দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রমজানের এই সময়টায় প্রায় ১৬ ঘণ্টা পানি পান ও খাদ্যাহার থেকে আমাদের বিরত থাকতে হচ্ছে। এজন্য আমাদের একটি বিশেষ রুটিন মেনে চলা উচিত যাতে একটি স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ রোজা পালন করতে পারি। আজ আমরা দি ঢাকা টাইমসের পাঠকদের জন্য তুলে ধরবো স্বাস্থ্যকর রোজা পালনের জন্য বেশ কিছু টিপস।
১. আপনি যদি যথেষ্ট পরিমাণ সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়ে থাকেনও, তবুও আপনাকে রোজার মাসে একটি তালিকা প্রস্তুত রাখতে হবে যেন আপনার শরীর পর্যাপ্ত পুষ্টি, পানি ও বিশ্রাম পায়। কেননা রোজায় আমাদের খাবারের সময়ে পরিবর্তন আসে। তার পাশাপাশি খাবারের তালিকায়ও আসে বেশ পরিবর্তন। এই পরিবর্তন যেন আপনার স্বাস্থ্যের কোন ক্ষতি না করে তার জন্য একটি তালিকা থাকা প্রয়োজন।
২. প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন সেহেরিতে। এছাড়া পানির পাশাপাশি ডাবের পানি, দই খাওয়ার চেষ্টা করুন সেহেরিতে। এগুলো আপনাকে হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করবে। কেননা গরমের এই সময়টায় শরীরে ঘাম আপনাকে পানিশূন্য করে ফেলবে। দীর্ঘসময়ের এই রোজা আপনাকে পানিশূন্য করে ফেলতে পারে। যার ফলে আপনি অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন।
৩. সেহেরিতে কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার যেমন ভাত, আলু, প্রোটিন ,ফলমূল ও সবজী খেতে পারেন। অতিরিক্ত চিনি থেকে দূরে থাকুন। কারণ এটি আপনার দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। ত্বকে প্রদাহের সৃষ্টি করে। তবে যাদের গ্যাস্ট্রিকজনিত সমস্যা রয়েছে তারা খাবারের মেন্যু তৈরিতে একটু সতর্ক দৃষ্টি রাখুন। তারা সেহরির খাবারে কখনোই ডিম বা ডিম দিয়ে তৈরি খাবার রাখবেন না।
৪. অতিরিক্ত ঘাম আপনাকে পানিশূন্য করে তুলতে পারে। রোজার এই গরমের দিনে যথাসম্ভর একটু ছায়া ও ঠান্ডা জায়গায় থাকার চেষ্টা করুন এবং যতটা সম্ভব আপনার ফিজিকাল এক্টিভিটি কমিয়ে আনুন। অফিস করার ক্ষেত্রে চেষ্টা করুন বাইরের রোদ থেকে নিজেকে বিরত রাখতে।
৫. সুন্নাহ মেনে চলুন। ইফতারে রোজা ভাঙ্গুন খেঁজুর, দুধ বা ফলের জুস দিয়ে। ইফতারে হালকা খাবার খান। ইফতারীর শুরুতেই একেবারে অনেক খাবার খাবেন না। কেননা পাকস্থলী অনেকক্ষণ পরিপাক না করায় হঠাৎ অতিরিক্ত খাবার পেলে ভালো ডাইজেস্ট করতে পারেনা।
৬. ইফতারে স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার খান। অতিরিক্ত খাবেন না। প্রচুর পানি খাওয়ার অভ্যাস করুন। চা ,কফি এবং সোডা না খাওয়ার চেষ্টা করবেন । এর বদলে প্রচুর পানি খান। চকলেট ক্যান্ডির বদলে ফলের জুস খান। সারাদিনের রোজার পর চা, কফি কিংবা সোডা আপনার গ্যাস্ট্রিকজনিত সমস্যার কারণ হতে পারে।
৭. অতিরিক্ত ভাজাপোড়া ও ঝাল খাবার খাবেন না। দাঁত পরিষ্কার রাখুন। সেহেরির পর দাঁত পরিষ্কার করুন ব্রাশ বা ফ্লস দিয়ে। এছাড়া প্রত্যেক নামাজের আগে মেসওয়াক করুন। সেহরির পর দাঁতব্রাশ করে ঘুমোতে যান। এতে করে মুখে দুর্গন্ধ হবে না।
৮. ধূমপান পরিহার করুন। পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান। ৮ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন আপনার। ভালো ঘুমের ফলে খাবার হজম হতে সাহায্য করে। তা না হলে দেখবেন আপনার হজমে সমস্যা হয়ে গ্যাস্ট্রিক সৃষ্টি হতে পারে।
একটি বিষয় মনে রাখবেন রোজা রাখলে শরীরের কোন ক্ষতি হয় না বরং আমাদের শরীরের জন্য ভালো। ক্রীম লাগালে রোজা ভাঙ্গেনা। রোজার মাসে শান্ত থাকার চেষ্টা করুন। অযথা রাগারাগি করবেন না । আল্লাহ আমাদের সবাইকে সুন্দরভাবে নামাজ ও রোজা রাখার তৌফিক দান করুন।