দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। আজ শুক্রবার, ১৩ জুন ২০১৪ খৃস্টাব্দ, ৩০ জৈষ্ঠ্য ১৪২১ বঙ্গাব্দ, ১৪ সাবান ১৪৩৫ হিজরি। দি ঢাকা টাইমস্ -এর পক্ষ থেকে সকলকে শুভ সকাল। আজ যাদের জন্মদিন তাদের সকলকে জানাই জন্মদিনের শুভেচ্ছা- শুভ জন্মদিন।
যে ছবিটি দেখছেন এটি নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলার চিনি মসজিদের ছবি। বড়ই দৃষ্টিনন্দন মসজিদের ফটকের ছবি এটি।
আজ পবিত্র শবেবরাত। আজকের এই পবিত্র দিনে এমন একটি দৃষ্টিনন্দন এবং ঐতিহাসিক মসজিদে নামাজ আদায় ভাগ্যের ব্যাপার। ইবাদত বন্দেগি ঘরে বসেও হতে পারে। কিন্তু এমন একটি সুন্দর মসজিদে গিয়ে অনেক মানুষের সঙ্গে এবাদত বন্দেগি করলে ছওয়াব বেশি পাওয়া যায়।
ঐতিহাসিক এই চিনি মসজিদটি নীলফামারী সদর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে সৈয়দপুরে অবস্থিত। ১৮৬৩ সালে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। চিনি মসজিদের রয়েছে সুদীর্ঘ ইতিহাস। ১৮৬৩ সালে হাজী বাকের আলী এবং হাজী মুকু ইসলামবাগ ছন ও বাঁশ দিয়ে প্রথমে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে এলাকাবাসীর সহায়তায় এই মসজিদটি টিনে রূপান্তরিত করা হয়। এলাকার মানুষেরা মাসিক আয়ের একটি অংশ দিয়ে এই মসজিদের ফাণ্ড গঠন করেন। পরবর্তীতে শঙ্কু নামের এক হিন্দু ব্যক্তি দৈনিক মাত্র ১০ আনা মজুরীতে মসজিদ নতুনভাবে নির্মাণ শুরু করেন। এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে তাকে সাহায্যও করতে থাকেন। মসজিদের গায়ে চিনামাটির থালার ভগ্নাংশ, কাঁচের ভগ্নাংশ বসিয়ে ইট এবং সুরকি দিয়ে নির্মাণ কাজ করা হতে থাকে। এই পদ্ধতিকে বলা হয়ে থাকে চিনি করা কিংবা চিনি দানার কাজ করা। এসই থেকেই এই মসজিদের নাম চিনি মসজিদ বা চীনা মসজিদ। চীনা মাটির থালার ভগ্নাংশ দিয়ে গোটা মসজিদ মোড়ানো বলে এই মসজিদেটিকে অনেকেই চীনা মসজিদ হিসেবে অভিহিত করে থাকে।
এই চিনামাটির তৈজসপত্র নাকি নিয়ে আসা হয়েছিল সুদুর কলকাতা থেকে। এই মসজিদ নকশা করেন মো. মোখতুল এবং নবী বক্স নামে দুই ব্যক্তি। মসজিদের অনন্য কারুকার্য দেখলে সত্যিই মুগ্ধ হতে হয়। ফুলদানি, গোলাপফুল, ফুলের ঝাড়, একটি বৃন্তে একটি ফুল, চাঁদ তারা মসজিদের গায়ে খঁচিত রয়েছে।
এই মসজিদ নির্মাণে প্রচুর মার্বেল পাথর ব্যবহার করা হয়েছে। ২৭টি মিনার রয়েছে মসজিদটিতে। চিনি মসজিদের সৌন্দয্য দেশ-বিদেশের বহু পর্যটককে আকর্ষণ করে বলেই তারা ছুটে আসেন এক নজর এই মসজিদটি দেখার জন্য। নিজ চোখে না দেখলে কেও বিশ্বাস বা উপলব্ধি করতে পারবে না এই চিনি মসজিদের সৌন্দর্য।
লেখাঃ মেষ তাড়ুয়া
ছবিঃ সামছা আকিদা জাহান