দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মানুষের মস্তিষ্কের গঠন অত্যন্ত জটিল। রহস্যে আবৃত এই অংশটি নিয়ে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। তাইতো গবেষকেরা বারবার মস্তিষ্ক নিয়ে গবেষণা করে নতুন নতুন তথ্য পায়। মস্তিষ্কের একটি বড় বৈশিষ্ট্য স্মৃতি। মস্তিষ্কের স্মৃতি ধারণ প্রক্রিয়া আরো জটিল ও রহস্যাবৃত। একটি প্রশ্ন সবার মনেই আসে, আমরা ছেলেবেলার স্মৃতি মনে রাখতে পারি না কেন? সম্প্রতি এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেয়েছে গবেষকেরা।
প্রাত্যহিক জীবনের বিভিন্ন বিষয় স্মৃতি হিসেবে থেকে যায়। কিছু থাকে মনে মনে, কিছু আবার অবচেতনে। কিন্তু অবাক হতে হয়, ২-৩ বছর বয়সের কিছুই আমরা মনে করতে পারি না। নতুন গবেষণার মাধ্যমে গবেষকেরা শেষ পর্যন্ত এর ব্যাখ্যা দাঁড়া করাতে পেরেছেন। এটা এমনঃ
বয়সের সাথে সাথে মস্তিষ্কের কোষ আগের স্মৃতি মুছে ফেলে একই কোষে নতুন স্মৃতি যুক্ত করে।
ক্যাথেরিন একারস’র নেতৃত্বে হওয়া এই গবেষণায় জানা যায়, কম্পিউটারের হার্ডডিস্কে যেমন আগের ডাটা মুছে নতুন ডাটা রাইট করা যায়, ঠিক তেমনি মস্তিষ্কের কোষ আগের স্মৃতির উপরেই নতুন স্মৃতি রাইট করে। এতে আগের স্মৃতি কার্যকরভাবে ডিলিট হয়ে যায়। শিশুকালের স্মৃতিলোপ মূলত ঐ সময়কার স্মৃতি না থাকার কারণেই হয়। তাই অধিকাংশ মানুষই ২-৩ বছরের কোন ঘটনা মনে করতে পারে না।
তবে ব্যাপারটা এমন নয় যে, ঐ বয়সে স্মৃতি তৈরি হয় না। অবশ্যই স্মৃতি তৈরি হয়। তবে তা দীর্ঘ দিন থাকে না। এটা এভাবে ব্যাখ্যা করা যায়- আপনি যত এগিয়ে যাবেন, পেছনের দিকে তাকিয়ে দেখবেন একটা নির্দিষ্ট দূরত্ব পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত আগের অংশ হারিয়ে যাচ্ছে।
আমাদের স্মৃতি মূলত মস্তিষ্কের হিপোক্যাম্পাল সার্কিটে জমা হয়। বয়সের সাথে সাথে নতুন নিউরন এই সার্কিটগুলোকে প্রতিস্থাপিত করে। যার ফলে আগের সার্কিটে পুনরায় স্মৃতি যুক্ত হয় নতুবা সময়ের সাথে দুর্বল হয়ে যায়।
ভিডিওটি দেখুন…
গবেষকেরা একদল বয়স্ক ইঁদুরের উপর গবেষণা করে এই তথ্য পেয়েছে। নিউরোজেনেসিসের মাধ্যমে এটা করা হয়েছে। তারা দেখতে পায়, পুনরায় স্মৃতি ধারণের ফলে আগের স্মৃতি নষ্ট হয়ে যায়।
সূত্রঃ thetechjournal