দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ১২ জুন বিশ্বকাপ শুরুর পর থেকে ব্রাজিলের মারাকানা স্টেডিয়াম দুনিয়াজোড়া এক আলোচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই মারাকানা এখন ফুটবল দুনিয়ায় স্বপ্নের স্থান।
ব্রাজিল বিশ্ব ফুটবল ২০১৪ শুরুর পর থেকে বিশ্বজোড়া এক আকাঙ্কার স্থানে পরিণত হয়েছে ব্রাজিলের মারাকানা স্টেডিয়াম। এটি এখন পুরো ফুটবল দুনিয়ার কাছে এক আদরণীয় স্থান। আমরা সবাই জানি ফুটবলের তীর্থভূমি ব্রাজিল। আর মারাকানা হচ্ছে ব্রাজিলের এক উৎকৃষ্ট এক স্থান। জীবনে যারা একবার এই মারাকানা স্টেডিয়ামে এসেছেন তাদের আর সখ-আহ্লাদ বলে কিছু থাকার কথা নয়। এই স্টেডিয়ামকে ঘিরে রিওর এই এলাকাটি যেনো এক ফুটবল স্বর্গ বললেও মনে হয় ভুল বলা হবে না। স্টেডিয়ামকে ঘিরে গড়ে উঠেছে নানা আকর্ষণীয় সুউচ্চ ভবন। ব্রাজিলের অন্য যে কোনো স্থানের থেকে এখানকার একটি ফ্ল্যাটের মূল্য অনেক বেশি। জমির দামও নাকি আকাশ ছোঁয়া। বিশেষ তালিকার ধনী লোক না হলে মারকানা স্টেডিয়ামকে ঘিরে বসবাস করা এককথায় কঠিন।
এই মারাকানা হচ্ছে ক্রীড়া কমপেস্নক্স। স্টেডিয়ামের পাশে আরো একটি ছোট মারাকানা স্টেডিয়ামও রয়েছে। যেখানে ভলিবল, বাস্কেটবলসহ অন্যসব খেলাও হয়। খেলাধুলা করে যারা শরীরটাকে সুস্থ রাখতে চান, তারা মারাকানা স্টেডিয়ামের ফুটপাত দিয়ে না দৌড়ালে মনে হবে সবকিছু অসম্পন্ন রয়ে গেছে। আর তাই ভর দুপুরেও মানুষজন জগিং করেন!
রিও ডি জেনেরিওর পুরো শহরটাই সবুজ গাছ-গাছালিতে ভরপুর। তারপরও মারাকানার পাশ দিয়ে না দৌড়ালে মনে হবে অপূর্ণতা থেকে গেলো। সেই ১৯৫০ সালে মারাকানা স্টেডিয়ামের যে চিত্র ছিল, এখন তা অনেকটাই উধাও হয়ে গেছে। এখন এই স্টেডিয়ামটি বর্ণিল রঙে সেজে উঠেছে। তবে ব্রাজিলীয়দের দু:স্বপ্নও রয়েছে এই মারাকানায়। ১৯৫০ সালে বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনালে এই মাঠেই নিশ্চিত চ্যাম্পিয়ন হতে যাওয়া ব্রাজিলের স্বপ্ন ভেঙ্গে দিয়েছিল উরুগুয়ে। ব্রাজিলীয়দের কাছে সেই দুঃস্বপ্ন হয়তো কোনোদিন মুছবে না, কিন্তু তারপরও আগামী ১৩ জুলাইয়ের ফাইনালে উঠে জিততে পারলে কাটা ঘায়ে হয়তো বরফ পড়বে। আর সেই স্বপ্নের জাল বুনে স্টেডিয়ামটিকে নতুনকরে সাজিয়ে বিশ্ব ফুটবলের কাছে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে ব্রাজিল। এই মাঠেই একদিন ফুটবল কিংবদন্তী পেলে ক্যারিয়ারের হাজারতম গোলটি করে ইতিহাস গড়েছিলেন।
কি কি সুযোগ-সুবিধা রয়েছে এই মারাকানায়:
# ৭৮ হাজার দর্শক খেলা দেখতে পারবে একসাথে বসে
# স্টেডিয়ামের ভেতরে ৪টা বড় পর্দায় খেলা দেখার ব্যবস্থা আছে
# ২৩০টা ওয়াশ রুমের মধ্যে হাজারখানেক টয়লেট
# ৬০টা বার এবং ক্যাফেটেরিয়া
# বিশ্বকাপের ম্যাচের জন্য ৩৬০টি এলসিডি টেলিভিশন
# আড়াই হাজার সাউন্ড সিস্টেম
# ৩৬০টি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা
# দর্শকদের বসার জন্য আধুনিক চেয়ার
# সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার করার ব্যবস্থা
# বৃৃষ্টি আসলে মাথার উপর ছাদ ঢেকে যাবে
# জমে থাকা ছাদের পানি ব্যবহার করার জন্য আধুনিক পদ্ধতিতে সংরক্ষণ ব্যবস্থা রয়েছে
ব্রাজিল বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল খেলাটি এই স্টেডিয়ামেই অনুষ্ঠিত হবে। আর তাই ফুটবল দুনিয়ায় মারাকানা এখন এক নতুন ছবি, নতুন স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন পূরণ হবে কিভাবে তা কেওই বলতে পারে না। তারজন্য ফাইনাল অবধি অর্থাৎ ১৩ জুলাই পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।