইন্টারনেট জগতের সামনে থেকে সরে যায়। কিন্তু স্মার্টফোন, ট্যাব কিংবা ল্যাপটপ ভার্চুয়াল জগতের বাইরে বাস্তব জগতের সাথে সরাসরি জড়িত। সুতরাং এইসবের ব্যবহারের ফলে সৃষ্ট অনিদ্রার হার বাড়তেই থাকে।
সুনিদ্রা পরিপাক ক্রিয়ায় ভূমিকা পালন করে এবং একইসাথে মানসিক প্রশান্তি আনায়ন করে ফলে শরীর সুস্থ থাকে। সুতরাং প্রত্যেকের উচিত অনিদ্রা থেকে বেঁচে থাকা। আসুন জেনে নিই ইলেকট্রনিক অনিদ্রায় আমাদের করণীয়:
১) রাতের খাবার গ্রহণ করার পূর্বে সকল কাজ শেষ করে ফেলুন। আদর্শ টাইম ধরে নিতে পারেন রাত আটটা পর্যন্ত।
২) স্মার্টফোনের উপর নির্ভরতা কমান। কম্পিউটারে স্টক এবং প্রেজেন্টেশন স্লাইড তৈরি করে রাখা ভালো। ফোন কম ব্যবহার করে নোটবুকে দৈনন্দিন খরচ, কাজের তালিকা তৈরি করা বুদ্ধিমানের কাজ।
৩) অধিকাংশ স্মার্টফোন ব্যবহারকারী তাদের ফোনকে অ্যালার্ম ক্লক হিসাবে ব্যবহার করেন। এটাকে আমাদের অনিদ্রার একটি প্রধান কারণ ধরা হয়। ফলশ্রুতিতে আমাদের হাতের নাগালের কাছেই থাকে স্মার্টফোন এবং এই কারণে দেখা যায় ঘুমাতে গিয়ে আমরা ফোন ব্যবহার করতে থাকি। সুতরাং বুদ্ধিমানের কাছ হচ্ছে স্মার্টফোন অ্যালার্ম ক্লক হিসাবে ব্যবহার না করে রিয়েল অ্যালার্ম ক্লক ব্যবহার করা।
৪) ঘুমানোর পূর্বে সকল সামাজিক যোগাযোগের সাইট থেকে লগ আউট করে শুয়ে পড়ুন।
৫) প্রয়োজনে ফোন বন্ধ করে রাখতে পারেন। যদি সেটি করা সম্ভব না হয় তাহলে অন্তত স্মার্টফোনে ফ্লাইট মুড দিয়ে রাখবেন।
মনে রাখবেন সুস্থ শরীর ও মনের জন্য সুনিদ্রার ভূমিকা অপরিসীম। জীবনের প্রতিটিক্ষেত্রে সফলতার জন্য সুস্থ শরীর ও মন দরকার যা সুনিদ্রা আনায়ন করে। সুতরাং অনিদ্রা থেকে বাঁচতে নিজের কিছু করণীয় অবশ্যই পালন করতে হবে সেটা হতে পারে মাঝ রাতে ফোন কল রিসিভ না করা। এইধরনের সামান্য অভ্যাস পরিবর্তন করে অনিদ্রা থেকে বাঁচুন এবং আনন্দময় জীবন গড়ে তুলুন।
তথ্যসূত্রঃ দিটেকজার্নাল